ভোটের ৪ দিন আগে সিইসির পদত্যাগ চাইল ঐক্যফ্রন্ট

পক্ষপাতী আচরণের অভিযোগ তুলে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের পদত্যাগ চেয়েছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। সুষ্ঠু নির্বাচনী পরিবেশ তৈরিতে ব্যর্থ হয়েছে অভিযোগ করে সিইসির অবিলম্বে পদত্যাগ চায় তারা।

মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর গুলশানের বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটির এক বৈঠক শেষে এ পদত্যাগের দাবি তোলা হয়। ঐক্যফ্রন্টের মুখপাত্র ও বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘এই নির্লজ্জ, অযোগ্য, অকার্যকর নির্বাচন কমিশনকে জাতির কাছে জবাবদিহি করতে হবে। তারা সুষ্ঠু নির্বাচনী পরিবেশ তৈরি করতে ব্যর্থ হয়েছে। আমরা অবিলম্বে এই প্রধান নির্বাচন কমিশনারের পদত্যাগ চাই।’ পদত্যাগ না হলে ‘ন্যূনতম’ সুষ্ঠু নির্বাচনও হবে না বলে মন্তব্য করেন তিনি।

মির্জা ফখরুল এবারের নির্বাচনকে ‘রক্তাক্ত ২০১৮ জাতীয় সংসদ নির্বাচন’ বলে উল্লেখ করেন।

ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। সেখানে বলা হয়, মঙ্গলবার দুপুরে বিভিন্ন অভিযোগ জানাতে ঐক্যফ্রন্টের নেতারা নির্বাচন কমিশনে গিয়েছিলেন। কিন্তু ক্ষোভের প্রকাশ করে ঐক্যফ্রন্টের নেতারা বলেন, তাদের যুক্তিকে অগ্রাহ্য করে সিইসি ক্ষমতাসীন দলের মতো অভিযোগগুলোকে অস্বীকার করে ‘পক্ষপাত দুষ্টু ও অসৌজন্যমূলক’ বক্তব্য দিলে তারা হতাশ হন। ইসির সঙ্গে বৈঠকের মাঝ পথে ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন ১০ জনের দল বের হয়ে যায়। সেখানে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ও হয়।

ঐক্যফ্রন্ট আরও অভিযোগ করে বলে, সিইসি সরকারের অতি বাধ্যগত কর্মচারী। তাঁর নিকট থেকে নিরপেক্ষ আচরণ পাওয়ার সম্ভাবনা নেই। সিইসির অবিলম্বে পদত্যাগ দাবি করে একজন নির্দলীয় নিরপেক্ষ ব্যক্তিকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার জন্য রাষ্ট্রপতির নিকট আবেদন করে ঐক্যফ্রন্ট।

আজ মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে পাঁচটায় দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের চুনকুটিয়া এলাকায় ঢাকা-৩ আসনের ধানের শীষের প্রার্থী বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। হাসপাতাল থেকে তিনি গুলশানে বিএনপির অফিসে আজ যান। গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, পাকিস্তানের সেনারা মুক্তি বাহিনীর সদস্যদের খুঁজে খুঁজে বের করত। এবার ধানের শীষ ও বিএনপির সমর্থকদের খুঁজে বের করা হচ্ছে। নির্বাচন কমিশনের ভূমিকাকে তিনি আলবদর, আল-শামসের সঙ্গে তুলনা করেন। ইসিকে উদ্দেশ্যে তিনি আরও বলেন, দায়িত্ব পালন না করে সরকারকে সন্তুষ্ট করার কারণে এ ধরনের হামলার ঘটনা ঘটছে। গয়েশ্বর বলেন, ‘৩০ তারিখের নির্বাচন গণতন্ত্রের যুদ্ধ। রক্ত যখন দিয়েছি, রক্ত আরও দেব। এই যুদ্ধে আমরা জয়লাভ করবই।’

ঐক্যফ্রন্টের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন মঈন খান, মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সুব্রত চৌধুরী, মোস্তফা মহসীন মন্টু প্রমুখ।