আপিলেও খুললো না খালেদা জিয়ার ভোটের দরজা

দুই বছরের বেশি দণ্ডিতদের ভোটে আসার সুযোগ দিল না আপিল বিভাগও। হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান এ জেড এম জাহিদ হোসেনের আবেদনে সাড়া দেয়নি সর্বোচ্চ আদালত।

বুধবার বিএনপি নেতার আবেদনে শুনানি করে সাত বিচারকের আপিল বেঞ্চ ‘নো অর্ডার’ দিয়েছে।

আগের দিন জাদিহসহ বিএনপির পাঁচ নেতার আবেদনের ওপর শুনানি করে হাইকোর্ট সিদ্ধান্ত দেয়, দণ্ড বাতিল বা স্থগিত না হলে এবং জামিন না মিললে ভোটে দাঁড়ানো যাবে না।

জাহিদের এই আবেদনেই আটকে গেল বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার ভোটে আসার পথ। কারণ তিনি এক মামলায় ১০ বছর এবং একটিতে সাত বছরের কারাদণ্ড পেয়েছেন। যদিও জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে চেম্বার জজ আদালতে আবেদন করা হয়েছে। আর চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় বিচারিক আদালতের দণ্ডের বিরুদ্ধে আপিল হয়েছে হাইকোর্টে।

সংবিধান অনুযায়ী নৈতিক স্খলনজনিত কারণে কারও দুই বছরের বেশি সাজা হলে তিনি ভোটে অযোগ্য হবেন। তবে এই বিধানটিতে অস্পষ্টতা ছিল। বিচারিক আদালতের রায়ের পর নাকি আপিল নিষ্পত্তির পর বিধানটি কার্যকর হবে এ নিয়ে দুটি মত ছিল।

উচ্চ আদালত যেমন বিচারিক আদালতে দণ্ডিতদের ভোট থেকে দূরে রেখেছে, তেমনি একাধিক উদাহরণ আছে যে দণ্ডিত হওয়ার পরও প্রার্থীরা ভোটে অংশ নিতে পেরেছেন আদালতের নির্দেশেই।

তবে উচ্চ আদালত এবার বিষয়টি স্পষ্টীকরণ করে দিয়েছে যে, কেবল আপিল করেই ভোটে আসা যাবে না। দণ্ড স্থগিত হতে হবে।

এই বিষয়টি নিয়ে খালেদা জিয়া অবশ্য কোনো আবেদন করেননি উচ্চ আদালতে। দণ্ড স্থগিত চেয়ে আবেদনগুলো করেছিলেন বিএনপি নেতা আমান উলাহ আমান, এ জেড এম জাহিদ হোসেন, ওয়াদুদ ভূঁইয়া, মশিউর রহমান ও আব্দুল ওহাব।

এই আদেশের পর মঙ্গলবারই চেম্বার জজ আদালতে যান পাঁচ নেনতা। আর চেম্বার বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বিষয়টি শুনানির জন্য আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে পাঠিয়ে দেন।

আপিল বিভাগে এ জেড এম জাহিদ হোসেনের পক্ষে শুনানি করেন রোকন উদ্দিন মাহমুদ। অন্যদিকে দুদকের পক্ষে খুরশীদ আলম খান এবং রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম শুনানি করেন।

খুরশীদ আলম খান বলেন, ‘হাই কোর্টের আদেশই বহাল আছে। নির্বাচন কমিশন আদালতের এ আদেশ মানতে বাধ্য। ফলে বিএনপির ওই পাঁচ নেতা, খালেদা জিয়া, ব্যারিস্টার নাজমুল হুদাসহ দুই বছরের বেশি সাজায় দণ্ডিত কেউ এবার নির্বাচন করতে পারবেন না।’

তবে জাহিদ হোসেনের আইনজীবী খায়রুল আলম চৌধুরী বলেছেন, ‘দণ্ডিতরা নির্বাচন করতে পারবে কি না- সেটা নির্ভর করছে রিটার্নিং কর্মকর্তার ওপর। কারণ কেউ নির্বাচন করতে পারবে কি পারবে না, সেটা পুরোপুরি রিটার্নিং কর্মকর্তার এখতিয়ার।’

অবশ্য নির্বাচন কমিশন আগেই রিটানির্ং কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দিয়ে রেখেছে, দণ্ড স্থগিত না হলে কারও মনোনয়নপত্র যেন গ্রহণ করা না হয়।