কু্মিল্লার মুরাদনগরে নৌকা তৈরির ধুম পড়েছে

বর্ষায় নদী পারাপারসহ চলাচলের একমাত্র বাহন নৌকা। নদী তীরবর্তী মানুষের জন্য বর্ষাকালে অপরিহার্য হয়ে ওঠে নৌকা। শুধু চলাচল নয় পণ্য আনা-নেওয়াতেও নৌকা বেশ উপযোগী বাহন। তাই ভরা বর্ষায় নৌকা তৈরিসহ মেরামতের কাজে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার কৈইজুরী গ্রামের নৌকার কারিগররা। এখন কৈইজুরী গ্রামে নৌকা তৈরির ধুম পড়েছে। কারিগররা কেউ নতুন নৌকা তৈরি করছেন আবার কেউ পুরোনো নৌকায় আলকাতরা মেখে জোড়াতালি দিয়ে মেরামত করে চলাচলের উপযোগী করে তুলছেন। বর্ষার পানিতে অনেকেই শুধু নিজ পরিবারের লোকদের চলাচলের জন্য নৌকা তৈরি করছেন।

স্থানীয়রা জানান, বর্ষাকালে নিচু জায়গাগুলো পানিতে তলিয়ে যায়। সে সময়ে এক এলাকা থেকে অন্য এলাকায় যেতে হলে নৌকার প্রয়োজন হয়। এছাড়াও পণ্য পরিবহনে এ সময় নৌকা হয়ে ওঠে প্রধান বাহন। রকমভেদে এ নৗকা তৈরিতে খরচ পড়ে ৫ হাজার থেকে ছয় হাজার লাখ টাকা পর্যন্ত। এরই মধ্যে কুমিল্লার নদ-নদীতে পানি বেড়েছে। এজন্য নৌকার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে ব্যাপক হারে। সে জন্য নদী পারের মানুষ নৌকা তৈরিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। উপজেলার কৈইজুরী গ্রামে ঘুরে দেখা যায়, মাঝি মাল্লা ও কারিগরা এমন কর্মব্যস্ততা। চলছে নৌকা তৈরি ও মেরামতের ধুম। কেউ কাঠ কাঠছেন, আবার কেউ নৌকায় আলকাতরা লাগাচ্ছেন। হাতুড়ি কাঠের খুটখাট শৈল্পিক ছন্দে যে কারও মন ভরে যায় সেখানে গেলে। প্রখর রোদ ও বৃষ্টিকে উপেক্ষা করে বর্ষার প্রস্তুতিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন।

নৌকা তৈরির সঙ্গে জড়িত কৈইজুরী গ্রামের রঞ্জিত মিস্ত্রী বাসসকে বলেন, ৮ হাত লম্বা একটি নৌকা তৈরি করে ৮ হাজার টাকায় বিক্রয় করি। এখন দিনরাত কাজ করতে হচ্ছে। ছোট নৌকা বেশির ভাগই নদীতে মাছ ধরার কাজে ব্যবহার করা হয়।

স্থানীয় একটি স্কুলের শিক্ষক কামরুজ্জামান বাসসকে বলেন, এ অঞ্চলে বর্ষাকালে নৌকা ছাড়া চলাচল কঠিন। নদী পারাপারসহ চরাঞ্চলে যাতায়াতের একমাত্র বাহন নৌকা।
এ বিষয়ে মুরাদনগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাইন উদ্দিন আহমেদ বলেন, কৃষিপণ্য আনা-নেওয়ার জন্য বর্ষাকালে নৌকা ব্যবহার করা হয়। নৌকা ছাড়া নদী পাড়ের মানুষের চলাচল অসম্ভব। তাই এ অঞ্চলের মানুষের মাঝে এখন পুরোনো নৌকা মেরামত ও নতুন নৌকা তৈরির ধুম পড়েছে।