স্বেচ্ছায় ভ্রমণে বের হয়েছিলেন ফরহাদ মজহার : ডিআইজি

কবি, প্রাবন্ধিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক ফরহাদ মজহারকে অপহরণ করা হয়নি। তিনি স্বেচ্ছায় বাড়ি থেকে ভ্রমণের উদ্দেশে বের হয়েছিলেন। খুলনায় সোমবার দিনগত রাত একটার দিকে সংবাদ সম্মেলন করে পুলিশের খুলনা রেঞ্জের ডিআইজি দিদার আহমেদ এ দাবি করেন।

এর আগে ঢাকার শ্যামলীর বাসা থেকে নিখোঁজের ১৮ ঘণ্টা পর সোমবার রাতে যশোরের নওয়াপাড়ায় ঢাকাগামী হানিফ পরিবহনের একটি বাস থেকে ফরহাদ মজহারকে উদ্ধার করে র্যা ব। এরপর তাকে খুলনার ফুলতলায় নিয়ে যাওয়া হয়।

সেখানে সংবাদ সম্মেলনে দিদার আহমেদ বলেন, ‘ফরহাদ মজহার অপহরণ হননি। তিনি স্বাভাবিকভাবে বাড়ি থেকে বের হয়েছেন। উদ্ধারের সময় ফরহাদ মজহারের কাছে একটি ব্যাগ পাওয়া গেছে। এতে দৈনন্দিন ব্যবহারের জিনিসপত্র ছিল।’

তিনি বলেন, ‘আমরা এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় বেড়াতে গেলে যেমন প্রয়োজনীয় জিনিসগুলো নিয়ে নেই। তার ব্যাগের ভেতর থাকা টাকা, মোবাইল চার্জারসহ তেমন জিনিসপত্র প্রমাণ করে তিনি স্বেচ্ছায় ভ্রমণের জন্য বাড়ি থেকে বের হয়েছিলেন।’

খুলনা রেঞ্জের ডিআইজি আরো বলেন, ‘ফরহাদ মজহার সুস্থ-সবল মানুষের মতোই বাসে যাত্রী হিসেবে ভ্রমণ করছিলেন।’

তবে পুলিশের এ দাবি নাকচ করে ফরহাদ মজহারের পরিবার দাবি করেছে, ‘বাসার সিসিটিভির ভিডিও ফুটেজে তারা দেখেছেন, বাসা থেকে বের হওয়ার সময় তার (ফরহাদ মজহার) হাতে কোনো ধরনের ব্যাগপত্র ছিল না।’

তারা এও জানান, উদ্ধারের পর ফরহাদ মজহার পরিবারকে জানিয়েছেন- ‘সন্ধ্যার পর তার চোখের বাঁধন খোলা হয়’।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ফরহাদ মজহারের উদ্ধার খবর জানানোর পর স্ত্রী ফরিদা আখতার সন্তোষ প্রকাশ করেন। তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, ‘ফরহাদ মজহারকে উদ্ধার করা হয়েছে এটুকু জেনে স্বস্তি পাচ্ছি, আমরা খুশি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী চাইলে সব সম্ভব। তবে বাসায় না ফেরা পর্যন্ত উৎকণ্ঠায় আছি।’

ফরিদা আখতার জানান, ফরহাদ মজহারের সঙ্গে ফোনে পরিবারের কথা হয়েছে। সে সুস্থ এবং ভাল রয়েছেন।

সংবাদ সম্মেলনে পুলিশের এই ডিআইজি দাবি করেন, ‘ফরহাদ মজহার স্বাভাবিকভাবেই হোটেলে খেয়েছেন এবং সাধারণ যাত্রীর মত হানিফ পরিবহনের টিকেট কেটেছেন।’

তিনি জানান, ফরহাদ মজহার ফোনে কথা বলার পরপরই মোবাইলটি বন্ধ করে রাখছিলেন। এজন্য তাকে খুঁজে পেতে সমস্যা হচ্ছিল।
উল্লেখ্য, ফরহাদ মজহারকে সোমবার ভোর থেকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না জানিয়ে তার পরিবার আদাবর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করে।

পরিবারের দাবি, ঢাকার শ্যামলীর নিজের বাসা থেকে ভোর পাঁচটার দিকে একটা ফোন পেয়ে বের হয়ে যান ফরহাদ মজহার। এরপর তার মোবাইল ফোন ব্যবহার করে একাধিকবার মুক্তিপণ দাবি করা হয়।