সরকারি খালে ১৬টি মাছের ঘের! ১১জনের প্রভাবে অনাবাদী ২হাজার একর জমি
দীর্ঘ চার কিলোমিটার সরকারি খালে কোন ধরনের অনুমোদন কিংবা বন্দোবস্ত না নিয়েইে তৈরি করা হয়েছে ১৬টি মাছের ঘের। রেকর্ডীয় সম্পত্তির মুখশা দাবিতে দখল করে নিয়েছে স্থানীয় ১১ জন প্রভাবশালী। ফলে কৃষিতে পানি নিষ্কাশন প্রতিবন্ধকতায় দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে অনাবদী থাকছে প্রায় দু’হাজার একর তিন ফসলী জমি।
ঘটনাটি পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলায়।
ভুক্তভোগী চাষীরা বলছেন, ‘সংশ্লিষ্ট কর্তাদের দ্বারে দ্বারে ঘুরেও মিলছে না কোন প্রতিকার। নেয়া হয়নি প্রভাশালীদের বিরুদ্ধে কোন আইনি ব্যবস্থা।’
উপজেলার ধানখালী ইউপির পাঁচজুনিয়া গ্রামে বিস্তীর্ণ ফসলী মাঠের পানি নিস্কাশনের বিকল্প হিসেবে সরকারি রাস্তার ওপর ছিলো একটি মাত্র কালভার্ট। আলমগীর হাওলাদার ও মোক্তার হোসেন নামের দুই প্রভাবশালীর দখলে মাটির নিচে তাও বিলিন হয়ে গেছে বহু আগে। চলমান মৌসুমে দু’হাজার একর জমির বৃষ্টির পানি নিষ্কাশন না হওয়ায় সৃষ্টি হয়েছে স্থায়ী জলাবদ্ধতা। ফলে এবছরও পতিত হয়ে পরে আছে এসব তিন ফসলী জমি।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, কোমর সমান জলাবদ্ধতার কারনে আমন মৌসুমের এ সময়ে বীজ তৈরি ও রোপন করতে পারেননি ওই এলাকার কৃষকরা। কৃষকদের অভিযোগ প্রভাবশালী শহীদ হাওলাদার, খলীল মুন্সী, স্বপন হাওলাদার, জাহিদ মৃধা, জহিরুল মুন্সী, হাসান হাওলাদার একটি করে এবং আলমগীর হাওলাদার, ওহাব মৃধা, আফজাল হাওলাদার, আনছার উদ্দিন মোল্লা ও রিয়াজ মোল্লা দু’টি করে ঘের তৈরি করে পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা বন্ধ করে দিয়েছে।
কৃষক জাহাঙ্গীর আলম মৃধা জানান, ‘প্রায় দেড় একর জমির মালিক তিনি। জলাবদ্ধতার কারণে গত বর্ষা মৌসুমে নষ্ট হয়ে গেছে তার ক্ষেতের ধান।’
কৃষক হাবিবুর রহমান বলেন, ‘তার সাড়ে ৫ একর জমিতে চাষাবাদ করতে পারবেন কিনা তা নিয়ে রয়েছে সংশয়।’
কৃষক শাহাবুদ্দিন হাওলাদার বলেন, ‘তার চার একর জমির মৌসুমি ধান জলাবদ্ধতার কারণে সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গেছে।’
এ বিষয়ে অভিযুক্ত রিয়াজ মোল্লা বলেন, ‘২৫ বছর আগে থেকেই এই ঘের করা হয়েছে। গত বর্ষা মৌসুমে পাঁচজুনিয়া সরকারি রাস্তার ওপর পানি নিস্কাশনের জন্য চেয়ারম্যান পাইপ বসিয়ে দিয়েছিলেন। সেখানে আলমগীর হাওলাদার ও মোক্তার হোসেন মাটি কেটে ভরাট করে দিয়েছে। এ কারণে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে।’
কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহীদুল হক জানান, ‘বিষয়ে কৃষকদের অভিযোগ পেয়েছি। ওই ইউপি চেয়ারম্যানকে বলা হয়েছে, দ্রুত সময়ের মধ্যে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করতে। এছাড়া আমি নিজে গিয়ে ওই খালটি উদ্ধারে ব্যবস্থা গ্রহন করছি।’
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন