৩৮তম বিসিএস: প্রশ্নফাঁস রোধে বাড়তি সতর্কতা

সারাদেশে এখন বড় আতঙ্ক প্রশ্নফাঁস। এই আতঙ্ক সবস্তরের পরীক্ষায়। বর্তমানে প্রথম শ্রেণি থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি, পিএসসিসহ সরকারি বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষা শুরুর আগেই প্রশ্নপত্র ছড়িয়ে পড়ছে। তাই ৩৮তম বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষাকে সামনে রেখে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করছে বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশন (পিএসসি)। এবারই রেকর্ড সংখ্যক চাকরিপ্রার্থী এই পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছেন। পিএসসি চাইছে এই পরীক্ষায় যাতে কোনোভাবেই প্রশ্নফাঁস না হয়। সে লক্ষ্যে তাদের নানা প্রস্তুতি চলছে।

পিএসসি সূত্র জানায়, ২৯ ডিসেম্বর হতে যাওয়া এই প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় সারাদেশে কড়া নজরদারি বসানো হবে। পরীক্ষার প্রশ্নফাঁস রোধে বেশ কয়েক সেট প্রশ্নপত্র তৈরি করা হয়েছে। পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসসহ সব প্রকার অনিয়ম এড়াতে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা বসানো হবে। পরীক্ষা কেন্দ্রগুলোতে গোয়েন্দা, পুলিশ ও র্যাবের তিনস্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। কোথাও কোনো অনিয়ম ধরা পরলে ঘটনাস্থলে মেজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে অপরাধীকে শাস্তি দেয়া হবে। এছাড়া দেশের প্রতিটি কেন্দ্রে পিএসসি নিজস্ব টাকায় দুটি করে মেটাল ডিটেক্টর সরবরাহ করছে। প্রতিটি পরীক্ষার হলে একটি করে ঘড়ি কিনে দেয়া হচ্ছে।

সর্বশেষ পিএসসির সিনিয়র স্টাফ নার্স পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস হয়। পরে এর সত্যতা যাচাই করে প্রশ্ন ফাঁসের প্রমাণ মেলায় দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করে পিএসসি। ওই পরীক্ষা বাতিল করা হয়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে পিএসসির চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ সাদিক বলেন, সব অনিয়ম এড়াতে আমরা সর্তক। ৩৮ বিসিএসে সর্বোচ্চ আবেদনকারী হওয়ায় প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় আমরা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছি। এরই মধ্যে পরীক্ষা সংশ্লিষ্ট প্রতিটি কমিটির সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা করেছি কীভাবে সুষ্ঠুভাবে পরীক্ষা নেয়া যায় এবং যেন পরীক্ষার প্রশ্নফাঁস না হয়।

তিনি আরো বলেন, প্রশ্নফাঁস বন্ধে আমরা কয়েক দফায় তিনস্তরের নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সভা-সেমিনার করেছি। পরীক্ষার দিন নিরাপত্তায় পুলিশ-ব্যাবসহ গোয়েন্দা সংস্থা নিয়োজিত থাকবে। সুষ্ঠুভাবে বিসিএস পরীক্ষা আয়োজনে পিএসসির মেম্বাররাসহ সকল কর্মকর্তা পরীক্ষাকেন্দ্র পরিদর্শন কাজে নিয়োজিত থাকবেন। আগের চাইতে অনেক বেশি সতর্কতা অবলম্বন করতে এসব ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।

পিএসসি সূত্রে জানা গেছে, এ বছর ৩৮তম বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় অংশ নিতে তিন লাখ ৪৬ হাজার ৫৩২ জন প্রার্থী আবেদন করেছেন। এই প্রার্থীরাই প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় অংশ নেবেন। এর আগে ৩৭তম বিসিএসে অংশ নেন দুই লাখ ৪৩ হাজার ৪৭৬ জন। ৩৮ বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষা দেশের প্রায় চারশটি কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হবে।

উল্লেখ্য, ৩৮তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষার প্রতিটি খাতা দুজন পরীক্ষক মূল্যায়ন করবেন। তাদের নম্বরের ব্যবধান ২০ শতাংশের বেশি হলে তৃতীয় পরীক্ষকের কাছে খাতা পাঠানো হবে। এর ফলে পরীক্ষার্থীদের মেধা যথাযথভাবে মূল্যায়িত হবে বলে মনে করছে পিএসসি। এই বিসিএস থেকে বাংলাদেশ বিষয়াবলির ২০০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষায় আলাদা করে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ে ৫০ নম্বরের প্রশ্ন রাখা হবে। সাত বিভাগের পাশাপাশি এবার নতুন বিভাগ ময়মনসিংহেও পরীক্ষা নেয়া হবে।