যেভাবে ড. জাফর ইকবালের ওপর হামলা

সামনে খোলা মাঠে চলছে রোবট প্রতিযোগিতা। মুক্তমঞ্চের সোফায় বসে তা উপভোগ করছেন সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল। তিনি শুধু একা নন, হাজারো শিক্ষক-শিক্ষার্থী এই অনুষ্ঠান উপভোগ করছেন। এরই মধ্যে হঠাৎ শোরগোল, তারপরই পুরো শরীর রক্তে ভেজা দেখা গেল অধ্যাপক জাফর ইকবালকে।

তাকে শনিবার বিকেল পাঁচটা ৩৫ মিনিটের দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তমঞ্চে ইলেকট্রনিক অ্যান্ড ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের রোবট উৎসবের সভামঞ্চেই ছুরিকাঘাত করেন অজ্ঞাত এক যুবক।

পরে অধ্যাপক জাফর ইকবালকে সিলেটে এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা শিক্ষার্থীরা জানান, স্যার মুক্তমঞ্চের সোফায় বসে অনুষ্ঠান উপভোগ করছিলেন। হঠাৎ পেছন থেকে এক যুবক এসে তার মাথার পেছনে ছুরিকাঘাত করেন।

এরপর হামলাকারী পালানোর চেষ্টা করলে শিক্ষার্থীরা তাকে ধরে গণপিটুনি দেয়। খবর পেয়ে শিক্ষক ও পুলিশ সদস্যরা তাকে উদ্ধার করে শিক্ষাভবন (এ) এ নিয়ে যায়। আনুমানিক ২৪-২৫ বছর বয়সী ছেলেটি সেখানে মরার মত পড়ে আছেন। কোনো কথার জবাব দিচ্ছেন না।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিক ফয়জুল্লাহ সাইফ বলেন, ‘তাৎক্ষণিকভাবে কেউই হামলা টের পাইনি। কিন্তু, মুহূর্তে স্যারের শরীর রক্তে ভিজে যায়। তখন তাকে দ্রুত উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়া হয়।’

অধ্যাপক জাফর ইকবালের শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল মাহবুব হাসান সাংবাদিকদের জানান, ড. জাফর ইকবালের শারীরিক অবস্থা নিয়ে এখনও কিছু বলা যাচ্ছে না। বেশ কয়েকটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হবে। তারপর বিস্তারিত বলা হবে।

তবে সিলেট মেট্রোপলিটনের এডিসি (মিডিয়া) আবদুল ওহাব সন্ধ্যা সোয়া সাতটার দিকে জানান, অধ্যাপক জাফর ইকবালকে ছুরিকাঘাতের ঘটনায় এক যুবককে আটক করা হয়েছে। তার কাছ থেকে হামলার বিষয়ে তথ্য জানার চেষ্টা করা হচ্ছে।

চিকিৎসকদের প্রাথমিক তথ্যের বরাতে তিনি আরও জানান, ড. জাফর ইকবাল এখন কিছুটা সুস্থ। মাথার পেছনের চামড়া কেটে গেছে। তার ব্রেনে আঘাত লাগেনি।

এর আগে ২০১৬ সালের অক্টোবরে অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল ও তার স্ত্রী একই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. ইয়াসমিন হককে হত্যার হুমকি দিয়ে মোবাইলে এসএমএস পাঠানো হয়।

আনসারুল্লাহ বাংলা টিম এই হত্যার হুমকি দিয়েছিল জানিয়ে, তারা সিলেটের জালালাবাদ থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছিলেন।