এবার অনুষ্ঠিত হয়নি ঠাকুরগাঁও সীমান্তে দুই বাংলার মিলন মেলা
কালী পূজার পরপরই প্রতিবছর হরিপুর সীমান্তে আয়োজন করা হয় মিলন মেলার। নারীর টানে ক্ষণিকের জন্য হলেও স্বজনদের সঙ্গে দেখা করতে ছুটে আসে বাংলাদেশ ও ভারতের লোকজন। বছরের পর বছর ধরেই এভাবে হয়ে আসছিল এই মিলনমেলা।
ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর উপজেলার চাপাসার তাজিগাঁও সীমান্তের টেংরিয়া গোবিন্দপুর কুলিক নদীর পারে শ্রী শ্রী জামর-পাথর কালীপূজা উপলক্ষ্যে এবারও হলো না দুই বাংলার মিলনমেলা। প্রতি বছর ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে বসে এ মিলনমেলা। বাংলাদেশের শতাব্দী প্রাচীন কালীপুজোকে কেন্দ্রে করে কাঁটাতার মাঝে রেখে দুই দেশের মানুষ মিলিত হয়।
এ বছর প্রাচীন সেই মেলা হওয়ার কথা ছিল ৬ ডিসেম্বর। কিন্তু এবার মিলন মেলা নিষিদ্ধ করেছে প্রশাসন। গত বছর ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর আপত্তির কারণে মিলনমেলাটি হয়নি। বিভিন্ন জেলা থেকে আগত কয়েক হাজার নারী-পুরুষ ভারতে বসবাসরত তাদের আত্মীয়-স্বজনদের সঙ্গে দেখা করার জন্য দিনটির অপেক্ষা করে।
এই পূজার অনুষ্ঠানকে ঘিরে সীমান্ত এলাকায় অবৈধ অনু প্রবেশ ঠেকাতে ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে বিজিবি নজরদারি ছিল চোখে পড়ার মতো। সেই সাথে পুলিশ ও আনসার ও ছিলেন সেখানে।
স্থানীয়রা বলেন, ব্রিটিশ আমল থেকেই পূজা উপলক্ষ্যে পাথর কালী মেলার নামে প্রতিবছর এখানে এক দিনের জন্য মেলা বসে আসছে। মেলাটি বাংলাদেশের অংশে পড়লেও মেলায় ভারতীয়দের সীমান্তে উন্মুক্ত করে দেয় ভারত। কিন্তু দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে এবার শান্তিপূর্ণভাবে পূজা অনুষ্ঠিত হলেও মিলনমেলাটি হয়নি। শুধুমাত্র পূজা টি অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেখানে কোন প্রকার দোকান বসতে দেওয়া হয়নি।
এদিকে পূজা মন্দির কমিটির সভাপতি নগেন কুমার পাল বলেন, তারা এই পূজা দীর্ঘদিন থেকে করে আসছে এবার বাংলা ওপার বাংলা মিলেই একটা মিলন মেলার মধ্য দিয়ে আনন্দমেলা অনুষ্ঠিত হতো। দুই দেশের নাগরিক একসাথে পূজার করত। কোনো প্রকার বাধা ছাড়াই ভারতীয়রা মেলায় আসতে পারেন।
দুই পাশে মিলে প্রায় তিন চার লক্ষাধিক লোক মিলিত হতো। এই দিনটির জন্য প্রতি বছর তারা অপেক্ষা করে। তাদের আশা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে পুনরায় আগের মত আয়োজন করার দাবি জানান। তবে এবার পূজা হলেও মিলনমেলা অনুষ্ঠিত হলো না।
এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁও হরিপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আরিফুজ্জামান বলেন, ঐতিহ্যবাহী এই পাথর কালী পূজা প্রতিবছরের মতো এবারও হচ্ছে স্থানীয় এবং জেলা কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক জানানো হয়েছে এবার মেলা করা যাবে না। ভারত বাংলাদেশের যে সীমানা রয়েছে সেটা লংঘন করা যাবে না। পূজার পরিবেশ সার্বিক রাখতে উপজেলা প্রশাসন, বিজিবি, পুলিশ কাজ করেছে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন