অস্ট্রেলিয়ার সমুদ্রে রহস্যময় ক্ষুধার্ত পোকা

অস্ট্রেলিয়ার এক কিশোর সম্প্রতি মেলবোর্নের ব্রাইটন বিচের পানিতে পা ধুতে গিয়েছিল। কিছুক্ষণ পর বাড়ি ফিরে আঁতকে ওঠে সে। সাম কানিজা নামের ১৬ বছরের ওই কিশোর পায়ের দিকে তাকিয়ে দেখে, সেখান থেকে অবিরাম রক্ত ঝরছে।

গোড়ালি থেকে পায়ের পাতা পর্যন্ত রক্ত এমনভাবে বের হচ্ছিল, যেন সেখানে কোনো চামড়া নেই। কিশোরের বাবা জেরড কেনিজা’ও বেশ উদ্বিগ্ন হয়ে ওঠেন। সঙ্গে সঙ্গে তাকে নিয়ে ছোটেন হাসপাতালের দিকে।

পরে সংবাদমাধ্যমকে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে বলেন, ছেলের পায়ের দিকে তাকিয়ে তার মনে হচ্ছিল যেন স্যাম কোনো যুদ্ধক্ষেত্র থেকে আহত অবস্থায় বাড়ি ফিরেছে। বাড়ির সদস্যরা প্রথমে স্যামের পায়ের রক্ত বন্ধ করতে টিস্যু, তোয়ালে ইত্যাদি দিয়ে ক্ষত চেপে ধরছিলেন। কিন্তু তাতে কোনোই কাজ হচ্ছিল না। রক্ত ক্রমাগত বেরই হচ্ছিল।

স্যাম জানায়, শনিবার সন্ধ্যায় ফুটবল খেলে পা ধোয়ার জন্য বাড়ির কাছেই থাকা সমুদ্র সৈকতে যায়। সেসময় সাগরের পানি কিছুটা ঠাণ্ডা মনে হলেও তা গ্রাহ্য করেনি। কিন্তু বাড়ি ফিরে দেখে দু’পা দিয়েই সমানে রক্ত ঝরছে।

কোনোভাবেই রক্ত বন্ধ করতে না পেরে বাবা জেরড ছেলেকে নিয়ে স্থানীয় হাসপাতালে ছোটেন। কিন্তু পরপর দুটি হাসপাতালে গেলেও চিকিৎসকেরা রক্ত বন্ধ করতে ব্যর্থ হয়। এমন অবস্থায় জেরড কেনিজা নিজেই বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন বলে ঠিক করেন।

ছেলের কাছে সব শুনে ধারণা করেন, সমুদ্রের পানিতেই কোনো গণ্ডগোল থাকতে পারে। তাই ছেলে সৈকতের যেখানে পা ধুয়েছিল, সেখানে যান। সংবাদমাধ্যমকে তিনি জানান, ‘সেখানকার পানিতে অসংখ্য ক্ষুদ্র পোকা দেখতে পাই। সেখান থেকে কিছু পোকা পানি সমেত সংগ্রহ করে আবার পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে নিয়ে আসি।’

তিনি যেটুকু পানি সংগ্রহ করেছিলেন তাতেই ছিল প্রায় কয়েক হাজার পোকা। বিশেষজ্ঞরা পরে পরীক্ষা করে জানান, এগুলো মাংসাশী পোকা। সমুদ্রের পানিতে এদের পাওয়া গেলেও মানুষকে আক্রমণ করার নজির খুবই কম। সমুদ্র বিষয়ক জীববিজ্ঞানী ড. জেনেফোর স্মিথ জানান, পোকাগুলো সম্ভবত ক্ষুধার্থ ছিল। সেই সময়ে স্যাম পানিতে নামায় সম্ভবত পোকাগুলো বিরক্ত হয়ে কিংবা প্রচণ্ড ক্ষুধার কারণে আক্রমণ করে বসে।

তবে সামুদ্রিক পোকার আক্রমণের এমন নজির প্রায় নেই বলেই জীব বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন। ঘটনাটি বিচ্ছিন্ন হলেও উদ্বেগজনক নয় বলেই তাদের মত। এখন অবস্থায় সমস্যা ধরা পড়ায় সমাধানও তাই সহজে মিলবে বলে আশা করছেন জেরড কেনিজা।