খাগড়াছড়িতে পিআইওদের কর্মবিরতি শেষে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি প্রদান

খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলাতে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ন্যায্য দাবি আদায়ের জন্য প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেছে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তা কর্মচারীরা।

বৃহস্পতিবার(১৫ই সেপ্টেম্বর) দুপুরের দিকে খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাসের মাধ্যমে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।

কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসাবে সারা দেশের ন্যায় জনবল কাঠামো ও নিয়োগবিধি বাস্তবায়নসহ পাঁচ দফা দাবিতে গত ১২ই সেপ্টেম্বর থেকে টানা চার দিন অর্ধদিবস কর্মবিরতি পালন করে জেলার ৯টি উপজেলাতে কর্মরত দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। গত বুধবার(১৪ই সেপ্টেম্বর) সকালে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের সংযুক্ত কর্মকর্তা ও কর্মচারী কল্যাণ পরিষদের ব্যানারে গুইমারা উপজেলা কার্যালয়ে একইভাবে কর্মবিরতি পালন হয়। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তারাধীন সংযুক্ত কর্মকর্তা-কর্মচারি কল্যাণ পরিষদের ডাকে এ কর্মবিরতি পালন করে তারা।

দাবি আদায়ের লক্ষ্যে খাগড়াছড়ি জেলা সদরসহ জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তার(ডিআরআরও) কার্যালয় ও ৯টি উপজেলার প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার(পিআইও) কার্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারিরা কর্মসূচির প্রথম দিন সোমবার সকাল ৮টা থেকে বৃহস্পতিবার ১২টা পর্যন্ত অর্ধদিবস কর্মবিরতি পালন শেষে খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।

এসময় অন্যান্যের মধ্যে খাগড়াছড়ি সদর পিআইও নিমাই চন্দ্র রায়, পানছড়ি ও মহালছড়ির পি.আই.ও মো: রাকিবুল ইসলাম, মাটিরাঙ্গা ও গুইমারার পি.আই.ও ইশতিয়াক আহমেদ, দিঘীনালার পি.আই.ও আব্দুস সালাম, মানিকছড়ি ও লক্ষ্যাছড়ির পি.আই.ও তহিদ উজ জামান, রামগড় পি.আই. মো: নজরুল ইসলাম, উপ-সহকারী প্রকোশলী মিলন চাকমা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

স্মাারকলিপিতে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা আইন ২০১২এর আলোকে জনবল কাঠামো ও নিয়োগবিধি বাস্তবায়ন, ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তার পদটি ৬ষ্ঠ গ্রেডে উন্নীতকরণ, উপজেলা পর্যায়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার পদটি ৯ম গ্রেডে উন্নীতকরণ, সকল কর্মচারীদের পদনাম পরিবর্তন ও আপগ্রেডেশন, অধিদপ্তরের সকল শুন্যপদে পদোন্নতি বা চলতি দায়িত্ব এবং নিয়োগের মাধ্যমে প্রেরণ অন্যতম বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

গুইমারা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসার(পিআইও) ইসতেয়াক আহমেদ বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাত ধরে ১৯৭২সালে ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের যাত্রা শুরু করে। এ অধিদপ্তরের লোকবল আপামর জনসাধারণকে তৃণমূল পর্যায়ে সেবা দিয়ে থাকে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা আইন ২০১২ কার্যকর হয়েছে প্রায় এক যুগ আগে। অথচ এর আওতায় কর্মরত জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা(ডিআরআরও) এবং উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাদের(পিআইও) জনবলকাঠামো ও নিয়োগবিধি এখনো অনুমোদন হয়নি। পদ দুটির উন্নীতকরণ প্রস্তাবও পড়ে আছে মন্ত্রণালয়ে। ফলে ডিআরআরও এবং পিআইওরা প্রত্যাশিত আর্থিক সুবিধা আমরা পাচ্ছি না।

উপ-সহকারী প্রকোশলী মিলন চাকমাসহ বলেন, ‘দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর সৃষ্টির পর থেকে যে জনবল ছিল, এখনো তাই আছে। যে কারণে আমাদের পদবী উন্নয়ন হয়নি।’
গ্রহীতা উগ্যজাই মারমা জানান, সরকার দপ্তরটির দাবি মেনে নিলে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি শেষ হবে। এভাবে কর্মবিরতি চললে সাধারণ মানুষের জন্য সেবা পাওয়া কষ্টকর হয়ে পড়বে।

উল্লেখ্য, সোমবার(১২ই সেপ্টেম্বর) সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত এই কর্মবিরতি পালন করা হয়েছে। এই কর্মবিরতি ছিল আগামী ১৫ই সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। কর্মবিরতির কারণে উপজেলাভিত্তিক এ অধিদপ্তরটির কার্যক্রম চরম ব্যাহত হচ্ছে।
এ অধিদপ্তরের কেন্দ্রীয় সূত্রে জানা যায়, যদি এর মধ্যে যৌক্তিক দাবিগুলো আদায় না হয় তাহলে পরবর্তী কর্মসূচি প্রণয়নের লক্ষ্যে শনিবার(১৭ই সেপ্টেম্বর) পুনরায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের সংযুক্ত কর্মকর্তা-কর্মচারী কল্যাণ পরিষদের সভা আহবান করে আরও কঠোর কর্মসূচিতে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।