বরেণ্য শিক্ষাবিদদের অনেকেই ভিসি হতে চান না : শিক্ষামন্ত্রী

দেশের বরেণ্য শিক্ষাবিদদের অনেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে কাজ করতে আগ্রহী হন না বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। মঙ্গলবার (২৯ মার্চ) সংসদে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, পিরোজপুর বিল-২০২২ পাসের আলোচনায় মন্ত্রী এ কথা বলেন।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের খুবই বরেণ্য শিক্ষকরা আছেন, যাদের উপাচার্য হিসেবে পেলে গর্ব অনুভব করতাম। কিন্তু তাদের অনেকেই এই প্রশাসনিক দায়িত্ব নিতে আগ্রহী হন না। আমরা চাইলেও সবচাইতে ভালো কেউ আগ্রহী হবেন তেমন নয়।’

বিলটির ওপর জনমত যাচাই ও বাছাই কমিটিতে পাঠানোর প্রস্তাব সংসদে তোলার সময় বিরোধী দল জাতীয় পার্টির মুজিবুল হক চুন্নু এবং বিএনপির হারুনুর রশীদ উপাচার্যদের কর্মকাণ্ড নিয়ে সমালোচনা করেন।

মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, ‘আগে উপাচার্যদের কথা শুনলে শ্রদ্ধা মাথা নত হয়ে আসতো। এখন তাদের দুর্নীতির খবর শুনে লজ্জায় মাথা নত হয়ে আসে। পরিবারের সদস্যদের নিয়োগ দিচ্ছেন, দুর্নীতি করছেন।’ দলীয় বিবেচনার বাইরে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগের দাবি জানান তিনি।

বিএনপির সংসদ সদস্য হারুন অভিযোগ করেন, ‘উপাচার্যরা যা ইচ্ছা তাই করছেন’।

এর জবাবে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের কার্যকলাপ নিয়ে কিছু কিছু সমালোচনা আছে। যেগুলোর সত্যতাও আছে এবং সেগুলোর বিষয়ে ব্যবস্থাও গ্রহণ করা হচ্ছে। কিন্তু তার মানে এই নয় যে, ঢালাওভাবে… দেশের সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্যদের নিয়ে মন্তব্য করা সমীচীন মনে করি না।’

তিনি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগের জন্য যখন প্যানেল প্রস্তুত করে পাঠানো হয়, যে বিষয়গুলোর ওপর ভিত্তি করে তালিকা করা হয়…। আমি আগেও বলেছি, আবার উপস্থাপন করছি— প্রথমে দেখা হয় তাদের একাডেমিক এক্সিলেন্স। দ্বিতীয়ত দেখা হয়, তারা গবেষণা কীরকম করেছেন। একইসঙ্গে তাদের যে প্রতিষ্ঠান, সেখানে নেতৃত্ব দিয়েছেন কি না… সমিতি থাকে, নানা জায়গায় থাকে সেখানে নেতৃত্ব দিয়েছেন কি না। উপাচার্য শুধু একাডেমিক দিক দেখেন না, নেতৃত্ব দেওয়ার গুণাবলিও জরুরি। একইসঙ্গে প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন করেছেন কি না সেটাও দেখা হয়। এসব বিবেচনায় যাদের সবচাইতে ভালো মনে করা হয় তাদের নাম প্রস্তাব করা হয়।

এর আগে, শিক্ষামন্ত্রী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে পিরোজপুরে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করতে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, পিরোজপুর বিল-২০২২’ বিলটি পাসের প্রস্তাব করলে তা কণ্ঠভোটে পাস হয়।

গত ১৮ নভেম্বর বিলটি সংসদে ওঠানোর পর বিলটি পরীক্ষা করে সংসদে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়।

বিলে বলা হয়েছে, পিরোজপুর সদরে এই বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করা হবে। উচ্চ শিক্ষা ও গবেষণার জন্য এক বা একাধিক ইনস্টিটিউট স্থাপন করা যাবে। অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় আইনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই নতুন এ আইন করা হয়েছে।