ওয়াশিং মেশিনের ভিতর থেকে পলাতক আসামি গ্রেফতার

দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে পুলিশের চোখে ধুলা দিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছিলেন। গ্রেফতার এড়াতে ঘন ঘন মোবাইল সিম ও ঠিকানাও পরিবর্তন করছিলেন তবুও শেষ রক্ষা হল না। অবশেষে বাসার মধ্যে থাকা ওয়াশিং মেশিনের ভিতর থেকেই আটক করা হল অভিযুক্ত ব্যক্তিকে।

দু-দুইটি প্রতারণার মামলা ছিল ভারতের মুম্বাইয়ের বাসিন্দা মনোজ তিওয়ারি (৫৪)’এর বিরুদ্ধে। সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই মুম্বাইয়ের পুলিশ গত প্রায় এক দশকের বেশি সময় ধরে খুঁজছিল। কিন্তু ঘন ঘন মোবাইল নম্বর ও ঠিকানা বদলানোর কারণে কিছুতেই মনোজকে ধরতে পারছিলেন না পুলিশ কর্মকর্তারা। এরপর মোবাইলের সূত্র ধরেই গত সোমবার মনোজকে ধরতে তার জুহুর বিলাসবহুল ফ্ল্যাটে যৌথভাবে অভিযান চালাতে যায় আজাদ ময়দান এবং জুহু থানার পুলিশ। কিন্তু মনোজের আইনজীবী স্ত্রী’র বাধায় ফ্ল্যাটের বাইরেই দীর্ঘ তিন ঘণ্টা ধরে অপেক্ষা করতে হয় পুলিশ সদস্যদের। এরপর তার স্ত্রী’কে বুঝিয়ে-সুজিয়ে ফ্ল্যাটের ভিতর ঢোকে পুলিশ। কিন্তু তিনটি বেড রুমে অভিযান চালিয়েও মনোজের খোঁজ পাওয়া যায়নি। একসময় হতাশা হয়ে অভিযানে ইতি টানতে চেয়েছিলেন পুলিশ সদস্যরা। কিন্তু অভিযানকারী দলের এক পুলিশ কনস্টেবলের পরামর্শে অবশেষে বাসার ওয়াশিং মেশিন খুলতেই কপালে চোখ ওঠে পুলিশের। মেশিনের ভিতরে থাকা পোশাকের মধ্যেই পাওয়া যায় মনোজ’কে। এরপরই মেশিন থেকে বাইরে এনে তাকে আটক করা হয়। পরে তাকে আদালতে তোলা হলে মনোজকে কারাগারের নির্দেশ দেয় আদালত।

মহারাষ্ট্রের বীড় এলাকায় বি.এড কোর্সে ভর্তি করিয়ে দেওয়ার নামে তিন ব্যক্তির কাছ থেকে ১ লাখ রুপি নেওয়ার অভিযোগে ২০০২ সালে আজাদ ময়দান থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়। এছাড়াও পুণেতেও তার বিরুদ্ধে ১ কোটি রুপির প্রতারণার অভিযোগ ছিল। ওই অভিযোগের ভিত্তিতেই মনোজকে আটক করা হয়। মামলা শুরু হয় মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে। পরে আদালত থেকে জামিনও পান মনোজ কিন্তু নিয়ম অনুযায়ী পরবর্তী শুনানি গুলিতে আদালতে হাজিরা না দেওয়ায় তাকে পলাতক বলে ঘোষণা দেয় আদালত।

আজাদ ময়দান থানার সহকারী পুলিশ ইন্সপেক্টর বি. মিসাল জানান ‘পুলিশ যখন মনোজের বাড়ির বেল বাজায়, তখন তাঁর স্ত্রী বন্দনা দরজা খোলে কিন্তু পুলিশকে দেখেই ফের দরজা বন্ধ করে দেয়। আমাদের কাছে যেহেতু মনোজের বিরুদ্ধে অ্যারেস্ট ওয়ারেন্ট ছিল তাই আমরা নিশ্চিত ছিলাম যে বাসার মধ্যেই মনোজ আছেন। এরপর আমরা জুহু পুলিশকেও বিষয়টি জানাই এবং অভিযানে অংশ নেয়’।

ডেপুটি পুলিশ কমিশনার (জোন-১) মনোজ কুমার শর্মা জানান ‘আদালতের তরফে অভিযুক্ত মনোজকে পলাতক বলে ঘোষণা দেওয়ার পর জুহুতে মোবাইল লোকেশন দেখে তার খোঁজ পায়। গত প্রায় ১২ বছরের বেশি সময় ধরে সে পলাতক ছিল। অবশেষে গত সোমবার জুহুতে তার বাসার ভিতরে ওয়াশিং মেশিন থেকে মনোজকে আটক করা হয়। পুলিশের কাজে বাধা দেওয়ায় মনোজের স্ত্রী’র বিরুদ্ধেও জুহু পুলিশ থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে বলে জানান ওই পুলিশ কর্মকর্তা।