বিশ্বকাপ আসছে, জমজমাট ‘জার্সি’র ব্যবসা

ফুটবল বিশ্বকাপের হাওয়া লাগতে শুরু করেছে। সামাজিক মাধ্যমগুলোতে নিজ নিজ দলের প্রতি সমর্থন জানাতে শুরু করেছেন ভক্তরা। সেই সঙ্গে দুই তুমুল জনপ্রিয় দল আর্জেন্টিনা ও ব্রাজিলের সমর্থকদের মধ্যে শুরু হয়ে গেছে খুনসুটি।

ভক্তরা নিজ নিজ দলের জার্সি কেনা শুরু করে দিয়েছেন। তার দোকানগুলোতে তাই বাড়ছে ভিড়।

জুনের ১৪ তারিখ রাশিয়ায় বসতে যাচ্ছে বিশ্ব ফুটবলের সবচেয়ে বড় আসর। বিশ্বকাপের ২১ তম আসরে আটটি গ্রুপে খেলবে মোট ৩২টি দল। পাঁচ বারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ব্রাজিল ও দুই বারের আর্জেন্টিনা এবারও মনযোগের কেন্দ্রে থাকবে বাংলাদেশের অধিকাংশ ফুটবল অনুরাগীদের কাছে। তাই জার্সির চাহিদাও বেশি এই দুই ফুটবল পরাশক্তির।

রাজধানীর মিরপুর-১ নম্বর, ১০ নম্বর, নিউমার্কেট ও স্টেডিয়ার মার্কেটে জার্সি ও পতাকা বিক্রি হয় সবচেয়ে বেশি।

মিরপুর- ১ নম্বর শাহ-আলী মার্কেট ঘুরে দেখা গেল জার্সি কিনতে আসা ফুটবলপ্রেমীদের প্রেমিদের ভিড়। চাহিদা অনুপাতে দোকানিরাও এনেছেন ভিন্ন ভিন্ন মান ও দামের জার্সি।

চীন থেকে আমদানি করা কাপড়ের জার্সি বিক্রি হচ্ছে ৫০০ থেকে ৭০০ টাকায়। বাংলাদেশি কাপড়ের জার্সি মিলছে ২৫০ থেকে ৩০০ টাকার মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে।

দামে এগিয়ে থাইল্যান্ডের কাপড়ে তৈরি করা বিভিন্ন দলের জার্সি। বিক্রি হচ্ছে ৭০০ থেকে হাজার টাকার মধ্যে।

বিক্রেতাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি বিক্রিত জার্সির মধ্যে আছে ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনার। জার্মানি স্পেন ও পর্তুগালের জার্সির চাহিদাও রয়েছে।

শাহ আলী মার্কেটের গ্রামীণ খেলা ঘরের বিক্রেতা সাকিব বলেন, ‘ভালই বিক্রি হচ্ছে, কাস্টমার আছে। দেখে চলে যাওয়ার চাইতে কেনার কাস্টমার বেশি।’

‘এখনও জার্সির দাম কম আছে। কিছুদিন পর দাম বাড়লেও বাড়তে পারে। তাই সবাই আগে থেকেই কিনে রাখছে।’

‘সবচেয়ে বেশি বিক্রি হচ্ছে ব্রাজিল, জার্মানি, আর্জেন্টিনারগুলো। কম বিক্রির মধ্যে আছে স্পেন আর পর্তুগাল। তাও একেবারে কম না।’

আর্জেন্টিনার সমর্থক মামুনের প্রত্যাশা তিন দশকের শিরোপার খরা এবার কাটবে তাদের। বলেন, ‘এবার কাপ আমাদের। তাই আমরা আগে থেকেই রেডি হচ্ছি। আজ জার্সি কিনতে আসলাম। আগামী সপ্তাহর মধ্যে পতাকা বানাব, বিশাল পতাকা। এবার আমরাই জিতব। এটা মেসির শেষ বিশ্বকাপ। ব্রাজিলরে দেখাইয়া দিব।’

জার্সি কিনতে মোহাম্মদপুর থেকে মিরপুর এসেছেন সিহাব ও সামির। সিহাব বলেন, ‘আমরা ব্রাজিলকে সাপোর্ট করি। দুইজন দুইটা জার্সি কিনব। চারটা পতাকা কিনব।’

‘দুটো বাংলাদেশের, আর দুটো ব্রাজিলের। বারান্দায় লাগাব। উপরে বাংলাদেশ, নিচে ব্রাজিল। আমরা প্রতি বছর তাই করি।’

তবে পতাকা তৈরির দোকানে ভিড় কম। এখন অবধি মাত্র দুটি পতাকা বানিয়েছে শাহ্‌ আলী মার্কেটের সবচেয়ে জনপ্রিয় পতাকা তৈরির দর্জির দোকান ‘শাহ আলী টেইলার্স’। আর সে পতাকা দুটিও ষষ্ঠ বারের মত শিরোপা প্রত্যাশী ব্রাজিলের।

দোকানের কারিগর কোরবান আলী বলেন, ‘এখনও ওই রকম কাজ নাই। মানে পতাকার কাজ এখনো শুরুই হয় নাই। সপ্তাহ খানেক লাগব। তারপর একটা চাপ পরব।

‘দুইডা পতাকা বানাইছি, ব্রাজিলের। একটা ৭০ ফিট বাই ২০ ফিট। আর একটা ৯০ ফিট বাই ৪০ ফিট। আরো বড় কাজ আইব।’

মুক্তবাংলা মার্কেটের কারিগররাও অপেক্ষায় পতাকার অর্ডারের। ব্রাজিলের পতাকা পেছনে লাগিয়ে কাজ করছেন জসিম। কিন্তু এখনো পাননি পতাকা তৈরির কোনো কাজ।

জসিম বলেন, ‘আমরা সারা বছর প্যান্ট, শার্ট ফিটিং করার কাজ করি। এখনো তাই করতাছি। পতাকার কাজ এই মাস গেলে পরা দমে শুরু হইব।’