পঞ্চাশে অধিনায়ক মাশরাফি
বাংলাদেশের ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় বিজ্ঞাপন হতে পারেন ‘অদম্য’ মাশরাফি বিন মর্তুজা। হাঁটুতে সাতবার এবং চোখে দুবার অস্ত্রোপচার হওয়ার পরও ২২ গজে দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন টাইগারদের ওয়ানডে অধিনায়ক। নানা ঘাত প্রতিঘার মোকাবেলা করে রোববার (২২ অক্টোবর) আফ্রিকার ইস্ট লন্ডনে বাংলাদেশের তৃতীয় অধিনায়ক হিসেবে ৫০তম ম্যাচ খেলতে নেমেছেন ম্যাশ।
এদিন স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজের তৃতীয় ওয়ানডে ম্যাচে টস করারর সাথে সাথে অধিনায়ক হিসেবে ৫০তম ম্যাচের মাইলফলকে পৌঁছে গেলেন মাশরাফি। এর আগে বাংলাদেশের হয়ে ৫০ বা ততোধিক ম্যাচে নেতৃত্ব দিয়েছেন হাবিবুল বাশার ও সাকিব আল হাসান। বাশার ৬৯টি ও সাকিব ৫০টি ওয়ানডেতে টাইগারদের অধিনায়ক ছিলেন।
২০০৯ সালে প্রথম বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক হন মাশরাফি। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে প্রথম টেস্টের প্রথম দিন ইনজুরিতে মাঠ ত্যাগ করেন তিনি। এরপর আর ঐ সিরিজে মাঠে ফিরতে পারেননি ম্যাশ। আর সেটিই ছিলো অধিনায়ক হিসেবে মাশরাফির একমাত্র টেস্ট।
২০১০ সালে ওয়ানডেতে অধিনায়ক হিসেবে অভিষেক ঘটে মাশরাফির। ব্রিস্টলে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৫ রানের ঐতিহাসিক জয়টি এসেছিলো ম্যাশের নেতৃত্বেই। ঐ ম্যাচের সেরাও ছিলেন তিনি। আট নম্বরে ব্যাট হাতে নেমে ২৫ বলে ২২ রান করার পাশাপাশি বল হাতে ৪২ রানে ২ উইকেট নেন তিনি।
তবে ইনজুরি পিছু ছাড়েনি মাশরাফির। ঢাকায় নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডেতে আবারো পায়ের ইনজুরিতে পড়েন ম্যাশ। ফলে আবারো দীর্ঘদিনের জন্য মাঠের বাইরে চলে যান তিনি। তবে ২০১৪ সালে ওয়ানডে অধিনায়কের পদ থেকে মুশফিকুর রহিমকে সরিয়ে মাশরাফির হাতে আবারো নেতৃত্ব তুলে দেয় বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)।
এরপর বাংলাদেশকে সাফল্যের জোয়াড়ে ভাসিয়েছেন মাশরাফির।
২০১৫ বিশ্বকাপের কোয়ার্টারফাইনালে খেলে বাংলাদেশ। প্রথমবারের মত বিশ্বকাপের শেষ আটে খেলার পর দেশের মাটিতে ভারত-পাকিস্তান-দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ জয় করে মাশরাফির নেতৃত্বধীন দলটি। ভারত, দক্ষিণ আফ্রিকাকে না পারলেও পাকিস্তানকে তিন ম্যাচের সিরিজে হোয়াইওয়াশ করে বাংলাদেশ। এমন দুর্দান্ত সব অর্জনে সরাসরি আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে খেলার ছাড়পত্র পায় টাইগাররা।
এরপর চলতি বছর চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সেমিফাইনালেও উঠে মাশরাফির নেতৃত্বাধীন দলটি। মাঝে র্যাংকিং-এ নয় নম্বর থেকে ছয় নম্বরে থাকার স্বাদও নিয়েছে বাংলাদেশ।
চলমান দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে দল ভালো খেলতে না পারায় অধিনায়ক হিসেবেও সাফল্য পাননি মাশরাফি। তারপরও এখন পর্যন্ত ৪৯টি ওয়ানডেতে নেতৃত্ব দিয়ে বাংলাদেশকে ২৭ জয় ও ২০ হারের স্বাদ দিয়েছেন ম্যাশ। বাংলাদেশের অধিনায়কদের মধ্যে শতকরা জয়ের দিক দিয়েও সবার চেয়ে এগিয়ে মাশরাফি। তাই ওয়ানডেতে বাংলাদেশ ক্রিকেটের অধিনায়ক বলা হয় মাশরাফিকে।
ওয়ানডেতে বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দেয়া শীর্ষ পাঁচ অধিনায়ক:
খেলোয়াড় ম্যাচ জয় হার টাই পরিত্যক্ত শতকরা/জয়
হাবিবুল বাশার ৬৯ ২৯ ৪০ ০ ০ ৪২.০২%
সাকিব আল হাসান ৫০ ২৩ ২৬ ০ ১ ৪৬.৯৩
মাশরাফি বিন মর্তুজা ৪৯ ২৭ ২০ ০ ২ ৫৭.৪৪
মোহাম্মদ আশরাফুল ৩৮ ৮ ৩০ ০ ০ ২১.০৫
মুশফিকুর রহিম ৩৭ ১১ ২৪ ০ ২ ৩১.৪২
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন