অপ্রকাশিত সাক্ষাৎকারে যা বলেছিলেন খাশোগি

কয়েক মাস আগে যুক্তরাষ্ট্রে ওয়াশিংটন পোস্টের কার্যালয়ে সংবাদপত্রটির বৈশ্বিক মতামত বিষয়ক সম্পাদক (গ্লোবাল ওপেনিয়ন এডিটর) কারেন আতিয়াহর সঙ্গে একটি ধারণকৃত আলোচনায় অংশ নেন সৌদি সাংবাদিক জামাল খাশোগি।

তিনজনের সেই আলোচনায় আরও ছিলেন ওই বিভাগের ইরান বিষয়ক মতামত লেখক ইরানি সাংবাদিক জেসন রেজাইয়ান যাকে ইরানের কারাগারে ৫৪৪ দিন বন্দী থাকতে হয়েছিল।

শনিবার ওই আলোচনায় জামাল খাসোগির সাক্ষাৎকারটি প্রকাশ করেছে ওয়াশিংটন পোস্ট।

আলোচনায় অংশ নিয়ে খাশোগি বলেন, সৌদি আরব দুই কোটি জনসংখ্যার দেশ। এর মধ্যে দুই-তৃতীয়াংশ তরুণ, ৩০ বছরের কম বয়সী তারা। মোহাম্মদ বিন সালমান সব বিষয়ই তুলে আনছেন। তবে সৌদি আরব স্বাভাবিকের চেয়ে দ্রুতগতির ওপর রয়েছে।

তিনি বলেন, সৌদি আরব হচ্ছে সোর্ড অব রেলিজিয়ন। এটা কখনো সেকুলার ছিল না। এটি সবসময় শরীয়াহ মোতাবেক চলে। এটি পৃথিবীর শেষ দেশ যেটি শরীয়াহ মোতাবেক চলে। আমরা এটা নিয়ে দম্ভ করি।

খাশোগির এই সাক্ষাৎকারের বিষয়টি তুলে ধরে সাংবাদিক জেসন রেজাইয়ান বলেছেন, তিনি আর জামাল খাসোগি বিপরীত বিষয়ে লিখলেও তা সমান সংকটপূর্ণ। জামাল সৌদি নিয়ে লিখতেন আর তিনি ইরান নিয়ে।

তার ভাষায়, সৌদি আরব খাশোগির আর ইরান তার বাড়ি হলেও দেশ দুটির বর্তমান শাসকেরা এটা স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে, দেশে ফেরার জন্য তাদের স্বাগত জানানো হবে না।

যে বিষয়টি এই সময়ে তাকে কষ্ট দেয়, দুজনেই দেশের প্রশংসা করতেন, দেশকে ভালোবাসতেন। তারা নিজেদের সমাজের আরও ভালো চেয়েছিলেন, কিন্তু সরকারগুলোর নির্যাতন, অত্যাচার ও ভুলগুলো পাশ কাটাতে চাননি।

ওই সাক্ষাৎকারে খাসোগি আরও বলেছিলেন, এমনকি কিছু মানুষ যারা আমার লেখার সঙ্গে অমত প্রকাশ করেন না, তারাও আমাকে বলবেন, কিন্তু এটা বলার জন্য এখন সঠিক সময় নয়। আমরা গণতন্ত্র থেকে অনেক দূরে। আমেরিকা, ফিনল্যান্ড ও ডেনমার্কের গণতন্ত্রে, নেতারা নত হন। এটা একজন নেতাকে সড়কে চলা একজন ক্ষুদ্র মানুষের প্রতিও দায়বদ্ধ করে। আমাদের নেতারা? না।

খাশোগী বলেন, আমাদের নেতারা নিজেদের এমন ভাবেন যে, তারাই সব জানেন এবং আমি ও জেসনের মতো মানুষ শুধু তাদের সংস্কার প্রক্রিয়ায় প্রতিবন্ধকতা তৈরি করি।

প্রসঙ্গত ২ অক্টোবর তুরস্কের ইস্তানবুলে সৌদি কনস্যুলেট ভবনে ব্যক্তিগত কাগজপত্র আনার প্রয়োজনে ঢোকার পর থেকে নিখোঁজ ছিলেন সৌদির খ্যাতনামা সাংবাদিক খাশোগি। শুরু থেকে তুরস্ক দাবি করেছিল, খাসোগিকে কনস্যুলেট ভবনের ভেতর তাকে হত্যা করা হয়েছে।

তবে ঘটনাটি অস্বীকার করলেও ১৭ দিন পর গতকাল শনিবার সৌদি আরব স্বীকার করেছে , কনস্যুলেট ভবনের ভেতরেই সাংবাদিক জামাল খাশোগি নিহত হয়েছেন।