৩০ কেন্দ্রে এজেন্ট বের করে দেয়ার অভিযোগ মঞ্জুর

খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোট দিয়েও ৩০টি কেন্দ্র থেকে এজেন্টদের বের করে দেয়ার অভিযোগ করেছেন বিএনপির প্রার্থী নজরুল ইসলাম মঞ্জু্। সরকারদলীয় সমর্থকদের কারণে প্রতিটি কেন্দ্রেই ভোটাররা শঙ্কায় রয়েছে। বলেছেন, ভোট ডাকাতি হলে ফলাফল মেনে নেবেন না।

সকাল আটটা ৪০ মিনিটের দিকে ভোট দিনে নগলীর রহিমা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট দিকে যান মঞ্জু। এরপর তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।

নির্বাচনী প্রচার শুরুর পর থেকেই কর্মী-সমর্থকদের প্রচারে বাধা দেয়ার অভিযোগ করে আসছিলেন। ভোটের আগের রাতেও রিটার্নিং কর্মকর্তা ইউনুচ আলীর কাছে এই অভিযোগ করে খুলনার পুলিশ কমিশনার হুমায়ুন কবির এবং মহানগরের পাঁচ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন।

মঞ্জু বলেন, ‘খুলনাবাসী আজকের দিনটির জন্য অপেক্ষা করেছিল। আশা করছি অবাধ, সুষ্ঠু ‍ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে। কিন্তু গত কয়েকদিন যে পরিবেশ ছিল সেটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের অন্তরায়।’

ভোট কেমন হচ্ছে, জানতে চাইলে মঞ্জু প্রথমে ২০ থেকে ২৫টি এবং কিছুক্ষণ পরেই ৩০টি কেন্দ্র থেকে এজেন্টদের বের করে দেয়ার অভিযোগ করেন।

বিএনপির প্রার্থী বলেন, ‘সকাল থেকে ২০ থেকে ২৫টি কেন্দ্র থেকে আমাদের এজেন্টদের বের করে দেয়া হয়েছে। সরকারদলীয় সমর্থকরা এসব কেন্দ্র দখল করে নিয়েছে। নির্বাচন কমিশনকে বলব দ্রুত এসব কেন্দ্রে আমার এজেন্টদের ঢুকতে দেয়ার ব্যবস্থা করুন।’

তবে কিছুক্ষণ পরেই মঞ্জু বলেন, ‘আমি এ পর্যন্ত ৩০টি সেন্টারের খবর পেয়েছি। সেসবে কেন্দ্র থেকে আমার এজেন্টদেরকে বের করে দেয়া হয়েছে। বিশেষ করে ২২ নম্বর ওয়ার্ড, যেখানে তালুকদার আবদুল খালেক বসবাস করেন, সেখানে কোনো কেন্দ্রে আমার এজেন্ট নেই। এর বাইরে ২৯ নম্বর, ৩০ নম্বর, ৩১ নম্বর, ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের সব কেন্দ্র থেকে আমার এজেন্টদের বের করে দেয়া হয়েছে। তাদের পারপিট করা হয়েছে। ধানের শীষের ভোটারদেরকে ঢুকতে দেয়া হচ্ছে না।’

‘খুব খারাপ অবস্থা নগরীতে। প্রত্যেকটি ভোট কেন্দ্রে ভোটাররা শঙ্কায়।’

যদি এমন পরিবেশই হয় তাহলে ভোটে থাকবেন কি না-এমন প্রশ্নে মঞ্জু বলেন, ‘সবশেষ পর্যন্ত দেখব। আরও অপেক্ষা করে দেখব।’ ভোটের ফলাফল মেনে নেবেন কি না, জানতে চাইলে মঞ্জু বলেন, ‘ভোট ডাকাতি হলে মেনে নেব না।’

বিএনপি প্রার্থীর এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের তালুকদার আবদুল খালেক বলেন, ‘যদি তাদের সংগঠন দুর্বল হয়, যদি তাদের এজেন্ট কেন্দ্রে না যায়, তাহলে কার কী করার আছে?’

মঞ্জুর এসব অভিযোগ তাদের ট্র্যাডিশন বা ঐতিহ্য বলেও মন্তব্য করেন খালেক। ২০১৩ সালের সিটি নির্বাচনে বিএনপি জিতলেও ভোটের ফলাফল আসার আগ পর্যন্ত এখনকার মতোই নানা অভিযোগ করেছিল বিএনপি। সেই বিষয়টিও জানাতে ভুলেননি খালেক।

এর আগে মঞ্জু রহিমা বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট দেয়ার সময় কেন্দ্রে ঢোকেন তার কয়েকজন কর্মী সমর্থকও। ভোট দেয়ার আগেই মঞ্জু মুচকি হাসি দিয়ে দুই আঙ্গুল তুলে জয়ের ‘ভি’ চিহ্ন দেখান।

ভোট শুরুর আধা ঘণ্টা আগে সকাল সাড়ে সাতটার দিকে মঞ্জু নগরীর টুথপাড়া কবরস্থানে তার প্রয়াত বাবা মায়ের প্রতি শ্রদ্ধা জনিয়ে আসেন।

মঙ্গলবার খুলনার আলোচিত এই নির্বাচনে ভোট শুরু হয় সকাল আটটায়। চলবে বিকাল চারটা পর্যন্ত। তার আগে থেকেই ভোটাররা কেন্দ্রে লাইন ধরেন।

ভোটকে ঘিরে খুলনায় ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা বিরাজ করছে। সকালে ভোট শুরুর আগেই কেন্দ্রে কেন্দ্রে শুরু দেখা যায় ভোটারদের লাইন।

নির্বাচনে মঞ্জুর প্রতিদ্বন্দ্বী মোট চার জন। তবে তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের তালুকদার আবদুল খালেক।