এক-এগারোর কুশীলবরা ও বিএনপি একজোট হয়ে ষড়যন্ত্র করছে- তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘এক-এগারোর কুশীলবরা এবং বিএনপি একজোট হয়ে ষড়যন্ত্রের পাঁয়তারা করছে। কিন্তু এতে কোনো লাভ হবে না, বারবার একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হয় না। বাংলাদেশে সেটি কখনো হবে না।

আজ রাজধানীর তোপখানা রোডে জাতীয় প্রেসক্লাবে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের দশম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় মন্ত্রী এসব কথা বলেন। জিল্লুর রহমান পরিষদ আয়োজিত এই সভায় সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ এবং প্রয়াত জিল্লুর রহমান তনয়া তানিয়া রহমান বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন।

সম্প্রচার মন্ত্রী হাছান মাহমুদ তাঁর বক্তৃতায় প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান এবং ২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারি রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের সময়ের কথা উল্লেখ করে বলেন, এক-এগারোর পর দলকে ঐক্যবদ্ধ রাখার ক্ষেত্রে প্রয়াত জিল্লুর রহমান অসাধারণ ভূমিকা রেখেছিলেন।

তিনি আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হয়েছিলেন বলেই অনেক চাপ, রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনাকে মুক্ত করার আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছেন, সর্বোপরি দলকে ঐক্যবদ্ধ রেখেছেন। সংকটকালে ধৈর্যশীল ও অবিচল থেকে অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছার শিক্ষা জিল্লুর রহমানের কাছ থেকে আমরা পেয়েছি। দেশের ইতিহাসে, দেশের রাজনীতির ইতিহাসে একজন ভালো মানুষ এবং অজাতশত্রু রাজনীতিবিদ হিসেবে তিনি যুগ যুগ ধরে বেঁচে থাকবেন।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, এক-এগারোর কুশীলবরা আবার দেশে-বিদেশে সক্রিয় হয়েছে। তারা আবার বিশেষ ধরনের সরকারের স্বপ্ন দেখছে। বিএনপিও তাদের সাথে যোগ দিয়েছে। কারণ বিএনপি বুঝতে পেরেছে, নির্বাচনে তাদের কোনো আশা নাই। ২০০৮ সালের নির্বাচনে সর্বশক্তি নিয়ে তারা সিট পেয়েছিল ২৯টা। ২০১৪ সালে নির্বাচন থেকে পালিয়ে গিয়েছিল, ২০১৮ সালের নির্বাচনে ডান-বাম, অতিডান-অতিবাম-তালেবান সবাইকে নিয়ে, ড. কামাল হোসেনের মতো মানুষকে হায়ার করেও মহিলা আসনসহ সিট পেয়েছিল মাত্র ৭টি। আর গত ১৪ বছরে জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে যে উন্নয়ন অগ্রগতি হয়েছে এতে জনগণ তাকে যে আবার নির্বাচিত করবে এবং বিএনপির জ্বালাও- পোড়াও, মানুষ পোড়ানোর অপরাজনীতির কারণে মানুষ যে তাদের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে, সেটিও তারা অনুধাবন করতে পেরেছে।’

হাছান মাহমুদ বলেন, ‘এ সব কারণে এক-এগারোর কুশীলবরা, বিএনপি আর বিশেষ পুরস্কারপ্রাপ্ত ব্যক্তিসহ সবাই এক জোট হয়ে দেশে একটি গণ্ডগোল লাগানোর জন্য আন্তর্জাতিকভাবে সক্রিয় হয়েছে, কিন্তু সেটি বাংলাদেশের মানুষ আর কখনো হতে দেবে না। আগামী নির্বাচন যথাসময়ে এবং সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন কমিশনের অধীনে অনুষ্ঠিত হবে। সমস্ত সংসদীয় গণতন্ত্রের দেশের মতো আমাদের দেশেও প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনকালীন প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করবেন, তাঁর সরকার নির্বাচনকালীন সরকারের দায়িত্ব পালন করবে।

সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ তাঁর বক্তৃতায় প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের স্মৃতিচারণ করেন এবং তার বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করেন। তানিয়া রহমান তাঁর প্রয়াত পিতার আত্মার শান্তির জন্য সকলকে প্রার্থনার আবেদন জানান। জিল্লুর রহমান পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মোঃ আক্তারুজ্জামান খোকার সভাপতিত্বে এবং রোকন উদ্দীন পাঠানের সঞ্চালনায় আওয়ামী লীগ নেতা এম এ করিম, এডভোকেট এ বি এম বায়েজিদ, মুক্তিযোদ্ধা হারুন-অর-রশিদ বীরপ্রতীক, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সহসভাপতি মানিক লাল ঘোষ সভায় বক্তব্য দেন।