এবার উচ্চ আদালতে ক্ষমা চাইলেন সেই বিচারক

উচ্চ আদালতের স্থগিতাদেশ থাকার পরেও ধর্ষণ মামলার আসামিকে জামিন দেওয়ায় ক্ষমা চেয়েছেন বিচারকাজ থেকে প্রত্যাহার হওয়া ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭-এর বিচারক মোছা. কামরুন্নাহার।

সোমবার (২২ নভেম্বর) আপিল বিভাগে ক্ষমা প্রার্থনা করে আবেদন জানান তিনি।

সকালে এ মামলার আসামিকে জামিন দেওয়ার বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে আপিল বিভাগে হাজির হন এ বিচারক।

এর আগে গত ১১ নভেম্বর (বৃহস্পতিবার) রাজধানী বনানীর রেইনট্রি হোটেলে আলোচিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ছাত্রী ধর্ষণের ঘটনায় আপন জুয়েলার্সের কর্ণধার দিলদার আহমেদের ছেলে সাফাত আহমেদসহ পাঁচজনকে খালাস দেন তিনি। রোববার (১৪ নভেম্বর) ৭২ ঘণ্টা পর ধর্ষণের মামলা না নেওয়ার পর্যবেক্ষণ দেওয়া বিচারক কামরুন্নাহারের বিচারিক ক্ষমতা কেড়ে নেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন। একই সঙ্গে রোববার সাড়ে ৯টা থেকে ওই বিচারককে এজলাসে না বসার নির্দেশ দেওয়া হয়। ফলে রেইনট্রি হোটেলে ধর্ষণের মামলায় রায়ের পর বিচারিক ক্ষমতা হারান বিচারক কামরুন্নাহার। এদিকে তাকে আদালত থেকে প্রত্যাহার করে আইন মন্ত্রণালয়ে সংযুক্ত করতে চিঠি দেওয়া হয়। সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ বিচারকদের সঙ্গে আলোচনা করে প্রধান বিচারপতি এ নির্দেশ দিন।

তবে রায়ের সময় মৌখিকভাবে বললেও রেইনট্রি ধর্ষণ মামলার লিখিত রায়ে ৭২ ঘণ্টা পর ধর্ষণ মামলা করা যাবে না এমন কোনো পর্যবেক্ষণ দেননি বিচারক কামরুন্নাহার। লিখিত রায়ে স্বাক্ষর করার পর আইন মন্ত্রণালয় ও সুপ্রিম কোর্টে পাঠানো হয়েছে বলে জানা গেছে। রায়ের একটি কপি হাতে আছে ‘সময় সংবাদ’ এর কাছে।

প্রসঙ্গত ২০২০ সালের ১২ মার্চের এক মামলার ব্যাখ্যা দিতে কামরুন্নাহারকে আদালতে তলব করা হয়। ওই সময় তাকে ২ এপ্রিল আপিল বিভাগে হাজির হয়ে আসামিকে জামিন দেওয়ার কারণ ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়।

মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, রাজধানীর হাতিরঝিল থানায় এক নারীকে ধর্ষণের অভিযোগে বেসরকারি টেলিভিশন এটিএন বাংলার সাবেক প্রোগ্রাম প্রডিউসার আসলাম শিকদারের বিরুদ্ধে ২০১৮ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর মামলা করা হয়। ওইদিনই তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরদিন তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।

গত ২০১৯ সালের ১৮ জুন হাইকোর্ট তাকে জামিন দেন। পরে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের প্রেক্ষিতে ২৫ জুন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত আসলামের জামিন স্থগিত করেন। চেম্বার আদালতে জামিন স্থগিত থাকার পরও গত বছরের ২ মার্চ আসামি আসলামকে জামিন দেন ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭-এর বিচারক কামরুন্নাহার। এরপর ১২ মার্চ কামরুন্নাহারকে তলব করেন আপিল বিভাগ।