২৫ জুন উদ্বোধন স্বপ্নের পদ্মা সেতু
আগামি ২৫ জুন বহুল আকাঙ্ক্ষিত স্বপ্নের পদ্মা সেতু উদ্বোধন করা হবে।
মঙ্গলবার (২৪ মে) দুপুরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাত শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, ২৫ জুন সকাল ১০টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যান চলাচলের জন্য পদ্মা সেতু উদ্বোধন করবেন।
এর আগে মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পদ্মা সেতু উদ্বোধনের তারিখ নির্ধারণ এবং নামকরণের সংক্ষিপ্ত তালিকা নিয়ে আলোচনার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করতে গণভবনে যান ওবায়দুল কাদের।
গত ১১ মে রাজধানীর সেতু ভবনে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের ১১১তম সভা শেষে মন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, পদ্মা সেতু উদ্বোধন নিয়ে ধোঁয়াশার কোনো কারণ নেই। আমরা শেষ দিকে আছি, সামান্য কিছু কাজ বাকী। এটা মে মাসের মধ্যে শেষ হয়ে যাবে।
তিনি বলেন, পদ্মা সেতুর কাজের অগ্রগতির সামারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে পাঠানো হয়েছে। আগামী মাসের (জুন) শেষ দিকে সেতুটি উদ্বোধনের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে সময় চেয়েছি। তিনি সময় দিলে জুনেই পদ্মা সেতু যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে।
এরপর থেকেই আগামী জুনের শেষ সপ্তাহে পদ্মা সেতুর উদ্বোধন নিয়ে জল্পনা-কল্পনা চলছিল। আজ মঙ্গলবার সে বিষয়েই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিলেন সরকারপ্রধান।
এদিকে, পূর্ণাঙ্গ রূপ পেয়েছে পদ্মা সেতুর সড়কপথ। মূল সেতুর পর দুই প্রান্তের ভায়াডাক্টের কার্পেটিংও শেষ হয়েছে। এখন চলছে রেলিং ও রেলিংপোস্ট এবং দুই পাড়ে অস্থায়ী সাবস্টেশনে বিদ্যুৎ সংযোগের কাজ।
জাজিরা প্রান্তের সাউথ ভায়াডাক্টে সোমবার (২৩ মে) বিকেলে কার্পেটিং সম্পন্ন হওয়ার মধ্য দিয়ে স্বপ্নের পদ্মা সেতুর সড়ক পথ পেয়েছে পূর্ণাঙ্গতা। মূল সেতুর পর এখন সংযোগ সেতুর কার্পেটিংও শেষ।
পুরো সেতুজুড়েই এখন ব্ল্যাকটপ। আর রাতে আলো ছড়াতে দুই পাশের প্যারাপেটের নির্দিষ্ট দূরত্বে দাঁড়িয়ে ল্যাম্পপোস্ট। চলছে বিমানে আসা প্রথম ও দ্বিতীয় চালানের রেলিং ও রেলিংপোস্ট স্থাপন।
অন্যদিকে সমুদ্র পথে আসা রেলিংয়ের বড় চালানটি চট্টগ্রাম বন্দর থেকে প্রকল্প এলাকায় নিয়ে আসার প্রক্রিয়া চলছে। সেতুতে রোড মার্কিং চলছে পুরোদমে। দুই পারে নাম ফলক ও ম্যুরালের কাজ শেষের দিকে এখন।
মূল পদ্মা সেতুর কাজের অগ্রগতি ছাড়িয়েছে ৯৮ শতাংশ। সার্বিক অগ্রগতি সাড়ে ৯৩ শতাংশের বেশি।
পদ্মা সেতু দেশের পদ্মা নদীর ওপর নির্মাণাধীন একটি বহুমুখী সড়ক ও রেল সেতু। এর মাধ্যমে মুন্সিগঞ্জের লৌহজংয়ের সঙ্গে শরীয়তপুর ও মাদারীপুর যুক্ত হবে। ফলে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে উত্তর-পূর্ব অংশের সংযোগ ঘটবে।
দুই স্তরবিশিষ্ট স্টিল ও কংক্রিট নির্মিত ট্রাস ব্রিজটির ওপরের স্তরে থাকবে চার লেনের সড়ক পথ এবং নিচের স্তরটিতে একটি একক রেলপথ। পদ্মা-ব্রহ্মপুত্র-মেঘনা নদীর অববাহিকায় ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের ৪১টি স্প্যান ইতোমধ্যে বসানো হয়েছে, ৬.১৫০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য এবং ১৮.১০ মিটার প্রস্থ পরিকল্পনায় নির্মিত হচ্ছে দেশটির সবচেয়ে বড় সেতু।
পদ্মা সেতু নির্মাণকারী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি।
খরস্রোতা পদ্মা নদীর ওপর ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি টাকা নিজস্ব অর্থায়নে নির্মাণ হচ্ছে স্বপ্নের এ সেতু। ২০১৪ সালে পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হয়।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন