ঈদযাত্রায় ২২ ও ২৩ জুনের টিকিটের চাহিদা বেশি

প্রতিবারই ঈদে ঘরে ফেরা মানুষের বাস-ট্রেনের টিকিট সংগ্রহ করা একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়। টিকিট পেতে দৌড়-ঝাঁপ শুরু হয়। ভোর থেকে লাইনে দাঁড়ান টিকিটপ্রত্যাশীরা। অগ্রিম টিকিট বিক্রির ঘোষণা দেওয়ার পর এবারও এর ব্যতিক্রম হবে না বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। ইতিমধ্যে অনেকে বাসের অগ্রিম টিকিটের জন্য অনুরোধ করেছেন। এর মধ্যে ২২ ও ২৩ জুনের টিকিটের চাহিদা সবচেয়ে বেশি।

এদিকে ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রির সময় নির্ধারণের জন্য আগামী বৃহস্পতিবার সভা ডাকা হয়েছে বলে জানিয়েছেন রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক। অন্যদিকে বাসের টিকিট বিক্রি ১২ জুন থেকে শুরু হতে পারে বলে জানিয়েছে বাস-মালিক সমিতি।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, ২৭ জুন ঈদুল ফিতরের সম্ভাব্য দিন ধরে ২২ ও ২৩ জুন বাড়ি ফেরার জন্য সবচেয়ে ভালো সময় বলে ধরা হচ্ছে। কারণ ২৭ জুন হচ্ছে মঙ্গলবার। ওই দিন ঈদ হলে আগের দিন সোমবার থেকে ঈদের ছুটি শুরু হবে। এর আগে ২২ জুন বৃহস্পতিবার। পরদিন ২৩ ও ২৪ জুন শুক্র ও শনিবার নিয়মিত ছুটি থাকে।

বাস ও ট্রেন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ২৭ জুন ঈদ হলে সবচেয়ে বেশি চাপ থাকবে ২২ ও ২৩ তারিখের টিকিটের। ২২ জুন বৃহস্পতিবার। ওই দিন সরকারি চাকরিজীবীসহ অনেক বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবীরা শেষ কর্মদিবস ধরে অফিস শেষে ঢাকা ছাড়বেন। যাঁরা এই দিনের টিকিট পাবেন না, তাঁরা পরদিন অর্থাৎ শুক্রবার ঢাকা ছাড়বেন। এ ক্ষেত্রে কম চাপ আছে ২৪ থেকে ২৬ জুনের টিকিটের।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে এস আর ট্রাভেলসের সহকারী মহাব্যবস্থাপক প্লাবন রহমান বলেন, ‘আমাদের কাছে নিয়মিত যাত্রীরা ২২ ও ২৩ জুনের টিকিটের জন্য আবেদন করছেন। এই দুদিনেই সবচেয়ে বেশি লোক ঢাকা ছাড়বে বলে মনে হচ্ছে।’ তবে টিকিট নির্ধারিত দিনে নিয়ম অনুযায়ী দেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।

বাসের অগ্রিম টিকিট কবে ছাড়া হবে—জানতে চাইলে বাস মালিক সমিতির একাধিক সদস্য বলেন, এ বিষয়ে তাঁদের মধ্যে আলোচনা চলেছ। সবার মতামত নিয়ে তারিখ ঠিক করা হবে।

বাস-মালিক সমিতির সহকারী সাধারণ সম্পাদক খাজা গোলাম মুর্শিদ বলেন, ‘দিন নির্ধারণ নিয়ে আলোচনা চলছে। ১২ জুন থেকে অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হতে পারে। তবে এটা এখনো চূড়ান্ত হয়নি।’

রেলের একাধিক কর্মকর্তা জানান, ২২ ও ২৩ জুন যাত্রীদের চাপ বেশি থাকবে। বাসে যানজট এড়াতে এই দুদিন রেলের ওপর চাপ থাকবে সবচেয়ে বেশি।

এদিকে ট্রেনের টিকিট ছাড়ার বিষয়ে জানতে চাইলে রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক বলেন, ৮ জুন দুপুরে রেল ভবনে সভা ডাকা হয়েছে। সেখানেই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে। এবার বাড়তি কোনো সুবিধা থাকছে কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘৮ জুন সভায় আসেন তাহলে সব জানতে পারবেন।’

ঈদে বাড়ি ফেরার ক্ষেত্রে যাত্রীদের অনেকে ২২ জুনকে শেষ কর্মদিবস ধরে টিকিট কিনতে আগ্রহী। যত আগে যেতে পারবেন, তত বেশি দিন পরিবারের লোকজনের সঙ্গে সময় কাটাতে পারবেন এমন ভাবনা তাঁদের। তবে কেউ কেউ ভিড় এড়াতে একটু পরেই যেতে চান।
আজিমপুরের বাসিন্দা সরকারি চাকুরে নাজমুল ইসলাম বলেন, এবারের ঈদে তিনি গ্রামের বাড়ি গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে যাবেন। ২২ জুন শেষ কর্মদিবসে তিনি গ্রামের বাড়ির উদ্দেশে রওনা দিতে চান। তবে সেটা টিকিট প্রাপ্তির ওপর নির্ভর করছে। তিনি ওই দিনের বাসের টিকিট কাটবেন।

বেসরকারি চাকরিজীবী এমদাদুল হকের আশঙ্কা ২২ জুন যানজট বেশি থাকবে। এর পরদিনও ভিড় থাকতে পারে বলে মনে করছেন তিনি। বললেন, ভিড় এড়াতে তিনি ২৪ বা ২৫ জুনের টিকিট কাটবেন।

অনলাইনে বাসের টিকিট: সহজ ডটকম নামের একটি অনলাইন সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান অনলাইনে নির্দিষ্ট কিছু বাসের টিকিট বিক্রি করছে। প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, তারা ২৮টিরও বেশি বাস কোম্পানির টিকিট অনলাইনে বিক্রি করে। কলসেন্টারে ফোন করে বা অনলাইনে কেউ চাহিদা দিতে পারেন। এই সেবা পেতে ১৬৩৭৪ নম্বরে কল করতে হবে।