‘২০২৭ সাল পর্যন্ত জিএসপি সুবিধা পাবে বাংলাদেশ’

বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘বাংলাদেশ এখন উন্নয়নশীল দেশ হলেও আগামী ২০২৭ সাল পর্যন্ত জিএসপি সুবিধা পাবে। যেসব দেশে বাংলাদেশ জিএসপি সুবিধা পায় না সেসব দেশের সঙ্গে এফটিএ (ফ্রি ট্রেড এগ্রিমেন্ট) করা হবে । কাজেই বাংলাদেশের স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে বের হয়ে উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হতে কোনও চ্যালেঞ্জই মোকাবিলা করা কঠিন নয়।’

রবিবার (১৮ মার্চ) দুপুরে সচিবালয়ে বাণিজ্যমন্ত্রীর নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন। এসময় বাণিজ্য সচিব শুভাশিস বসু উপস্থিত ছিলেন।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘একসময় মুক্তিযুদ্ধও বাংলাদেশের জন্য চ্যালেঞ্জ ছিল। বাংলাদেশ সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করেই দেশ স্বাধীন করেছে। ২০০৪ সালে যখন কোটা প্রথা উঠে যায় তখনও একশ্রেণির মানুষ বলেছিল এটি মোকাবিলা করা কঠিন হবে। বাংলাদেশ তা মোকাবিলা করেছে। এলডিসি থেকে উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হয়েছে বাংলাদেশ। এটি গৌরবের, এটি আত্মমর্যাদার। এই উপলক্ষে আগামী ২২ মার্চ আমরা প্রধানমন্ত্রী, যার নেতৃত্বে বাংলাদেশ বিশ্বে এই অবস্থানে এসেছে তাকে গণসংবর্ধনা দেবো।’

বাণিজ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘জাতিসংঘ এমন একটি দিনে বাংলাদেশকে এলডিসি থেকে উন্নয়নশীল হওয়ার ঘোষণা দিয়েছে যে সেদিন ছিল জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর যেদিন বঙ্গবন্ধু দেশে ফিরছিলেন সেদিন লন্ডন এয়ারপোর্টে সাংবাদিকরা জিজ্ঞেস করেছিল যে, ‘তোমার দেশ তো একটা ধ্বংসস্তূপ, কীভাবে এই দেশকে গড়বে?’ বঙ্গবন্ধু সেদিন উত্তর দিয়েছিলেন, ‘আমার দেশের মাটি ও মানুষ যদি থাকে তাহলে এই বাংলাদেশ একদিন সুজলা সুফলা শস্য শ্যামলা সোনার বাংলা হবে।’ আজ জাতিসংঘের এই ঘোষণা তা-ই প্রমাণ করে। বাংলাদেশ আজ সোনার বাংলা হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘এলডিসি থেকে উন্নয়নশীল দেশ হতে যে তিনটি শর্ত পূরণ করতে হয় তার একটি হচ্ছে মাথাপিছু আয়। একটি দেশের মাথাপিছু আয়ের প্রয়োজন হয় ১২৩০ মার্কিন ডলার। বাংলাদেশের এখন মাথাপিছু আয় ১৬১০ ডলার। মানবসম্পদ উন্নয়ন হতে হয় ৬৬ শতাংশ। বাংলাদেশ এই সূচকে বর্তমানে অবস্থান করছে ৭৭ শতাংশে এবং অর্থনৈতিক ভঙ্গুরতার হার থাকতে হয় ৩২ শতাংশের নিচে। বাংলাদেশের এখন রয়েছে ২৪ শতাংশ। এই ৩টি শর্তই নয়- সরকারের মেগা প্রকল্প গ্রহণ, নিজেদের অর্থে বাজেট, পদ্মা সেতু নির্মাণ মেট্রো রেল, কর্ণফুলী টানেল, মাতারবাড়ি বিদ্যুৎ প্রকল্পসহ বড় বড় প্রকল্প গ্রহণের সক্ষমতা বাংলাদেশকে এলডিসি থেকে উন্নয়নশীল দেশ হতে সহায়তা করেছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘ বিশ্বে যারা একদিন বলেছিল বাংলাদেশ তলাবিহীন ঝুড়ি, তারাই এখন বলছে বিশ্বে বাংলাদেশ উন্নয়নের মডেল। এ সমস্ত অর্জন সম্ভব হয়েছে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার কারণে। অতীতে যারা ধ্বংসাত্মক রাজনীতি করেছে তারাও এখন শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির মধ্য দিয়ে রাজনীতি করছে। বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মতো নেত্রী জেলে থাকার পরও তারা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করছে। কারণ তারা বুঝেছে ধ্বংসাত্মক কর্মসূচি দিলে তাদেরই ক্ষতি হবে।’