ইয়াবা কারবারিদের পক্ষ নিয়ে বদির পোস্ট, সমালোচনার ঝড়

কক্সবাজারের টেকনাফে আত্মসমর্পণ করা ১০১ মাদক কারবারির বিরুদ্ধে দুটি মামলার রায় ঘোষণা করা হয়েছে। ইয়াবা মামলায় প্রত্যেককে দেড় বছর করে কারাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। অস্ত্র আইনে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় মামলা থেকে সবাইকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে। বুধবার দুপুরে কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইল এ রায় দেন।

রায়ের আগ মুহূর্তে বুধবার সকালে ইয়াবা কারবারিদের পক্ষ নিয়ে ফেসবুকে লিখেছেন সাবেক আলোচিত এমপি আবদুর রহমান বদি। যেটি বিতর্কের জন্ম দেয়।

টেকনাফের স্থানীয় এক সাংবাদিক ইয়াবা কারবারিদের রায়ের বিষয়ে সাজা কী হতে পারে চানতে চেয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি পোস্ট দেন।

সেখানে মন্তব্যের ঘরে গিয়ে বদি একটি অশালীন শব্দ ব্যবহার করে লিখেছেন, টাকার জন্য সাংবাদিকরা মিথ্যা নিউজ করেছে। তিনি ১০১ ইয়াবা কারবারিকে নিরপরাধ বলেও দাবি করে বলেন, সাংবাদিকরা তাদের কিছু করতে পারবে না।

ইয়াবা কারবারিদের পৃষ্ঠপোষক হিসেবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকার ১ নম্বরে রয়েছে আবদুর রহমান বদির নাম। তাই আত্মস্বীকৃত মাদক কারবারিদের পক্ষ নিয়ে তার মন্তব্য ঘিরে আবার তুমুল সমালোচনা চলছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।

ফোন রিসিভ না করায় আবদুর রহমান বদির কোনো বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

এদিকে রায় ঘোষণার পর ১০১ ইয়াবা কারবারি ছাড়াও টেকনাফের শত শত কারবারির ঘরে আনন্দ উল্লাস লক্ষ করা গেছে। এ রায়কে তারা বড় ধরনের জয় হিসেবে দেখছে।

বদির ভাই আত্মগোপনে থাকা আবদুস শুক্কুর এক ফেসবুক পোস্টে লিখেন, আলহামদুলিল্লাহ, আল্লাহ যা করেন মঙ্গলের জন্যই করেন।

অপর আলোচিত ইয়াবা ডন এনাম মেম্বার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লেখেন, আলহামদুলিল্লাহ, আল্লাহ মায়ের দোয়া কবুল করেছেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন ইয়াবা কারবারি জানান, খুব শিগগির তারা গরু জবাই করে বড় মেজবান, নাচ-গান ও পার্টির আয়োজন করবেন। সেখানে সবাইকে দাওয়াত দেওয়া হবে। এমনকি মিয়ানমার ও রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ইয়াবা কারবারিদের একটি গ্রুপও পাহাড়ে ফাঁকা গুলি ছুড়ে উল্লাস প্রকাশ করেছে বলে জানা গেছে।

আদালত সূত্রমতে, ২০১৯ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালের হাতে সাড়ে ৩ লাখ ইয়াবা, ৩০টি দেশি বন্দুক ও ৭০ রাউন্ড গুলিসহ আত্মসমর্পণ করেন ১০২ জন ইয়াবা কারবারি। টেকনাফ থানার তৎকালীন পরিদর্শক (অপারেশন) শরীফ ইবনে আলম মাদক ও অস্ত্র আইনে তাদের বিরুদ্ধে পৃথক ২টি মামলা করেন। এরই মধ্যে অসুস্থ হয়ে এক আসামি মারা গেলে ১০১ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দেওয়া হয়। বুধবার আলোচিত এ মামলার রায় ঘোষণা করেন আদালত।
সূত্র: যুগান্তর