অনলাইন প্রতারণা রোধে কঠোর নজরদারির নির্দেশ রাষ্ট্রপতির

মহামারি করোনায় নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কেনাকাটার অন্যতম মাধ্যম হয়ে উঠেছে প্রযুক্তি নির্ভর ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান কিংবা ফেসবুক পেইজ। ক্রেতাদের বাড়তি আগ্রহের সুযোগে অনলাইনে এক ধরনের পণ্য প্রদর্শন করে নিম্নমানের বা অন্য পণ্য ডেলিভারি দেয়ার ঘটনা ঘটছে। অর্ডার নিয়ে টাকা পাওয়ার পর পণ্য ডেলিভারি না দিয়ে ফেসবুক পেইজ বা ওয়েবসাইট বন্ধ করে দিচ্ছে কিছু অসাধু প্রতিষ্ঠান। এতে প্রতারিত হয়ে অনলাইনে কেনাকাটায় আগ্রহ হারাচ্ছেন ভোক্তারা।

এ অবস্থায় বৃহস্পতিবার (০১ এপ্রিল) ‘ডিজিটাল ডিভাইস অ্যান্ড ইনোভেশন এক্সপো’র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে, করোনাকালে তথ্যপ্রযুক্তি ও ডিজিটাল সেবার প্রয়োজনীয়তার বিপরীতে সাইবার ক্রাইম ও অনলাইনে প্রতারণা বিষয়টি উল্লেখ করেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।

তিনি বলেন, করোনা মহামারি পরিস্থিতিতে তথ্যপ্রযুক্তি ও ডিজিটাল সেবার প্রয়োজন আমরা নতুন আঙ্গিকে উপলব্ধি করতে পেরেছি। বৈশ্বিক মহামারির প্রাদুর্ভাবে যখন স্বাভাবিক কার্যক্রম বন্ধ হবার উপক্রম তখন তথ্যপ্রযুক্তিই হয়ে ওঠে জরুরি গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রম চালিয়ে যাবার একমাত্র নির্ভরশীল মাধ্যম। দেশের শিক্ষা কার্যক্রম, বিচারিক কার্যক্রম, স্বাস্থ্যসেবা, ব্যাংকিং সেবা ইত্যাদি হয়ে পড়ে তথ্যপ্রযুক্তি নির্ভর। চলমান মহামারির সময়ে তথ্যপ্রযুক্তির স্থানীয় বাজার অকল্পনীয় প্রসার লাভ করেছে। এ মহামারিকালে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করেই দেশের অর্থনৈতিক কার্যক্রম সচল রাখা সম্ভব হয়েছে।

রাষ্ট্রপতি আরও বলেন, করোনার কারণে অনেক ক্রেতাই ঘরে বসে তাদের পছন্দের প্রয়োজনীয় পণ্যটি পেতে চায়। ফলে অনলাইনে কেনাকাটা বহুগুণে বেড়ে গেছে। ই-কমার্স এখন একটি গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক খাত। ই-কমার্সের প্রতি ক্রেতাদের আগ্রহ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ আগ্রহকে ধরে রাখতে হলে ক্রেতাদের আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করতে হবে। কিন্তু কিছুসংখ্যক উদ্যোক্তা ই-কমার্সের নামে ক্রেতাদের সাথে প্রতারণা করছে। মুষ্ঠিমেয় কিছু অসাধু লোকের প্রতারণার জন্য যাতে ই-কমার্সের মতো একটি বিপুল সম্ভাবনাময় খাতের প্রসার কোনোভাবেই থেমে না যায় তা কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ ও মনিটরিং করতে হবে।

তিনি বলেন, তথ্যপ্রযুক্তির প্রসারের ফলে সাইবার ক্রাইমের মাত্রাও বেড়ে যাচ্ছে। অনেকসময় বিভিন্ন ইস্যুতে সামাজিক অস্থিরতাও দেখা দেয়। তাই সাইবার ক্রাইম নিয়ন্ত্রণে উন্নত প্রযুক্তি উদ্ভাবনের পাশাপাশি এ ক্ষেত্রে দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তুলতে হবে।

মহামারির কারণে অনলাইন ও মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে আয়োজিত তিনদিনের এই প্রদর্শনীতে অংশ নিয়েছে ৯৪টি প্রতিষ্ঠান। ‘ডিডিআই এক্সপো’ নামের মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে প্রদর্শনীটি ভার্চুয়ালি ঘুরে দেখতে পারবেন যে কেউ।

তরুণদের স্বপ্নের উদ্ভাবন বাস্তবে রূপ দিতে আইসিটি বিভাগ বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে উল্লেখ করে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, এর ফলে অচিরেই বাংলাদেশ বিশ্বে উদ্ভাবনী জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠা পাবে।

তিনি বলেন, ইতোমধ্যেই এটুআই এর ইনোভেশন ল্যাবে নেবুলাইজার, অ্যাম্বুলেন্স, রেফ্রিজারেটরের নতুন নতুন মডেলসহ বেশ কিছু বাণিজ্যিক সম্ভাবনাময় পণ্য বাজারে এনেছে। পলক বলেন, আগামী দিনে বাংলাদেশে হার্ডওয়্যার-সফটওয়্যার খাতে একটি ইনোভেশন ইকো-সিস্টেম গড়ে তুলতে ডিজিটাল ডিভাইস অ্যান্ড ইনোভেশন এক্সপো সেতুবন্ধন রচনা করবে।

প্রদর্শনীর পাশাপাশি তথ্যপ্রযুক্তিখাত সংশ্লিষ্টদের নিয়ে ভার্চুয়ালি বিভিন্ন সেমিনার আয়োজনও করবে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগ।
তথ্যসূত্র: সময় সংবাদ