এবার গরুদের পরিচয়পত্র দেবে ভারত

বাংলাদেশে গরু পাচার ঠেকাতে দেশের নাগরিকদের জাতীয় পরিচয়পত্র’র (আধার কার্ড) মতো গরুদেরও স্বতন্ত্র পরিচয় নম্বর দেয়ার প্রস্তাব করেছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার৷ গরু হত্যা রোধেই এ উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।

কেন্দ্রীয় সরকারের মুখপাত্র সুপ্রিমকোর্টকে বলেছেন, লাখ-কোটি গরুর গায়ে নম্বরপত্রসহ প্লাস্টিক ট্যাগ দেয়া হবে। জাতীয় ডাটাবেজে সব তথ্য সংরক্ষিত থাকবে৷ এর ফলে সীমান্ত দিয়ে গরু পাচার রোধ সম্ভব হবে বলে মনে করা হচ্ছে। অখিল ভারত কৃষি গো-সেবা সংঘ`র আবেদনে শুনানির সময় কেন্দ্রীয় সরকার এ প্রস্তাব দেয়৷

হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠ ভারতে গরুদের ‘পবিত্র` পশু হিসেবে মানা হয় এবং কয়েকটি রাজ্যে গো-হত্যা শাস্তিযোগ্য অপরাধ৷ ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা সংবাদ সংস্থা এএফপিকে জানিয়েছেন, প্রত্যেক গরুকে আলাদা নম্বর দেয়া হবে পরিচয়পত্রের মতো, সেখানে বয়স, জাত, লিঙ্গ, উচ্চতা, রঙ, শিংয়ের ধরণ, বিশেষ চিহ্নসহ সব তথ্য সংযুক্ত থাকবে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের হিসেব অনুযায়ী, বছরে নেপাল ও বাংলাদেশ সীমান্ত দিয়ে পাচার হওয়ার সময় ১ লাখ ৭৫ হাজার গরু আটক করা হয়। তবে তাদের ধারণা, বছরে এই দুই সীমান্ত দিয়ে ২০ লাখ গরু পাচার হয়।

২০১৪ সালে ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) ক্ষমতায় আসার পর থেকে মহাসড়কগুলোতে গবাদি পশু বহনকারী ট্রাকগুলোয় বিশেষ নজরদারি চলছে। এই নজরদারি চালায় তথাকথিত ‘গো-রক্ষা স্কোয়াড`। এ স্কোয়াডের সদস্যরা চলতি মাসে রাজস্থানের মহাসড়কে এক মুসলিমকে পিটিয়ে হত্যা করে। তাদের অভিযোগ ঐ ব্যক্তি গোপনে জবাই করার জন্য গরু নিয়ে যাচ্ছিল। বাস্তবে ঐ ব্যক্তি গরুর দুধ বিক্রেতা। ঐ ঘটনার পর গত সপ্তাহে রাজধানীতে মহিষের একটি ট্রাক আটকিয়ে ঐ ট্রাকে থাকা তিনজনকে বেদম পেটানো হয়।

গত দুই বছরে গো-মাংস ভক্ষণ, গরু পাচার-এ ধরনের সন্দেহের বশে সারা ভারতে ১০ জন মুসলমান ব্যক্তিকে হত্যা করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। বেশিরভাগ ভারতীয় রাজ্যে গরু জবাই নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কেউ গরু খেলে বা জবাই করলে বড় ধরনের অর্থদণ্ড ও কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে।

উল্লেখ্য, ‘আধার কার্ড` হচ্ছে ১২ ডিজিটের ‘অদ্বিতীয়` নাম্বার যার মধ্যে নাগরিকের বায়োমেট্রিক ও জনমিতিক তথ্য লিপিবদ্ধ থাকে। অনেকটা বাংলাদেশের জাতীয় পরিচয়পত্রের মতো। অখিল ভারত গো-সেবা সংঘ সুপ্রিম কোর্টে দায়ের করা এক পিটিশনে জানিয়েছে, বাংলাদেশ সীমান্ত দিয়ে ব্যাপকভাবে গরু পাচার হচ্ছে, যার ফলে ভারতে গরুর সংখ্যা কমে যাচ্ছে।

সূত্র: ডয়চে ভেলে।