খুলনার কয়রায় লোনা পানিতে ডুবার ভয়ে নির্ঘুম রাত কাটায় উপকূলবাসী

খুলনার কয়রায় ষাটের দশকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্মিত ১৪ ফুট উঁচু ও ১৪ ফুট চওড়া ওয়াপদা বাঁধের নাজুক অবস্থা। সংস্কারের অভাবে ওই বাঁধের এক-চতুর্থাংশও ভালো নেই। জোয়ারের পানি কিংবা বৈরী আবহাওয়া তলিয়ে যায় ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধ। লোনা পানিতে তলিয়ে ভেসে যাওয়ার আতংকে রাতে ঘুমাতে পারেনা উপকূলবাসী।

কয়রা উপজেলায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের ১৩-১৪/১ ও ১৩-১৪/২ পোল্ডারে ১৫৪ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ রয়েছে। এরমধ্যে মারাত্মক ঝুকিপূর্ণতে আছে ২৫ শতাংশ বেড়িবাঁধ। অধিক ঝুঁকিতে রয়েছে কয়রা সদর ইউনিয়নের মদিনাবাদ লঞ্চঘাট, হরিণখোলা, ঘাটাখালী, ৪নং ও ৫ নং কয়রার উপকূলীয় এলাকা। মহারাজপুরের দশহালিয়া, লোকা, গোবিন্দপুর, মঠবাড়ী, পবনা বেড়িবাঁধ। মহেশ্বরীপুরের সাতানী, দক্ষিন ভাগবা ও হড্ডা ফুলতলা। উত্তর বেদকাশীতে কাঠকাটা, কাটমারচর, হাজতখালী ,হরিহরপুর, গাতীরঘেরী এবং দক্ষিণ বেদকাশীতে চরামুখা, গোলখালী,বীনাপানি, জোড়শিং ও আংটিহারা সংলগ্ন বেড়িবাঁধ।

উত্তর বেদকাশী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সরদার নুরুল ইসলাম বলেন, কয়রা নদী তীরবর্তী হওয়ায় লোনা পানিতে প্লাবিত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। বাঁধের ঝুঁকিপূর্ণ স্থানগুলো সংস্কার করা দরকার।

সাতক্ষীরা পাউবো-২ এর উপসহকারী প্রকৌশলী মসিউল আবেদিন জানান, আইলা, আম্ফান পরবর্তী সময়ে বাঁধগুলো মেরামত ও লবণ পানি প্রবেশ বন্ধ করা হয়। কিন্তু টেকসই বাঁধ নির্মাণ করা সম্ভব হয়নি।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার অনিশেষ বিশ্বাস বলেন, কয়রার মানুষের বাঁচা-মরার সঙ্গী পাউবোর বেড়িবাঁধ। উপকূলীয় এই জনপদের মানুষের জানমালের নিরাপত্তার জন্য টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

উপজেলা চেয়ারম্যান এস এম শফিকুল ইসলাম জানান, নদীবেষ্টিত উপকূলীয় কয়রার মানুষ সার্বক্ষণিক ভাংঙন আতংকে থাকে। বাঁধ ভেঙে লোনা পানিতে মানুষের জানমালের ব্যাপক ক্ষতি হয়। উপকূলবাসীর অস্তিত্ব রক্ষায় টেকসই বাঁধ নির্মাণ সময়ের দাবি।

খুলনা-৬ (কয়রা-পাইকগাছা) আসনের এমপি আলহাজ্ব মো. আক্তারুজ্জামান বাবু বলেন, কয়রায় বেড়িবাঁধ নির্মাণের জন্য প্রধানমন্ত্রী ১ হাজার ১৭২ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছেন। টেন্ডার প্রক্রিয়া শেষ হলে দ্রুত সময়ের মধ্যে টেকসই বেড়িবাঁধের কাজ শুরু হবে।