ঈদ করতে বাড়ি এসো না : সন্তানদের প্রতি কাশ্মীরি মায়েদের আকুতি

চলমান সংকটের মধ্যে কাশ্মীরের বাইরে অবস্থান করা সন্তানদের আসন্ন ঈদে বাড়ি না আসতে আকুতি জানিয়েছেন কাশ্মীরি মায়েরা।

বৃহস্পতিবার শ্রীনগর ডিসির দেয়া এক মিনিট কল করার সুযোগে সন্তানদের এ আকুতি জানান তারা।

কাশ্মীরের বাইরে অবস্থান করা সন্তানদের সঙ্গে মায়েদের কথা বলার জন্য বৃহস্পতিবার দুটি টেলিফোন লাইন খুলে দেন শ্রীনগরের ডিসি শাহেদ চৌধুরী।

এর আগে টেলিভিশন, খবরের কাগজে বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে টেলিফোন লাইনের কথা বলার বিষয়ে স্থানীয়দের জানিয়েছে ডিসি অফিস কর্তৃপক্ষ।

শ্রীনগরের ডিসি শাহেদ চৌধুরী বলেন, ‘আমরা বুঝতে পারছি পরিবারগুলো তাদের স্বজনদের সাথে কথা বলতে উদগ্রীব। এই কারণেই আমরা টেলিফোন সার্ভিস চালু করেছি। এখানে যে কেউ আসতে ফোন করতে আসতে পারেন।’

কার সঙ্গে এবং কী কথা বলা হবে, তা জানানোর পরই কেবল স্থানীয়দেরকে ফোনে কথা বলার সুযোগ দেয়া হচ্ছে। এক মিনিটের বেশি সময় যাতে কেউ কথা না বলতে পারে, তা সীমিত রাখার জন্য তদারকি করেছেন টেলিফোন অপারেটরা।

শ্রীনগরের বসবাসরত ফাহমিদা বলেন, ‘‘আমার মেয়ে থাকে চণ্ডীগড়, এই সপ্তাহে বাড়ি আসার কথা ছিলো। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ায় মেয়েটা টিকিট করতে পারেনি। তার আসার অপেক্ষায় আমরা সবসময় পথ চেয়ে আছি, কখন ও চলে আসবে।এই কারফিউ এর মধ্যে ও কিভাবে এয়ারপোর্ট থেকে বাড়ি আসবে তা নিয়ে আমরা সবাই চিন্তিত ছিলাম।’

‘ওই এক মিনিট যখন কথা বলতে পারলাম তখন জানতে পারলাম মেয়েটা আগামী কাল বাড়ি আসছে। মেয়েটা এয়ারপোর্ট থেকে পায়ে হেঁটে বাড়ি আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।এখন আমরা চেষ্টা করছি গাড়ি নিয়ে কিভাবে তাকে এয়ারপোর্ট থেকে নিয়ে আসা যায়।’

আরেকজন মা বলেন, ‘আমার সন্তান থাকে বেঙ্গলুরু। সন্তানকে ফোন করার জন্য আমার স্বামীকে কয়েকটি চেক পয়েন্ট পার হয়ে যেতে হয়। আমি যখন কথা বলছিলাম, সন্তান তখন কাঁদছিল। আমি ওকে দুশ্চিন্তা করতে নিষেধ করেছি। আমি ছেলেকে এই পরিস্থিতির মধ্যে ঈদে বাড়ি আসতে নিষেধ করেছি ‘

তবে অনেকেই বেধে দেয়া সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টার মধ্যে ডিসি অফিসে পৌঁছাতে না পারায় তাদের স্বজনদের সাথে কথা বলতে পারেনি।

ভারতের সংবিধানে ৩৭০ ধারায় জম্মু ও কাশ্মীরকে দেয়া বিশেষ রাজ্যর অধিকার বাতিলের পাশাপাশি যোগাযোগের সব ধরনের মাধ্যম বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে সেখানে। এর ফলে কাশ্মীরের বাইরে অবস্থান করা আত্মীয় স্বজনদের সঙ্গে সব রকমের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় পরিবারগুলোর।