খাগড়াছড়ি মাটিরাঙ্গায় বীর নিবাসের আওতায় ১২জন অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধা

খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলায় মুজিববর্ষে কেউ গৃহহীন থাকবে না’ সরকারের প্রতিশ্রুতি এই উদ্যোগের পাশাপাশি এবার মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ের আওতায় উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কার্যালয়ের মাধ্যমে সরকার সারাদেশে প্রতিটি উপজেলায় অসচ্ছল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বাসস্থানের জন্য ‘বীর নিবাস’ প্রকল্প হাতে নিয়েছে।

সারাদেশের ন্যায় খাগড়াছড়ি জেলার মাটিরাঙ্গায় ‘বীর নিবাস’ পাচ্ছেন ১২জন অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধা পরিবার। মাটিরাঙ্গা উপজেলায় সরকারিভাবে এ বাসস্থান তৈরি করা হচ্ছে। এ জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ১কোটি ৬৯লাখ ২০হাজার টাকা। এরমধ্যে টেন্ডারের প্রক্রিয়া শেষে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান বীর নিবাসের কাজ সম্পন্ন করেছেন।

মাটিরাঙ্গা উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, মাটিরাঙ্গা উপজেলায় বীর নিবাস নির্মাণের জন্য অ¯^চ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের প্রথম পর্যায়ে ৩০জন মুক্তিযোদ্ধা আবেদন করেন। পরে উপজেলা যাচাই-বাচাই কমিটি ও তদারকি কর্মকর্তার মাঠের তথ্যের ভিত্তিতে প্রকৃতপক্ষে যে বেশি অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ১২জনের নামের তালিকা মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয় অনুমোদন করে।

বীর নিবাস পেলেন যারা-প্রথম পর্যায়ে মাটিরাঙ্গার তবলছড়ির তাহের সর্দার পাড়ার বীর মুক্তিযোদ্ধা মো: হাফিজ উদ্দিন, গৌরাঙ্গপাড়ার বীর মুক্তিযোদ্ধা মো: জয়নাল আবেদীন, কুমিল­াটিলার বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সহীদ, হাজীপাড়ার বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. শামছুল হক, বড়নালের বীর মুক্তিযোদ্ধা মো: রাজা মিয়া ও মাটিরাঙা পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ডের মুসলিমপাড়ার বীর মুক্তিযোদ্ধা মিয়া চাঁন সরকার।

বীর নিবাস পাওয়া অসচ্ছল বীর মুক্তিযোদ্ধা মিয়া চাঁন সরকার বলেন, বীর নিবাস‘ তৈরী করে আমাদের মাথা গোজার ঠাঁই করে দিয়েছেন। বঙ্গবন্ধু কন্যার কারণেই ভাতা পাচ্ছি, আবার পাকা বাড়িও পেলাম। বঙ্গবন্ধুর ডাকে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করে স্বাধীনতা পেয়েছি। কিছু পাওয়ার আশায় মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করিনি। স্বাধীনতার ৫০বছর পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বীল মুক্তিযোদ্ধাদের উপহার হিসেবে ‘বীর নিবাস‘ করে দিয়েছেন। এর চেয়ে সুখের কি হতে পারে।

মাটিরাঙ্গা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো: ইশতিয়াক আহম্মেদ বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে ২০২১-২২অর্থ বছরে মাটিরাঙ্গা উপজেলায় ১২জন অসচ্ছল বীর মুক্তিযোদ্ধার অনুকুলে বীর নিবাস নির্মাণ কাজ শুরু করে। ইতিমধ্যে ছয়টি বাড়ির নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। ছয়টি বাড়ি অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের মাঝে হস্তাস্তর করা হয়েছে। বাকি ৬টি নির্মাণ কাজ শেষ পর্যায়ে কিছুদিনের মধ্যে বীর নিবাস বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মাঝে হস্তান্তর করা হবে।

মাটিরাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিজ তৃলা দেব বলেন, মুজিববর্ষে বাংলাদেশের একজন অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধা গৃহহীন থাকবে না, প্রধানমন্ত্রীর এই নির্দেশনা বাস্তবায়নে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ের আওতায় উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কার্যালয়ের মাধ্যমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আন্তরিকতায় জাতির শ্রেষ্ঠ সূর্য সন্তান অসচ্ছল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বীর নিবাস নির্মাণ করে দেয়া হচ্ছে।

সরকারের করে দেয়া বীর নিবাস বিক্রি বা হস্তান্তর করা যাবেনা উল্লেখ করে তিনি বলেন, পর্যায়ক্রমে সরকার সকল মুক্তিযোদ্ধাদের আবাসন সমস্যা দূরীকরণের জন্য ‘বীর নিবাস’ তৈরি করে দেওয়ার পরিকল্পনা বর্তমান সরকারের রয়েছে বলে জানান তিনি।