বাণিজ্যমন্ত্রীর সাথে ভুটানের প্রতিনিধিদলের সাক্ষাৎ

বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, ভুটান বাংলাদেশের ঘনিষ্ট বন্ধুরাষ্ট্র। বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় ভুটান প্রথম স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশকে স্বীকৃতি প্রদান করেছিল, বাংলাদেশ তা সবসময় কৃতজ্ঞতার সাথে স্মরণ করে।

বাংলাদেশ ভুটানসহ প্রতিবেশী দেশগুলোর সাথে আকাশ পথে যোগাযোগ স্থাপন করতে দেশের সৈয়দপুর বিমান বন্দরকে আঞ্চলিক বিমান বন্দর হিসেবে ঘোষণা করেছে এবং এর প্রয়োজনীয় উন্নয়নের কাজ হাতে নিয়েছে। মন্ত্রী বলেন, তৃতীয় দেশের মধ্য দিয়ে ভুটানের সাথে সড়ক যোগাযোগ চালুর ফলে উভয় দেশের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য এবং পর্যটন খাতে ব্যাপক আগ্রহ সৃষ্টি হবে। সৈয়দপুর আঞ্চলিক বিমান বন্দর এবং বাংলাবান্ধা ও বুড়িমারি স্থল বন্দর দিয়ে বাণিজ্য ও যোগাযোগ বৃদ্ধি পাবে।

বৃহস্পতিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) ঢাকায় বাংলাদেশ সচিবালয়ে বাণিজ্যমন্ত্রীর অফিস কক্ষে বাংলাদেশ-ভুটান সচিব পর্যায়ের ৮ম সভায় যোগদানের উদ্দেশ্যে আগত ভুটানের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব দেব দাশো কর্মা শেরিনের নেতৃত্বে ৯ সদস্যের প্রতিনিধিদল সাক্ষাৎ করতে এলে বাণিজ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, গত ২০২০ সালের ৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ-ভুটান অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি সম্পাদিত হয়েছে। বিগত ১ জুলাই উভয় দেশ প্রয়োজনীয় এসআরও জারি করেছে। এ চুক্তির ফলে ভুটানের ৩৪টি পণ্য বাংলাদেশের বাজারে এবং বাংলাদেশের ১০০টি পণ্য ভুটানের বাজারে শুল্কমুক্ত সুবিধা পাচ্ছে। এর ফলে উভয় দেশের মধ্যে প্রত্যাশিত হারে বাণিজ্য বৃদ্ধি পাবে। তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশে চার্টার্ড অ্যাকাউনটেন্ট বিষয়ে পড়া লেখার সুযোগ নিতে পারে ভুটান। বাংলাদেশে এ বিষয়ে উচ্চ শিক্ষার ব্যবস্থা রয়েছে।

উল্লেখ্য, ঢাকায় গত ১৩-১৪ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ-ভুটান সচিব পর্যায়ের ৮ম সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বাংলাদেশের পক্ষে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ এবং ভুটানের পক্ষে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব দেব দাশো কর্মা শেরিন নেতৃত্ব দেন। সভায় ভুটান এবং বাংলাদেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি বাস্তবায়ন জোরদার করতে বাংলাদেশ-ভুটান ট্রানজিট এগ্রিমেন্ট এবং প্রটোকল চূড়ান্তকরণ, বাংলাদেশ-ভুটান এগ্রিমেন্ট এবং প্রটোকল এর বাস্তবায়ন সংক্রান্ত আলোচনা, বিশেষ করে তৃতীয় দেশের মধ্য দিয়ে যোগাযোগ সহযোগিতা এবং বাণিজ্য সহজিকরণ সংশ্লিষ্ট উদ্যোগ গ্রহণ, দ্বি-পাক্ষিক সহযোগিতা ও বিভিন্ন আঞ্চলিক ফোরামে পারস্পরিক সমর্থন, পর্যটন শিল্পের বিকাশে উভয় দেশের পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধি, কৃষি এবং শিল্প খাতে উভয় দেশের সংশ্লিষ্ট বিভাগের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধি, বাণিজ্য ক্ষেত্রে শুল্ক ও অশুল্ক বাধা দূরীকরণে উভয় দেশের পারস্পরিক সহযোগিতা এবং ভুটান হতে পাথর আমদানি ও সোনাহাট শুল্ক বন্দরের মাধ্যমে ভুটানের পণ্য পরিবহণ নিয়ে আলোচনা করা হয়।

এ সময় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব নূর মোঃ মাহবুবুল হকসহ বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।