৪ লাখ রুপি পেয়েও ফিরিয়ে দিলেন অটোচালক

ভারতের রাজস্থানের জোদপুরের বাসিন্দা প্রেমলতা গেহলট (৬১)। তিনি একজন হার্টের রোগী। বাইপাস সার্জারির জন্য জমিয়ে ছিলেন ৪ লাখ রুপি। একদিন তিনি অটোরিকশায় করে হাসপাতালে যাচ্ছিলেন। এ সময় তার সাথে একটি ব্যাগে চার লাখ রুপিও ছিল। অটোরিকশা থেকে নেমে একটি হোটেলে ওঠার সময় তিনি ভুল করে গাড়িতে অর্থগুলো রেখে যান। হোটেলে ফিরে তিনি হতাশ হয়ে যান, যখন দেখেন তার সাথে থাকা টাকা নেই। এর এক ঘণ্টা পরেই ওই অটোচালক তার টাকাগুলো ফিরিয়ে দিলে তিনি যেন প্রাণ ফিরে পান। ওই অটোচালকের নাম নানযি নায়ী (৫২)।

টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রেমলতা গেহলট তার স্বামী ধর্মনারায়ণকে সাথে নিয়ে মঙ্গলবার অটোরিকশায় করে একটি বেসরকারি হাসপাতালে যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে বিশ্রাম নেয়ার উদ্দেশ্যে অটোরিকশা থেকে নেমে হোটেলে ওঠেন এই দম্পতি। এ সময় প্রেমলতা ভুল করে টাকার ব্যাগটি গাড়িতে রেখে যান। পরে তারা হোটেলে ফিরে দেখেন তাদের সাথে থাকা টাকার ব্যাগটি নেই।

‘এতগুলো টাকা হারিয়ে আমি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলাম। এ টাকা আমার চিকিৎসার টাকা। পরে ওই অটোরিকশা চালককে তন্নতন্ন করে খুঁজে না পেয়ে নিকটের ভস্ত্রপুর থানায় বিষয়টি অবহিত করি।’- অবসরপ্রাপ্ত সেবিকা প্রেমলতা জানান।

অটোরিকশা পরিষ্কার করার সময় চালক টাকার ব্যাগটি দেখতে পান। ‘আমি এত টাকা দেখে অবাক হয়ে গিয়েছিলাম। আমি আমার জীবনে এতগুলো টাকা একসাথে দেখিনি। পরে আমার স্মরণ হয়, এই টাকাগুলো ওই বৃদ্ধ দম্পতির হবে, যাদের আমি হাসপাতালের কাছে নামিয়ে দিয়েছিলাম। তখন আমি নিজের ছেলে ও নাতনিকে সাথে করে টাকাগুলো নিয়ে ভস্ত্রপুর থানায় যায়। থানায় গিয়ে দেখি তারা সেখানে বসা আছেন। এ সময় আমি তাদেরকে টাকাগুলো ফেরত দিই’।-জানান ওই অটোরিকশা চালক।

নানযি নায়ী গত ২৫ বছর ধরে অটোরিকশা চালাচ্ছেন। প্রেমলতা জানান, ওই চালক টাকাগুলো ফেরত না দিলে আমার জীবনটা শেষ হয়ে যেত।

চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ওই নারীর হার্টে তিনটি ব্লক ধরা পড়েছে। এছাড়া তিনি ডায়াবেটিস ও স্নায়বিক জটিলতায় ভুগছেন।