কেমন হবে বাংলাদেশের একাদশ

শ্রীলঙ্কা সিরিজের রেশ এখনও কেটে যায়নি। শ্রীলঙ্কার মাটিতে অসাধারণ সাফল্যের সুখ স্মৃতি নিয়ে বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটাররা এখন আয়ারল্যান্ডে। লক্ষ্য ত্রিদেশীয় সিরিজ। যেখানে প্রতিপক্ষ আয়ারল্যান্ড এবং নিউজিল্যান্ড। আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতেও গ্রুপ পর্বে প্রতিপক্ষ হিসেবে থাকছে নিউজিল্যান্ড। তার আগে ত্রিদেশীয় সিরিজে কিউইদের দু’বার মোকাবেলা করার অর্থ, বাংলাদেশের প্রস্তুতিটা যথাযত হওয়া।

ত্রিদেশীয় সিরিজের শুরুতেই বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ স্বাগতিক আয়ারল্যান্ড। সর্বশেষ এই দলটির মোকাবেলা করেছিল বাংলাদেশ, ২০১১ বিশ্বকাপে ঘরের মাঠে। ওই ম্যাচে শফিউল ইসলামের দুর্দান্ত বোলিং এবং তামিম ইকবালের কার্যকর একটি ইনিংসের ওপর ভর করে জয় পেয়েছিল বাংলাদেশ। তবে তার চার বছর আগে, ২০০৭ বিশ্বকাপে সুপার এইটে আইরিশদের কাছে পরাজয় এখনও বাংলাদেশের ক্রিকেট ভক্তদের হৃদয়ে কাঁটার মত বিধে রয়েছে।

সেই আইরিশ দলের অধিনায়ক পোর্টারফিল্ড এখনও রয়েছেন দলে। সেবার খেলা বাংলাদেশের ক্রিকেটার সাকিব, তামিম, মুশফিক কিংবা মাশরাফিরাও রয়েছে এবারের দলে। যদিও, স্লো ওভাররেটের কারণে এক ম্যাচ নিষিদ্ধ থাকার কারণে, ত্রিদেশীয় সিরিজের প্রথম ম্যাচে খেলতে পারছেন না মাশরাফি।

তবুও আয়ারল্যান্ড বাংলাদেশের চেনা প্রতিপক্ষ। গত ছয় বছর দু’দল পরস্পর মুখোমুখি না হওয়ার কারণে যেটা হয়েছে, দু’দলে যে পরিবর্তনগুলো হয়েছে সেগুলো সম্পর্কে দু’দলই অজ্ঞাত। এটাই হয়তো দু’দলের ট্রাম্পকার্ড হিসেবে বিবেচিত হতে পারে। যদিও, প্রযুক্তির উৎকর্ষতার যুগে কেউ কারও কাছে অচেনা থাকে না। ভিডিও অ্যানালাইসিস করে সবাইকেই অধ্যয়ন করে নেয়া হয়।

তবুও, টেবিলে যতই কাটাছেড়া করা হোক, বাস্তবে ২২ গজের খেলায় মুখোমুখি হওয়া ভিন্ন বিষয়। ডাবলিনের দ্য ভিলেজ স্টেডিয়ামে স্বাগতিক আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে তাই পরীক্ষার মুখোমুখিই হতে হবে বাংলাদেশকে। বাউন্সি এবং গতিময় উইকেটই অপেক্ষা করছে এখানে সাকিব-তামিমদের জন্য। এখানে শুরুতেই ব্রেক থ্রু এনে দেয়ার জন্য মাশরাফি নেই।

সুতরাং বাংলাদেশের বোলিং কম্বিনেশনটা কেমন হবে, সেটাই এখন সবচেয়ে বড় বিষয়। টিম ম্যানেজমেন্ট সূত্রে জানা যাচ্ছে, তাসকিনও নাকি কিছুটা অসুস্থ। যে কারণে প্রস্তুতি ম্যাচ খেলতে পারেননি তিনি। যদি এই অসুস্থতার কারণে প্রথম ম্যাচ খেলতে না পারেন তাসকিন, তাহলে সেটা হবে বাংলাদেশের জন্য অনেক বড় ক্ষতির কারণ।

তবুও ব্যাকআপ রয়েছে কিছুটা। তাসকিন না খেললে, হয়তো সুযোগ পেয়ে যাবেন শুভাশিস রায়। নিয়মিত একাদশে অটোমেটিক চয়েজ মোস্তাফিজুর রহমান। বাউন্সি ও গতিময় উইকেট হওয়ার কারণে রুবেল হোসেনেরও থাকার সম্ভাবনা রয়েছে একাদশে। মাশরাফি না থাকার কারণে, রুবেলের একাদশে থাকাটা প্রায় নিশ্চিত। মোট কথা, তিন পেসার নিয়েই মাঠে নামার সম্ভাবনা রয়েছে বাংলাদেশের।

বিশেষজ্ঞ স্পিনার হিসেবে থাকবেন মেহেদী হাসান মিরাজ। তার সঙ্গে বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান তো আছেনই। মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতও স্পিন বোলিং করতে পারেন। পার্ট টাইম স্পিনার রয়েছেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। সুতরাং, বোলিংয়ে পূর্ণ শক্তিরই থাকছে বাংলাদেশ।

ব্যাটিংয়েও কোনো অংশে পিছিয়ে থাকছে না। ওপেনিংয়ে তামিম ইকবাল, সঙ্গে সৌম্য সরকার। তিন নম্বরে মাঠে নামবেন সাব্বির রহমান। প্রস্তুতি ম্যাচে দুর্দান্ত সেঞ্চুরি সাব্বিরের আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দেবে নিশ্চিত। চারে মাঠে নামবেন মুশফিক। পাঁচ নম্বরে থাকছেন সাকিব আল হাসান এবং চয় নম্বরে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। সাত নম্বরে ব্যাট করবেন মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। মিরাজ বিশেষজ্ঞ স্পিনার হলেও ব্যাট হাতে দারুণ পারফরমার। অর্থ্যাৎ আট নম্বর পর্যন্ত ব্যাটসম্যান বাংলাদেশের।

সূতরাং, বাংলাদেশের সম্ভাব্য একাদশ দাঁড়াচ্ছে এরকম-
তামিম ইকবাল, সৌম্য সরকার, সাব্বির রহমান, মুশফিকুর রহীম, সাকিব আল হাসান, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত, মেহেদী হাসান মিরাজ, মোস্তাফিজুর রহমান, রুবেল হোসেন, তাসকিন আহমেদ/শুভাশিষ রায়।