খাগড়াছড়ির ৯ উপজেলাতে ধসের শঙ্কা

খাগড়াছড়ি-রাঙ্গামাটি-বান্দরবান তিন পার্বত্য জেলা পাহাড়ে যেন বৃষ্টি থামছেই না। কখনো ভারী, কখনো মাঝারি, আবার কখনো গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে। এতে বেড়েছে পাহাড় ধসের শঙ্কা। ফলে উৎকণ্ঠায় দিন কাটছে পাহাড়ের বাসিন্দাদের। এদিকে টানা বর্ষণের ফলে জেলার বিভিন্ন উপজেলার গ্রামীণ সড়কগুলোর দু’পাশে মাটি সরে ও পাহাড়ের মাটি পড়ে যোগাযোগ ব্যাহত হচ্ছে। বর্ষণ অব্যাহত থাকলে যেকোনো সময় ধসে পড়তে পারে পাহাড়-এমন আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। আবহাওয়া অফিস বলছে, সক্রিয় মৌসুমি বায়ু অব্যাহত থাকার কারণে এ বৃষ্টি চলমান থাকবে।

খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার পাহাড়ধসের শঙ্কায় পাহাড়ে ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করছে নিম্ম আয়ের সাধারন মানুষ। তিন দিনের টানা বৃষ্টিতে পাহাড়ের বিভিন্ন স্থানে ধসের ঘটনা ঘটছে। বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে ঘটতে পারে ভয়াবহ পাহাড় ধস। অথচ ঝুঁকি নিয়ে পাহাড়ের পাদদেশে মানুষ বসবাস করছে। শুধু খাগড়াছড়ি পৌর শহরে পাহাড়ের পাদদেশে সাড়ে ৩হাজারের বেশি পরিবার জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করছে। ভারি বর্ষণেও তারা আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে ইচ্ছুক নয়। প্রশাসনের সতর্কতা বার্তাও তারা পরোয়া করে না।

জানা গেছে, একটানা বৃষ্টি হলে খাগড়াছড়ি জেলার সবুজবাগ, শালবাগান, কুমিল্লা টিলা, কলাবাগান, কদমতলীসহ শহরতলীর বিভিন্ন এলাকায় পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটে।

সরেজমিন সবুজবাগে গিয়ে দেখা যায়, কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে পাঁচটি পাহাড়ের আংশিক ধস হয়েছে। এর মধ্যে একটি ঘর ধসে পড়ার শঙ্কায় রয়েছে। এখানকার বাসিন্দা আব্দুল মোতাতেব, রহুল আমিন ও সানজিদা খাতুন জানান, মাত্র বৃষ্টি শুরু হয়েছে। অথচ এর মধ্যে পাহাড়ের মাটি ধসে গেছে।

আমরা খুব আতঙ্কের মধ্যে বাস করছি। বৃষ্টি হলে ভয়ে রাতে তাদের ঘুম আসে না। গত বছর এখানে পাহাড় ধস হলেও তা রোধে প্রশাসন কোনো উদ্যোগই নেয়নি। তবে জানা গেছে, পাহাড় ধস রোধে প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে স্থানীয় প্রশাসন ব্যাপক প্রস্তুুতি নেয়। কিন্তু সেগুলো মূলত সাময়িক। প্রশাসন স্থায়ী ও টেকসই কোনো পরিকল্পনা নেয় না। ফলে কাজের কাজ কিছুই হয় না। বরং প্রতিবছরই পাহাড় ধসে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বাড়ে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অসহায় মানুষ পাহাড়ের পাদদেশে বসতি গড়ে তুলেছেন।

কয়েকজন বাসিন্দা জানান, এখানে আমরা বছরের পর বছর বসবাস করছি। অন্য কোথাও আমাদের থাকার জায়গা নেই। এখনকার ভূসম্পত্তি ছেড়ে অন্য কোথাও আমরা যেতেও চাই না। অবৈধ বসতি স্থাপন এবং অপরিকল্পিতভাবে অবকাঠামো নির্মাণের কারণে পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটছে। অবৈধভাবে পাহাড় কাটা রোধে প্রশাসন নির্বিকার থাকে। এ কারণে ভূমিদস্যুরা পাহাড় কেটে সাবাড় করে দিচ্ছে। এছাড়া বিভিন্ন উন্নয়ন কাজে নিয়ম না মেনে সরকারিভাবে পাহাড় কাটা হয়। আবার পাহাড় রক্ষায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো কার্যকর ও টেকসই ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। বাণিজ্যিক কারণে নির্বিচারে গাছ কাটায় পাহাড় প্রাকৃতিকভাবে ধস প্রতিরোধের সক্ষমতা হারিয়ে ফেলছে। ফলে পাহাড় ধস ঠেকানো যাচ্ছে না।

