হাঁটলেই চার্জ হবে মোবাইল!

প্রযুক্তি মানুষের দৈনন্দিন জীবনকে করেছে সহজ থেকেও সহজতর ও গতিশীল। তারপরও থেমে নেই নিত্য নতুন আবিষ্কারের সন্ধানে চলছে অব্যাহত প্রচেষ্টা। সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উইসকনসিন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক এবং বিজ্ঞানীরা তৈরি করেছেন এমন এক যন্ত্র, যা মানুযের চলাফেরার শক্তিকে বিদ্যুতে রুপান্তরিত করে।

বলতে পারেন, চার্জার-পাওয়ার ব্যাংকের দিন শেষ। এবার থেকে জুতা পরে হাঁটলেই চার্জ হয়ে যাবে ফোন। অনেক সময় এমন হয় যে, বাইরে বেরোনোর সময়েই ফোনে চার্জ থাকে না। সেই রকম পরিস্থিতির জন্যই এমন উদ্ভাবন।

জানা যায়, ২০১৫ সালের ১৬ নভেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক টম ক্রুপেনকিন এই বিষয়ে একটি নিবন্ধ প্রকাশ করেন। তাঁর মতে, মানুষের চলাফেরার সময় যে শক্তির উৎপাদিত হয়, তা থেকে দেহজাত তাপ উৎপন্ন হয়। সেই তাপকে কাজে লাগিয়ে বিদ্যুৎও উপাদন করা যায়। এই গবেষণায় তাঁর সহকারী ছিলেন জে অ্যাশলি টেলর।

নানা পরীক্ষা করার পর অবশেষে তিনি এক ধরনের জুতা আবিষ্কার করেন, যা পরে হাঁটলে বিদ্যৎ তৈরি হবে। সেই বিদ্যুৎকে কাজে লাগিয়ে মোবাইলে ল্যাপটপ ইত্যাদি চার্জ দেওয়া যাবে। শক্তি-উৎপাদক এই জুতা সামরিক বাহিনীতে বিশেষ উপযোগী। কারণ, জুতার তলায় এই যন্ত্রকে লাগিয়ে সহজেই সৈন্যরা ফ্ল্যাশলাইট জ্বালিয়ে বহন করতে পারবেন, তাঁদের রেডিও, নাইট ভিশন গগ্‌লস ইত্যাদিকে রিচার্জ করতে পারবেন।

এক সাক্ষাৎকারে টম জানিয়েছেন যে, এই যান্ত্রিক জুতা পরে চলাফেরা করলে প্রতিটি জুতোয় প্রায় ১০ ওয়াট বিদ্যুৎ উৎপন্ন হয়। অর্থাৎ দু’টি জুতা একত্রে প্রায় ২০ ওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করে, যা মোবাইল চার্জ দেওয়ার জন্য যথেষ্ট।

এই বিষয়ে টম আরও বলেছেন যে, এই বিশেষ জুতার সোলে একটি শক্তি উৎপাদক যন্ত্র এবং ব্যাটারি-সহ অন্যান্য বৈদ্যুতিক উপাদান রয়েছে। এছাড়াও আছে দু’টি প্লেটও, যারা এক ধরনের তরলের মাধ্যমে পরস্পরের থেকে পৃথক থাকে। নিচের প্লেটে অসংখ্য ছিদ্র থাকে যা মানুষের হাঁটার সময় এক ধরনের চাপের সৃষ্টি করে। যার জন্য মানুষের শরীর থেকে উৎপন্ন তাপশক্তি বিদ্যুতে রূপান্তরিত হয়।

সম্প্রতি ‘ইনস্টেপ ন্যানোপাওয়ার’ নামে এক কোম্পানিও চালু করেছেন টম এবং টেলর, যার মাধ্যমে এই প্রযুক্তিকে সারা বিশ্বের কাছে পৌঁছে দিতে চান তাঁরা।