‘একাত্তরের জামায়াত আর বর্তমান জামায়াত এক নয়’

১৯৭১ সালের জামায়াত আর বর্তমান সময়ের জামায়াত এক নয় বলে মন্তব্য করেছেন এলডিপি সভাপতি কর্নেল (অবসরপ্রাপ্ত) অলি আহমদ। বৃহস্পতিবার বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলন থেকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী কারাবন্দী বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তিসহ ১৮ দফা দাবিতে ‘জাতীয় মুক্তি মঞ্চ’ নামের নতুন একটি রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম গঠনের ঘোষণাও দেন অলি আহমদ। সংবাদ সম্মেলনে জামায়াতের কোনো প্রতিনিধি ছিলেন না।

জাতীয় মুক্তি মঞ্চে জামায়াতকে সঙ্গে নেওয়া হবে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে অলি বলেন, ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতায় বিশ্বাসী সব দলকে আমরা সঙ্গে নেব। জাতিকে বিভক্ত করার চেষ্টা করল কারা, অন্যের ঘাড়ের ওপর বন্দুক রেখে কথা বলা ঠিক না। সব সময় আমি অন্যকে দোষ দিয়ে আগাব এটা ঠিক না। জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে। ১৯৭১ সালের জামায়াত এবং ২০১৯ সালের জামায়াত এক নয়। দেশকে তারা অনেক ভালোবাসে, তাদের মধ্যে অনেক সংশোধনী এসেছে।

অলি আহমেদের দাবি, জামায়াত নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিচ্ছে, তারা দেশপ্রেমিক শক্তি। যারা দেশকে ভালবাসে, দেশকে মুক্ত করতে চায়, দেশবাসীকে মুক্ত করতে চায়, যারাই আমাদের সঙ্গে আসতে চাইবে তাদেরকে আমরা সঙ্গে নেব। তবে দালাল-বেঈমানদের না।

এ সময় এক সাংবাদিক ‘দালাল-বেঈমানদের’ পরিচয় সম্পর্কে জানতে চাইলে অলি বলেন, ‘কারা যে দালাল-বেঈমান এটা কারও অজানা না। আমাদের অনেকে দালালি করেছে বলে আজকে জাতির এই অবস্থা। আমাদের সঙ্গের সিনিয়র লোক তাদেরকে চেনেন, তারা জানেন গত ১০ থেকে ২০ বছর ধরে কীভাবে তারা দালালি করছে।’

‘জাতীয় মুক্তি মঞ্চ’ নামে নবগঠিত এই প্ল্যাটফর্মে কল্যাণ পার্টির সঙ্গে রয়েছে ২০ দলীয় জোট শরিক জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি-জাগপা, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিশ ও ন্যাশনাল মুভমেন্ট।

তবে নতুন প্ল্যাটফর্ম নিয়ে এগিয়ে চললেও বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটেও থাকছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।

বিএনপির এক সময়ের নীতি-নির্ধারকদের একজন অলি দেড় দশক আগে এলডিপি গঠন করে রাজনীতির মাঠে সক্রিয়। প্রথমে আওয়ামী লীগের জোটে তারা গেলেও পরে পথ পরিবর্তন করে বিএনপির জোটে যোগ দিয়ে এখনও রয়েছে।

গত ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে বিএনপি ২০ দলের বাইরে কামাল হোসেনের নেতৃত্বে আলাদা জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠন করে। ২০ দল ও ঐক্যফ্রন্ট বিএনপির সমন্বয়ের মধ্যে ওই নির্বাচনে অংশ নেয়।

ওই ভোটের ফল প্রত্যাখ্যানের পর সংসদে যোগ না দেওয়ার ঘোষণা ছিল ঐক্যফ্রন্ট ও ২০ দলের। কিন্তু বিএনপি ও গণফোরামের বিজয়ীদের শপথ গ্রহণ করলে তাতে ক্ষুব্ধ হন অলিসহ অন্যরা।

তা নিয়ে মন কষাকষি চলার মধ্যেই বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে এসে অলি ‘জাতীয় মুক্তিমঞ্চ’ গঠনের ঘোষণা দেন।