স্থানীয়দের মতে, ৯টি উপজেলাতে ২বছরে সাবাড় দুই শতাধিক ন্যাড়া পাহাড়ের পরিনত হয়েছে। পার্বত্য এলাকায় বসবাসরত বেশিরভাগ মানুষ পাহাড় কেন্দ্রিক বনজ ও জুম চাষের অর্থনীতির ওপর নির্ভরশীল। ভূ-প্রাকৃতিক গঠনের কারণে পাহাড় কেন্দ্রিক মানুষের নির্ভরশীলতা বাড়ছে। পাহাড়ের ওপর অনেক মানুষ জীবন ও জীবিকা নির্ভর করলেও সেই পাহাড়কে সাবাড় করে দিচ্ছে কেউ কেউ। এতে বিপন্ন হচ্ছে পাহাড়ের প্রাণ ও প্রকৃতি। খাগড়াছড়িতে পাহাড়, বন উজাড়, ঝিরি থেকে পাথর উত্তোলনসহ নানা কারণে পরিবেশের বিপর্যয় হচ্ছে।

সরেজমিনে দেখা যায় খাগড়াছড়ির ৯টি উপজেলা ঘুরে দেখা গেছে, গত দুই বছরে খাগড়াছড়ি থেকে সাবাড় হয়েছে অন্তত: ২শ পাহাড়। কোথাও আংশিক আবার কোথাও পুরো পাহাড়ই সাবাড় কেড়ে দিয়েছে পাহাড় খেকোরা।

এর মধ্যে কেবল মাটিরাঙা উপজেলাতেই কাটা হয়েছে শতাধিক পাহাড়। রাতের আঁধারে কাটা হয়েছে বেশিরভাগ পাহাড়। মাটিরাঙা উপজেলার গোমতি, তাইন্দং, তবলছড়ি, বেলছড়ি, খেদাছড়া, আদর্শ গ্রামসহ বিভিন্ন এলাকায় প্রায় শতাধিক পাহাড় কাটা হয়েছে। বাড়ি নির্মাণ, রাস্তা সংষ্কার এবং ইটভাটাসহ বিভিন্ন কাজে ব্যবহারের জন্য পাহাড় কাটছে একটি চক্র। দিনের আলোয় পাহাড় কাটার মহোৎসব চললেও প্রশাসন কার্যকর কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে পরিবেশ কর্মীরা। গত কয়েক বছর ধরে খাগড়াছড়িসহ তিন পার্বত্য জেলায় পাহাড় ধসে প্রাণহানি ও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হলেও পাহাড় কাটা বন্ধ হয়নি। বিনা বাধায় পাহাড় খেকোরা আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।

এছাড়া বেশির ভাগ পাহাড়ই কাটা হয়েছে অত্যন্ত খাড়াভাবে। এতে পাহাড় ধসের শঙ্কা আরও বেশি ঝুকিপুর্ন। একই অবস্থা খাগড়াছড়ির মহালছড়ি উপজেলায়। উপজেলা চোংড়াছড়িসহ খাগড়াছড়ি মহালছড়ি সড়কের লাগায়ো বিভিন্ন এলাকায় পাহাড় কাটা হয়েছে। মহালছড়ি উপজেলায় মহালছড়ি-চোংড়াছড়ি সড়কের শান্তি নগর এলাকায় খাড়া পাহাড় কেটে সাবাড় করে দেয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে প্রায় শত ফুট উচ্চতার খাড়া পাহাড়ের একটি বড় অংশ কেটে নেওয়া হয়েছে। একইভাবে পাহাড় কেটে সাবাড় করা হচ্ছে জেলার দীঘিনালা, রামগড়, পানছড়িতে।
এছাড়া গুইমারা উপজেলার শনখোলা পাড়া, মুসলিমপাড়া, আমলতলীপাড়া, চিংগুলীপাড়া, সিন্দুকছড়ি, তৈকর্মা, বড়পিলাক, জালিয়াপাড়াসহ বিভিন্ন এলাকায় পাড়া কর্তন হয়েছে। মানিকছড়ি উপজেলায় সবচেয়ে বেশি পাহাড় কেটে ঢালু করা হয়েছে হাজী পাড়া, মুসলিম পাড়া, মাস্টার পাড়া, রহমান নগর, ডাইনছড়ি, সেম্প্রুপাড়া, কালাপানি, গাড়িঢানা, সাপমারা ও তিন টহরীতে।

খাগড়াছড়ি পরিবেশ সুরক্ষা আন্দোলনের সভাপতি প্রদীপ চৌধুরী জানান, প্রশাসনিক ভাবে পাহাড় কাটা নিয়ন্ত্রণ করতে না পারায় দেদার পাহাড় কাটা চলছে। চিরন্তন চলতে থাকবে পাহাড় জবর-দখল যেমন বেপরোয়া ঠিক তেমনি, পাহাড় কাটা মহোৎসবে মেতে উঠেছে পাহাড় খেকোরা। পাহাড় কাটা রোধে আইনের সর্বোচ্চ প্রয়োগ না থাকায় পাহাড় কাটার প্রবণতা বাড়ছে। আবার সরকারিভাবেও পাহাড় কাটা হচ্ছে। প্রতিবছর প্রাণহানি ঘটলেও পাহাড় ধস রোধে সরকারের কোনো টেকসই ব্যবস্থা নেই।

খাগড়াছড়ি পৌরসভার মেয়র নির্মলেন্দু চৌধুরী জানান, পৌর এলাকায় চারটি স্থানে পাহাড় ধসের ঝুঁকি রয়েছে। প্রাণহানি ও ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে বসবাসকারীদের সতর্ক করা হয়েছে। ঝুঁকিতে থাকা বাসিন্দাদের পৌরসভা সার্বিক সহায়তা করবে। ভবিষ্যতে পৌর আবাসন এলাকায় তাদের পুনর্বাসন করা হবে।

খাগড়াছড়ি সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা(ইউএনও) মাহফুজা মতিন জানান, উপজেলার বিভিন্ন স্থানে পাহাড় ধসের শঙ্কা রয়েছে। জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে সার্বক্ষণিক খোঁজখবর রাখা হচ্ছে। দুর্যোগ মোকাবিলায় আমাদের সার্বিক প্রস্তুুতি রাখা রয়েছে।

এদিকে রাঙ্গামাটিতে কয়েক দিন ধরে থেমে থেমে বৃষ্টি হওয়ায় পাহাড়ধসের ঝুঁকি বেড়ে গেছে। এমতাবস্থায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির এক জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। রোববার (৬ই জুন) সকালে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। রাঙ্গামাটির জেলা প্রশাসক(ডিসি) মোহাম্মদ মিজানুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় উপস্থিতি ছিলেন সিভিল সার্জন ডা: বিপাশ খীসা, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(সার্বিক) মো: মামুন, পৌর মেয়র আকবর হোসেন চৌধুরী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(সদর সার্কেল) তাপস রঞ্জন ঘোষসহ জেলার সড়ক, পানি, শিক্ষা ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা।

সভায় জানানো হয়, টানা বর্ষণ শুরু হলে পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসকারীদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিতে পৌর এলাকায় ২৯টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুু ত রাখা হয়েছে। সড়কে পাহাড়ধস হলে দ্রæুত সময়ে তা সরানোর ব্যবস্থা গ্রহণে ও জানমালের নিরাপত্তায় সার্বিক প্রস্তুুতি সভায় অবহিত করা হয়।

এসময় জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, ‘বৃষ্টি বেশি হলেই পাহাড়ধসের ঝুঁকি রয়েছে যেসব স্থানে সেখান থেকে মানুষকে সরিয়ে আনার ব্যবস্থা করা হবে। যোগাযোগ সচল রাখার জন্য সড়ক বিভাগসহ সব বিভাগকে প্রস্তুুত থাকার নির্দেশও দেয়া হয়েছে। এবারের বর্ষায় যাতে কোনো প্রাণহানির ঘটনা না ঘটে সেদিকে নজর রাখতে হবে। এছাড়া দুর্যোগ সংশ্লিষ্ট দফতরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে’।

এছাড়া সভায় ভূমিকম্প হলে ক্ষয়ক্ষতি কমানোর প্রস্তুুতি হিসেবে জেলার ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের তালিকা তৈরির জন্য কমিটি গঠন করা হয় বলে জানান তিনি।

