সুন্দরবনে মুক্তিপণের দাবিতে তিন জেলেকে অপহরণ করেছে বনদস্যুরা!

পশ্চিম সুন্দরবনের সাতক্ষীরা রেঞ্জ এর দাড়গাং ও হোগলডাঙা সংলগ্ন কচুখালী এলাকা থেকে গত রোববার রাতে তিন জেলেকে মুক্তিপণের দাবিতে অপহরণ করেছে বনদস্যুরা।

বনদস্যু বুলবুল বাহিনীর পরিচয়ে পাঁচ সদস্যের বনদস্যু দলটি অপহৃতদের পরিবারের সাথে পরবর্তীতে মুক্তিপণের বিষয়ে যোগাযোগের কথা বলে ভারতীয় অংশে চলে যায়।

অপহরণের শিকার তিন জেলে হলেন, শ্যামনগর উপজেলার পূর্ব কৈখালী গ্রামের গৌর মুন্ডার ছেলে কিরণ মুন্ডা (৪৫), কালিঞ্চি গেটপাড়া গ্রামের মৃত আহম্মদ শেখের ছেলে নুরুল ইসলাম (৬০) এবং হরিনগর গ্রামের (পরিবার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) এক জেলে।

এসময় বনদস্যু দলটি অপহৃত তিন জেলের সাথে থাকা মোজাম গাজী ও মোমিন বরকন্দাজসহ ছয়জনকে বেধড়ক মারপিট করে এবং তাদের ব্যবহৃত দুটি নৌকা লুট করে নিয়ে যায়।

ফিরে আসা জেলে মোজাম গাজী এবং মোমিন বরকন্দাজ জানান, রোববার রাত ৮টার দিকে কচুখালী এলাকায় মাছ ধরার সময় মুখোশ পরিহিত পাঁচ সদস্যের বনদস্যু দলটি তাদের নৌকার পাশে আসে। এসময় তারা নিজেদের বুলবুল বাহিনীর সদস্য বলে পরিচয় দেয় এবং হাতে থাকা পাঁচটি আগ্নেয়াস্ত্রের মুখে প্রতিটি নৌকা থেকে একজন করে উঠিয়ে নেয়। এক পর্যায়ে গরানের লাঠি দিয়ে জিম্মি না করা ছয় জেলেকে বনদস্যুরা ব্যাপক মারধরও করে। মুক্তিপণের বিষয়ে পরবর্তীতে জিম্মি জেলেদের পরিবারের সাথে যোগাযোগ করা হবে জানিয়ে তাদেরকে নিয়ে বনদস্যুরা ভারতীয় অংশে চলে যায়।

জিম্মি হওয়া জেলে কিরণ মুন্ডার সহযোগী ফিরে আসা মোজামের মা মনোয়ারা বেগম জানান, বনদস্যুরা পিটিয়ে মোজামের বাম হাতের আঙুল ভেঙে দিয়েছে। সোমবার রাতে বাড়িতে ফেরার পর গ্রাম্য চিকিৎসক রুহুল আমিনের কাছ থেকে তাকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

রমজাননগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ আল মামুন জানান, বিষয়টি নিয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরি করতে গেলেও নাম-পরিচয় ছাড়া জিডি হবে না বলে পুলিশের পক্ষ থেকে আহত মোমিন বরকন্দাজকে জানানো হয়েছে।

এদিকে মঙ্গলবার সকালে বনদস্যুরা জিম্মি জেলেদের প্রতিজনের মুক্তিপণ বাবদ এক লাখ টাকা করে দাবি করেছে বলেও তিনি নিশ্চিত করেন।

সাতক্ষীরা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক এম এ হাসান জানান, জেলে অপহরণের বিষয়ে আমাদের কেউ কিছু জানায়নি। জানালেও আমাদের কিছু করার নেই- উল্লেখ করে তিনি বলেন, এটা পুলিশের বিষয়। তিনি আরও বলেন, দুই দিন পরে স্মার্ট পেট্রোল টিম নামবে। তখন এ ধরনের ঘটনা ঘটলে সংশ্লিষ্টদের দেখতে বলা হবে।

শ্যামনগর থানার অফিসার ইনচার্জ নাজমুল হুদা বলেন, জেলে অপহরণের বিষয়ে শ্যামনগর থানায় মঙ্গলবার পর্যন্ত কেউ কোন অভিযোগ করেননি।