মিরপুরে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা (ভিডিওসহ)
মিরপুর পুলিশ স্টাফ কলেজের সামনে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনার বিবরণ দিয়ে প্রতক্ষদর্শীরা জানান, বৃহস্পতিবার বিকেল পৌনে ৫টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ, আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। পুলিশের গাড়িতে ভাঙচুর চালানোর অভিযোগে শিক্ষার্থীদের বেশ কয়েকজনকে মারধরও করে পুলিশ সদস্যরা।
ঘটনাস্থল থেকে মিরপুর ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের ছাত্র রাজু আহমেদ জানান, আমাদের আন্দোলনে অংশ নেয়া প্রত্যেক শিক্ষার্থীর কাছে প্রাতিষ্ঠানিক আইডিকার্ড রয়েছে। শান্তিপ্রিয় আন্দোলন চলছিল। কিন্তু বিকেল পৌনে ৫টার দিকে হঠাৎ করেই পুলিশ স্টাফ কলেজের সামনে থেকে পুলিশ লাঠিচার্জ শুরু করে। পেছন থেকে ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা হামলা চালায়। ছাত্র-ছাত্রীদের ধাওয়া করে। ধাওয়া খেয়ে মিরপুর-১০ এলাকায় অবস্থান নেই আমরা।
জেবা নূর নামে এক অভিভাবক তাৎক্ষণিক ঘটনায় ফেসবুক লাইভে বলেন, ‘আমাদের কোমলমতি বাচ্চারা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করছিল। সকাল থেকেই তারা না খেয়ে আন্দোলনে। আমরা কয়েকজন খোঁজ নিতে আসছিলাম। কিন্তু হঠাৎ করে হামলা চালানো হয়। ধাওয়া করা হয়। মেয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর হাত তোলা হয়। ছাত্র-ছাত্রীদের মারধর করা হয়। কোনো ঝামেলা ছিল না। বাচ্চাদের আমরা জাস্টিস এনে দিতে পারলাম না।’
তবে উপস্থিত পুলিশ সদস্যরা জানান, যারা আন্দোলন করছে তাদের ভেতর বহিরাগতরা মিশে গেছে। ওই কুচক্রি অংশটিই টার্গেট করে পুলিশের গাড়িতে ভাঙচুর চালাচ্ছে। যে কারণে আমরা ওই অংশটিকে ধাওয়া করেছি।
২৯ জুলাই দুপুরে রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কের কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের সামনে এমইএস বাস স্ট্যান্ডে জাবালে নূর পরিবহনের দুই বাসের চালকের রেষারেষির ফলে একটি বাসের চাকায় পিষ্ট হয়ে দুই শিক্ষার্থী নিহত হয়। একই ঘটনায় আহত হয় ১০-১৫ জন শিক্ষার্থী।
নিহত দুই শিক্ষার্থী হলো- শহীদ রমিজউদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী দিয়া খানম মিম ও বিজ্ঞান বিভাগের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র আব্দুল করিম রাজিব।
এ ঘটনায় দিয়ার বাবা রোববারই ক্যান্টনমেন্ট থানায় একটি মামলা করেন। দুই শিক্ষার্থী নিহত হওয়ার পর থেকেই নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলন করে আসছেন শিক্ষার্থীরা। তাদের আন্দোলনে বৃহস্পতিবার পঞ্চম দিনেও স্থবির হয়ে রয়েছে ঢাকা। নিরাপত্তাহীনতার অজুহাতে ঢাকা শহরের সব রুটে বাস চলাচল বন্ধ রেখেছেন পরিবহন মালিকরা।
এমন আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল বুধবার জাবালে নূর পরিবহনের দুই বাসের রেজিস্ট্রেশন বাতিল করে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)।
শিক্ষার্থীরা নয় দফা দাবি জানিয়েছিল। দাবিগুলো হলো- দুই শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় দায়ী বেপরোয়া ড্রাইভারকে ফাঁসি দিতে হবে, নৌ-পরিবহন মন্ত্রীকে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে হবে, শিক্ষার্থীদের চলাচলে এমইএস ফুটওভার ব্রিজ বা বিকল্প নিরাপদ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে, প্রত্যেক সড়কের দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকায় স্প্রিড ব্রেকার দিতে হবে, সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ছাত্র-ছাত্রীদের দায়ভর সরকারকে নিতে হবে, শিক্ষার্থীরা বাস থামানোর সিগন্যাল দিলে- থামিয়ে তাদেরকে নিতে হবে, শুধু ঢাকা নয়, সারা বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের জন্য হাফ ভাড়ার ব্যবস্থা করতে হবে, ফিটনেসবিহীন গাড়ি রাস্তায় চলাচল বন্ধ ও লাইসেন্স ছাড়া চালকরা গাড়ি চালাতে পারবেন না এবং বাসে অতিরিক্ত যাত্রী নেয়া যাবে না।
তাদের এই দাবিগুলো যৌক্তিক উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল গতকাল বলেন, দাবিগুলো বাস্তবায়নে পর্যায়ক্রমে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। একইসঙ্গে শিক্ষার্থীদের ঘরে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
আর এমন পরিস্থিতির মধ্যে সড়ক পরিবহন আইনের খসড়ার ভেটিং (পরীক্ষা-নিরীক্ষা) সম্পন্ন করার কথা জানিয়েছে আইন মন্ত্রণালয়। একই সঙ্গে এ সংক্রান্ত নথি সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হচ্ছে। বুধবার আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা রেজাউল করিম এ তথ্য জানান।
পুলিশ যেটা করতে পারেনি, সেটা ছাত্রলীগ আর শ্রমিকলীগ করে দেখিয়েছে! দেখুক সবাই বাচ্চাদের কিভাবে মারা হচ্ছে! আন্দোলনে বাংলাদেশের পতাকা বহনকারীকে কিভাবে মারতে পারলো? ভাইরাল হবে : নোয়াখালী!
Posted by Nahian Nafi on Thursday, August 2, 2018
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন