নিজের মেয়েকে দেখতে গিয়ে ছেলেধরা সন্দেহে লাশ হলেন পিতা
প্রায় ১০ বছর আগে শামসুন্নাহারের সঙ্গে বিয়ে হয় বাক প্রতিবন্ধী সিরাজের। ৬ বছরের এক মেয়ে রয়েছে তাদের। বাকপ্রতিবন্ধী হওয়া সত্ত্বেও রাজমিস্ত্রির সহযোগী হিসেবে কাজ করে সংসার চালাতেন।
বছর খানেক আগে এলাকার বিদ্যুৎ মিস্ত্রী আ. মান্নান ওরফে সোহেলের সঙ্গে পরকীয়ায় জড়ান সিরাজের স্ত্রী শামসুন্নাহার। এক পর্যায়ে পালিয়ে যান তারা। সঙ্গে নিয়ে যান মেয়ে মিনজুকেও। অনেক খুঁজেও কোনো হদিস পাননি। ৫-৬ মাস আগে স্ত্রী শামসুন্নাহার তালাকনামা পাঠান সিরাজের কাছে।
সেই থেকে হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েন সিরাজ। স্ত্রীকে না পেলেও নিজের মেয়েকে খুঁজতে থাকেন। এক পর্যায়ে মেয়ের সন্ধান পান সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি আল আমিন নগর এলাকায়। একাধিকবার দেখেও আসেন মেয়েকে।
শনিবারও একইভাবে মেয়েকে দেখতে যান সিরাজ। মেয়ের সঙ্গে কথা বলার এক পর্যায়ে তার স্ত্রীর বর্তমান স্বামী আব্দুল মান্নান ওরফে সোহেল তাকে দেখে ফেলে ‘ছেলেধরা’ বলে চিৎকার দিলে এলকাবাসী গণধোলাই দেয় সিরাজকে। সেখান থেকে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
সিরাজ পেশায় রাজমিস্ত্রির সহযোগী ছিলেন। সিদ্ধিরগঞ্জের সাইলো এলাকার ঠিকাদার মোহর চানের বাড়িতে ভাড়া থাকেন তারা। গ্রামের বাড়ি ভোলার লালমোহন থানার মুগিয়া বাজার এলাকায়।
শনিবার বাড়ির পাশের একটি মোবাইল ফোনের দোকান মালিকের কাছ থেকে ১০০ টাকা ধার নিয়ে মেয়ের জন্য চুড়ি ও লিপিস্টিক কিনে মেয়ের কাছে যান। কিন্তু সেই যাওয়ায় তার শেষ যাওয়া।
এদিকে পরিকল্পিতভাবে তাকে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি সিরাজের ভাই ও এলাকাবাসীর। সহজ-সরল এ প্রতিবন্ধীর হত্যাকারীদের বিচার দাবি করে রোববার বেলা ১১টায় এলাকায় মিছিল করেছেন এলাকাবাসী।
রোববার তার মরদেহ সিদ্ধিরগঞ্জের সাইলোগেইট এলাকায় নিয়ে গেলে কান্নায় ভেঙে পড়েন এলাকাবাসী। তাদের অনেককেই আক্ষেপ করে বলতে শোনা যায়, ‘এমন করে মানুষকে পিটিয়ে মারতে পারলো লোকজন!
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন