কোপার ফাইনাল: যেনো না হয় কোপাকুপি, সতর্কতা

রাত পোহালেই মাঠের লড়াইয়ে নামবে ফুটবল বিশ্বে দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার তারকারা। কোপা আমেরিকার ফাইনালের এই লড়াইয়ে দুই দলের খেলোয়াড়দের ফুটবল ছন্দ দেখতে যখন পুরো বিশ্ব প্রস্তুত, ঠিক তখনই উল্টো চিত্র বিরাজ করছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়।

ফুটবল পরাশক্তি এই দুই দলের সমর্থকদের উন্মাদনা দমাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় মোতায়েন করা হয়েছে হাজারো পুলিশ। সেই সঙ্গে নিষিদ্ধ করা হয়েছে বড় পর্দায় খেলা দেখাসহ সব ধরনের বিজয় মিছিল।

শনিবার (১০ জুলাই) সকাল থেকে পুরো জেলাজুড়ে মাইকিং করতে দেখা গেছে স্থানীয় প্রশাসনকে।

জানা গেছে, বাংলাদেশ সময় ভোর ৬টা থেকে শুরু হবে ফুটবল বিশ্বের বড় আসর কোপা আমেরিকার ফুটবলের ফাইনাল খেলা। ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা দলের তারকা মেসি-নেইমারদের ফুটবল জাদুতে মেতে উঠবে পুরো বিশ্ব।

আর এই ছন্দে আনন্দে যখন পুরো বিশ্ব মাতোয়ারা তখন ফুটবল উন্মাদনায় উল্টো চিত্র বিরাজ করছে দেশের ছোট্ট জেলা ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়।

কারণ এরইমধ্যে চলমান কঠোর লকডাউন উপেক্ষা করে গত ৬ জুলাই ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার সাদেকপুরে ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার সমর্থকেরা দুই দলে বিভক্ত হয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। পরে আত অহবস্থায় দুই দলের চারজনকে ভর্তি করা হয় হাসপাতালে।

এ অবস্থায় চিরবৈরী দুই দলের ফাইনাল খেলাকে কেন্দ্র করে সমর্থকদের মাঝে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে পুলিশের পক্ষ থেকে কঠোর অবস্থান নেওয়া হয়েছে।

তবে ফুটবল প্রেমীরা বলছেন, আইন মেনেই খেলা দেখবেন তারা। বরাবরের মতো ফুটবল জ্বরে ভাসছেন এই জেলার বাসিন্দারা।

আকবর হোসেন নামের এক ফুটবলপ্রেমি বলেন, ‘আমি ১৯৯০ সাল থেকে আর্জেন্টিনা দলকে সাপোর্ট করে আসছি। আশা করি আগামীকাল আমার পছন্দের দল আর্জেন্টিনা জয়লাভ করবে।’

তিনি বলেন, ‘খেলা নিয়ে বৈরিতা ঠিক না। এতে জেলার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হয়। আমরা সবাই স্বাস্থ্যবিধি মেনে খেলা দেখবো।’

সেলিম হোসেন নামে এক ব্রাজিল সমর্থক জানান, ‘নব্বইয়ের দশক থেকে তিনি ব্রাজিলের সাপোর্ট করেন। ফুটবল ছন্দ মানে ব্রাজিল। তাই জিতবেও ব্রাজিল।’

এদিকে কঠোর লকডাউনে দুই দলের ফুটবল লড়াই দেখা নিয়ে জেলার কোথাও যেন দর্শকেরা সংঘর্ষে জড়িয়ে না পড়ে সে বিষয়টি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে জেলা শহরজুড়ে মাইকিং করা হয়েছে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোল্লা মোহাম্মদ শাহীন জানান, ‘জেলার ১১৬টি বিটে আগামীকাল ভোর থেকে মাঠে থাকবে ৪৫টি ভ্রাম্যমাণ দলসহ অন্তত এক হাজারেরও বেশি পুলিশ সদস্য। কেউ যেন ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে জেলার কোথাও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটাতে না পারেন সেজন্য পুলিশ সতর্ক থাকবে।’

পুলিশ সুপার জানান, ‘খেলা চলাকালীন এবং খেলা পরবর্তী সময়ে সব ধরনের বিজয় মিছিল এবং পটকাবাজি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। যারা এই আইন অমান্য করবেন তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

এদিকে, কোপা আমেরিকার ফুটবল উত্তেজনাকে প্রশমনের জন্যে পুলিশের উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন জেলার সচেতন মানুষ।

সচেতন নাগরিক কমিটির (সনাক) সহ-সভাপতি আব্দুন নূর বলেন, ‘জেলা পুলিশ সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন। এজন্য জেলা পুলিশের উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই।’

আগামীকাল যেন কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সেই বিষয়টি নিশ্চিত করার জন্যে জেলা পুলিশের কাছে তিনি অনুরোধ জানান।
তথ্যসূত্র: সময় নিউজ