খাগড়াছড়ির বিজিতলা ও গামারিঢালায় রোহিঙ্গা পুনর্বাসনের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল

খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলায় সদর উপজেলার বিজিতলা ও গামাড়িঢালায় রোহিঙ্গা পুনর্বাসনের প্রতিবাদে ও পুনর্বাসিত রোহিঙ্গাদের কক্সবাজারে শরণার্থী শিবিরে ফেরত পাঠানোর দাবিতে জেলা সদরে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ(পিসিপি) ও গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম(ডিওয়াইএফ), খাগড়াছড়ি জেলা শাখা।

মঙ্গলবার(২৯শে আগস্ট ২০২৩) সকালে খাগড়াছড়ি চেঙ্গি ব্রীজ থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি শুরু হয়ে খাগড়াছড়ি বাস টার্মিনাল এলাকায় গিয়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মধ্য দিয়ে শেষ হয়।

সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের খাগড়াছড়ি জেলা সভাপতি শান্ত চাকমা, গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের খাগড়াছড়ি জেলা সহ—সভাপতি লিটন চাকমা ও হিল উইমেন্স ফেডারশনে খাগড়াছড়ি জেলা আহ্বায়ক এন্টি চাকমা।
বক্তারা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামকে অস্থিতিশীল করার লক্ষ্যে জামায়াত পন্থী সেনাবাহিনীর একটি কায়েমী স্বার্থবাদী গোষ্ঠি নানা ষড়যন্ত্র করছে। তারই অংশ হিসেবে বিজিতলা আর্মি ক্যাম্পের সাব—জোন কমান্তার মো: ইয়াসিন ১নং খাগড়াছড়ি ইউনিয়নের বিজিতলা ও গামাড়িঢালা এলাকায় অবৈধভাবে রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসন করছেন। তিনি এ পর্যন্ত সেখানে অন্তত: ৩৩পরিবার রোহিঙ্গাকে পুনর্বাসন করেছেন। শুধু তাই নয়, মো: ইয়াসিন রোহিঙ্গাদের ভূয়া জন্ম নিবন্ধন সনদ দেয়ার জন্য স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের ওপরও চাপ সৃষ্টি করছেন। জন্ম সনদ দিতে অস্বীকার করায় ইতিমধ্যে ১নং খাগড়াছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের সচিব শিপংকর চাকমা(সতেজ)—কে অন্যত্র বদলী করে তার স্থলে নাজমুল ইসলাম নামে একজনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এভাবে পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে পাহাড়িদের নিশ্চিহ্ন করে দেয়ার লক্ষ্যে পরিকল্পিতভাবে এ ধরনের হীন কর্মকান্ড চালানো হচ্ছে।
বক্তারা উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, সরকার সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ৮০’র দশকে সমতল থেকে কয়েক লক্ষ বাঙালি সেটলারকে পার্বত্য চট্টগ্রামে অবৈধ অনুপ্রবেশ ও পুনর্বাসন করেছে। এর ফলে অনেক পাহাড়ি নিজ জমি ও বাস্তুুভিটা থেকে উচ্ছেদের শিকার হয়েছেন। বর্তমানে জামায়াত পন্থী সেনাবাহিনীর কায়েমী স্বার্থবাদী অংশটি রোহিঙ্গা শরণার্থীদের পার্বত্য চট্টগ্রামে অনুপ্রবেশ ও পুনর্বাসন করে নিজেদের কায়েমী স্বার্থ উদ্ধার করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। ইতিমধ্যে বান্দরবানের নাইক্ষংছড়িসহ বেশ কিছু জায়গায় রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসন করা হয়েছে। খাগড়াছড়িতেও এখন রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসন কার্যক্রম চালানো হচ্ছে।

রোহিঙ্গারা এদেশের নাগরিক নয় উল্লেখ করে বক্তারা বলেন, রাজনৈতিক ও নিজ কায়েমী স্বার্থ হাসিলের উদ্দেশ্যে সেনাবাহিনীর একটি বিপদজনক চক্র রোহিঙ্গাদের স্থানীয় বাসিন্দা ও জন্ম নিবন্ধন সনদ দিতে জনপ্রতিনিধিদের বাধ্য করছে। বেআইনিভাবে ক্ষমতার অপব্যবহার করে পার্বত্য চট্টগ্রামে সা¤প্রদায়িক দাঙ্গা পরিস্থিতি সৃষ্টি করার লক্ষ্যে তারা এই ন্যাক্কারজনক কাজ করছে। সবক্ষেত্রে সামরিক হস্তক্ষেপের মাধ্যমে মুলত পার্বত্য পার্বত্য চট্টগ্রামকে সামরিক যাঁতাকলে পিষ্ট করার ষড়যন্ত্র বাস্তবায়ন করা হচ্ছে বলে বক্তারা অভিযোগ করেন।

বক্তারা অবিলম্বে বিজিতলা ও গামাড়িঢালাসহ পার্বত্য চট্টগ্রামে অবৈধভাবে পুনর্বাসিত রোহিঙ্গাদের কক্সবাজারে তাদের শরণার্থী শিবিরে ফেরত পাঠানো এবং রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ও পুনর্বাসন বন্ধের দাবি জানান। পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ খাগড়াছড়ি জেলা শাখার দপ্তর সম্পাদক প্রাঞ্জল চাকমা স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।