ভারতে স্থায়ীভাবে ইলিশ রপ্তানি বন্ধে আইনি নোটিশ

ভারতে ইলিশ রপ্তানি স্থায়ীভাবে বন্ধে সাত দিনের মধ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ জানিয়ে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে। সরকারের চার সচিব ও তিনটি সংস্থার চেয়ারম্যান বরাবর রেজিস্ট্রি ডাকযোগে এটি পাঠানো হয়। রোববার সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. মাহমুদুল হাসান এ নোটিশ প্রেরণ করেন।

বাণিজ্যসচিব, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদসচিব, পররাষ্ট্রসচিব, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনসচিব, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান, আমদানি ও রপ্তানি প্রধান নিয়ন্ত্রকের দপ্তরের প্রধান নিয়ন্ত্রক ও বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের চেয়ারম্যান বরাবর নোটিশটি পাঠানো হয়।

নোটিশে বলা হয়েছে, ‘ইলিশ মাছ বাংলাদেশের জাতীয় মাছ। কিন্তু বর্তমানে ইলিশ মাছের অত্যাধিক দামের কারণে বাংলাদেশের দরিদ্র জনগোষ্ঠী এই ইলিশ মাছ কেনার কথা চিন্তাও করতে পারে না। অন্যদিকে দেশের মধ্যবিত্ত জনগণও এই ইলিশ মাছ কিনতে হিমশিম খাচ্ছে। বাজারে ইলিশ মাছের দাম গড়ে ১ হাজার টাকা থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা কেজি। এ ছাড়া ইলিশ মাছের মধ্যে সবচেয়ে সুস্বাদু ইলিশ হলো পদ্মা নদীর ইলিশ। বাজারে পদ্মার ইলিশের দাম গড়ে ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা কেজি এবং বেশির ভাগ ক্ষেত্রে এর চেয়ে বেশি।’

পদ্মা নদী থেকে যে সীমিত পরিমাণ ইলিশ মাছ পাওয়া যায়, তা বাজারে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই পাওয়া যায় না অভিযোগ করে নোটিশে বলা হয়, ‘বাজারে যেসব ইলিশ পাওয়া সেগুলো মূলত অন্যান্য নদীর ও সামুদ্রিক ইলিশ মাছ। অত্যন্ত দুঃখজনক বিষয় এই যে, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় দেশের মানুষের চাহিদার কথা চিন্তা না করে ভারতে ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দিয়েছে। ভারতে ইলিশ রপ্তানির ফলে বাংলাদেশের স্থানীয় বাজারগুলোতে ইলিশের দাম আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। আরও দুঃখজনক বিষয় এই যে, বাংলাদেশের বাজারদরের চেয়েও কম মূল্যে ভারতে ইলিশ রপ্তানি করা হচ্ছে।’

ভারতে রপ্তানি করা ইলিশগুলো বেশির ভাগই পদ্মা নদীর উল্লেখ করে এই আইনজীবী আরও বলছেন, ‘এমনিতেই পদ্মা নদী থেকে সীমিত পরিমাণ ইলিশ পাওয়া যায়। তাই এই পদ্মার ইলিশগুলো ভারতে রপ্তানির ফলে বাংলাদেশের বাজারগুলোতে পদ্মার ইলিশ যথেষ্ট পরিমাণে পাওয়া যাচ্ছে না। বাংলাদেশের রপ্তানি নীতি-২০২১-২৪ অনুযায়ী ইলিশ মাছ মুক্তভাবে রপ্তানিযোগ্য পণ্য নয়। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সম্পূর্ণ অনায্যভাবে, জণগণের স্বার্থ উপেক্ষা করে ভারতে ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দিয়েছে।’

আইনি নোটিশ পাওয়ার সাত দিনের মধ্যে ভারতে ইলিশ রপ্তানি স্থায়ীভাবে বন্ধ করতে অনুরোধ জানানো হয়েছে। অন্যথায় এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হবে বলেও নোটিশে উল্লেখ করেছেন আইনজীবী মো. মাহমুদুল হাসান।