অপরদিকে বান্দরবান জেলার সাতটি উপজেলার দুর্গম পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসকারীদের প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিরাপদে সরে যেতে বলা হয়েছে। পাহাড়ের পাদদেশ থেকে সরিয়ে নিতে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা প্রশাসন এবং সংশ্লিষ্টরাও কাজ করছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বান্দরবানে প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে পাহাড় ধসে প্রাণহানির ঘটনা ঘটে থাকে। প্রশাসন থেকে উদ্যোগ নেওয়া হলেও পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসকারীদের সরানো বেশির ভাগ সময়ই কঠিন হয়ে পড়ে। পরিবেশ নিয়ে কাজ করে এমন কয়েকটি বেসরকারি সংস্থার জরিপ থেকে জানা গেছে, সদর উপজেলার কালাঘাটা, কাসেমপাড়া, ইসলামপুর, বনরূপা পাড়া, হাফেজঘোনা, বাসস্টেশন এলাকা, স্টেডিয়াম এলাকা, নোয়াপাড়া, কসাইপাড়া, লামা উপজেলার হরিনমারা, তেলুমিয়া পাড়া, ইসলামপুর, গজালিয়া, মুসলিম পাড়া, চেয়ারম্যানপাড়া, হরিণঝিড়ি, টিঅ্যান্ডটি এলাকা, সরই, রুপসীপাড়া, নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার উত্তরপাড়া, বাইশফাঁড়ি, আমতলী, রেজু, তুমব্রু, হেডম্যানপাড়া, মনজয় পাড়া, দৌছড়ি, বাইশারী, রুমা উপজেলার হোস্টেলপাড়া, রনিনপাড়াসহ সাতটি উপজেলার বিভিন্ন স্থানে পাহাড়ের পাদদেশে অপরিকল্পিতভাবে বসতি গড়ে তুলেছে প্রায় ৩০হাজারেরও বেশি পরিবার। এ বছরও পাহাড়ের পাদদেশে নতুন নতুন বসতি গড়ে ওঠায় গত বছরের তুলনায় ঝুঁকিপূর্ণ পরিবারের সংখ্যা আরও অনেক বেড়ে গেছে।

জেলা তথ্য অফিস সূত্রে জানা গেছে, ২০০৬সালে জেলা সদরে তিনজন, ২০০৯সালে লামা উপজেলায় শিশুসহ ১০জন, ২০১০সালে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায় পাঁচজন, ২০১১সালে রোয়াংছড়ি উপজেলায় দুইজন, ২০১২সালে লামা উপজেলায় ২৮জন ও নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায় ১০জন, ২০১৫সালে লামায় চারজন, সিদ্দিকনগরে একজন এবং সদরের বনরূপা পাড়ায় দুইজন এবং সর্বশেষ ২০১৭সালের ১৩জুন সদরের কালাঘাটায় সাতজন ও রুমা সড়কে ২৩জুলাই পাঁচজন পাহাড় ধসে মারা গেছেন।

পাহাড়ের নিচে ঝুঁকিতে থাকা কালাঘাটার মো: আলী হোসেন বলেন, ‘কয়েক বছর আগে আমি অনেক কষ্ট করে এ জায়গাটি কিনে পাহাড়ের জঙ্গল সামান্য ছাঁটাই করে ঘর তৈরি করেছি। প্রতি বছর বর্ষাতে আমি পরিবারকে নিয়ে ভয়ে ভয়ে রাত যাপন করি। পাহাড় প্রতি বছরই কম বেশি ধসে পড়ে। আমাদের এখানে বড় ধরনের সমস্যা না হলেও এবারের টানা বর্ষণে আমি পরিবার নিয়ে ভয়ে আছি।

বান্দরবান পৌরসভার ইসলামপুরের বাসিন্দা মোহাম্মদ লেয়াকত আলী জানান, কয়েকদিনের টানা বর্ষণে লাঙ্গিপাড়া-সিকদার পাড়া-ইসলামপুরের সড়কের বিভিন্ন স্থানে রাস্তার দু’পাশে ভাঙন দেখা দিয়েছে, পাহাড়ের মাটি এসে পড়েছে রাস্তার ওপর।

বান্দরবানের মৃত্তিকা কর্মকর্তা মাহাবুব আলম জানান, পাহাড়ের মাটিগুলো অনন্ত প্রকৃতির অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতের কারণে মাটির ওপরের অংশ ক্ষয়ে যায়। পানি মাটির গভীরে প্রবেশ করে ড্রেনের সৃষ্টি করে। এতে মাটির ভীত সরে যায়। ফলে পাহাড় ধসে পড়ে। এ ছাড়া পাহাড় কাটা, জুমচাষ, পাথর উত্তোলন, নির্বিচারে বৃক্ষ কর্তন ইত্যাদি কারণে পাহাড়ের মাটি দুর্বল হয়ে যায়। অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতের কারণে এক সময় মাটি ধসে পড়ে।

জেলা প্রশাসক ইয়াছমিন পারভীন তিবরীজি বলেন, ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে দুর্ঘটনার শঙ্কা তৈরি হচ্ছে। ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলো থেকে লোকজনদের নিরাপদ স্থানে সরে যেতে বলা হচ্ছে। তাদের সরিয়ে নিতে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা প্রশাসন এবং সংশ্লিষ্টরাও কাজ করছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় তৎপর রয়েছে প্রশাসন।