খাগড়াছড়ি রামগড়ে বারৈয়ারহাট-হেঁয়াকো-রামগড় সড়ক প্রশস্তকরণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন

খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলায় রামগড় উপজেলা হয়ে বারৈয়ারহাট-হেঁয়াকো-রামগড় সড়ক প্রশস্তকরণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়েছে। “অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ও স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে রামগড় স্থলবন্দরের ভূমিকা অপরিসীম” এই প্রতিপাদ্যে বারৈয়াহাট-হেয়াঁকো-রামগড় সড়কের আধুনিকায়ন ও প্রশস্তকরণ প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বুধবার(২৪শে মে) সকাল ১১টার দিকে রামগড় স্থলবন্দরে ‘বারৈয়ারহাট-হেঁয়াকো-রামগড় সড়ক প্রশ্বস্তকরণ’ রামগড়ের মহামুনি এলাকাস্থ ‘বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী সেতু’ এলাকায় ভার্চুয়ালি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেও এমপি এবং ভারতীয় হাই কমিশনের কমিশনার প্রণয় ভার্মা প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।

এ প্রকল্পটি সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে ও বাংলাদেশ ও ভারত সরকারের অর্থায়নে নির্মিত হচ্ছে। ৩৮কিলোমিটার সড়কের প্রকল্পটির ব্যয় ধরা হয়েছে ১১০৭.১২কোটি টাকা।

এ সময় পার্বত্য চট্টগ্রাম ভারত প্রত্যাগত শরণার্থী বিষয়ক টাস্কফোর্সের চেয়ারম্যান(প্রতিমন্ত্রী পদ-মর্যাদা) কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপি, তিন পার্বত্য জেলার সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য বাসন্তী চাকমা এমপি, খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মংসুইপ্রæু চৌধুরী অপু, চট্রগ্রাম জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এটিএম পেয়ারুল ইসলাম, জেলা প্রশাসক মো: সহিদুজ্জামান, পুলিশ সুপার মো: নাইমুল হক, খাগড়াছড়ি পৌর মেয়র নির্মলেন্দু চৌধুরী, পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য কল্যাণ মিত্র বড়ুয়া, রামগড় উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বিশ্ব প্রদীপ কার্বারি(ত্রিপুরা), ফটিকছড়ি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান তৈয়ব আলী, রামগড় উপজেলা নির্বাহী অফিসার মমতা আফরিন, রামগড় সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নাজিম উদ্দিন, সহকারী কমিশনার(ভূমি) মানস চন্দ্র দাস, রামগড় পৌরসভার মেয়র রফিকুল আলম কামাল, খাগড়াছড়ি সওজ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মাসুদুর রহমান, রামগড় ৪৩বিজিবি’র সহকারী পরিচালক রাজু আহমেদ, অফিসার ইনচার্জ মো: মিজানুর রহমানসহ সরকারি বেসরকারি দপ্তরে পদস্থ কর্মকর্তা বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিক বৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

ভারত যদি বাংলাদেশে সর্বোচ্চ বিনিয়োগ করে, তাহলে আমাদের অন্য কারও কাছে যেতে হয় না। আমাদের রোড কানেক্টিভিটি ও রেল সেক্টরে দুই দিক থেকেই কানেক্টিভিটি অনেক দূর এগিয়ে গেছে। পাশাপাশি আরও নতুন নতুন দুয়ার উন্মোচিত হচ্ছে। ভারতের সঙ্গে আমাদের ব্যবসা-বাণিজ্য ও লেনদেন বেড়েছে। এর ফলে উভয় দেশই লাভবান হয়েছে। এই কথাগুলো আমাদের আজকে স্বীকার করতে হবে। আমি ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্ব চাই আমাদের নিজেদের স্বার্থে, আমাদের জাতীয় স্বার্থে ও আমাদের উন্নয়নের স্বার্থে।

রাজধানীর তেজগাঁওয়ে সড়ক ভবনের চিফ ইঞ্জিনিয়ার কনফারেন্স হলে ‘বারৈয়ারহাট-হেঁয়াকো-রামগড় সড়ক প্রশস্তকরণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমপি এসব কথা বলেন। বুধবার(২৪শে মে) সকাল ১১টার সময় রামগড় মৈত্রী সেতু-১ সংলগ্ন এলাকায় ভার্চুয়ালি সড়ক প্রস্তুুকরণ সভার আয়োজন করা হয়।

সওজ সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রামের মিরসরাই-ফটিকছড়ি ও খাগড়াছড়ির রামগড় উপজেলায় বাস্তবায়নাধীন বারৈয়ারহাট-হেয়াঁকো-রামগড় সড়ক প্রশস্থকরণ ও আধুনিকীকরণ প্রকল্পটির দৈর্ঘ্য ৩৮কি.মি। বর্তমান ৫.৫০মিটারের সড়কটি বৃদ্ধি করে ১১.৩০মিটারে উন্নতি করা হবে। এতে থাকবে ২৪৯.২০মিটার দৈর্ঘ্যরে ৯টি ব্রীজ ও ১০৮মিটার দৈর্ঘ্যরে ২৩টি সেতু। ২৪টি ব্রীজ ও ২৪টি সেতু ইতিপূর্বে জাইকা কর্তৃক নির্মিত হয়েছে। এ প্রকল্পের ব্যয় ১১০৭.১২কোটি টাকা যার মধ্যে ইন্ডিয়ান স্টেট ক্রেডিটের আওতায় অর্থাৎ ভারত সরকার ঋণ হিসাবে দিচ্ছে ৫৯৪.০৭কোটি টাকা। আগামী ৩১শে ডিসেম্বর ২০২৪সালের মধ্যে কাজটি শেষ করার লক্ষমাত্রা দিয়ে ভারতীয় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান অশোকা বিল্ডকন লিমিটেডকে সড়কটি নির্মাণের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য ২০১৭সালের ৫ই এপ্রিল স্বাক্ষরিত সমঝোতা স্মারক অনুযায়ী বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার দ্বিপাক্ষিক ব্যবসা-বাণিজ্য স¤প্রসারণের জন্য চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দর ও রামগড় স্থলবন্দরের মধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নয়নের লক্ষে এ প্রকল্পটি হাতে নেওয়া হয়।