খুলনার বানিশান্তা যৌনপল্লীর শিশুরা যাবে স্কুলে, থাকবে হোস্টেলে

খুলনার বানিশান্তা যৌনপল্লীর মেয়ে শিশুদের ভর্তি করা হচ্ছে স্কুলে, তাদের জন্য খোলা হচ্ছে আলাদা হোস্টেল।

রবিবার খুলনা জেলা প্রশাসন কক্ষে ‘যৌনপল্লীর শিশুদেরকে আবাসিক শিক্ষা ও পুনর্বাসনের উদ্দেশ্যে প্রাথমিক বিদ্যালয় সম্প্রসারণ ও হোস্টেল নির্মাণ’ কাজের উদ্বোধন করা হয়।

জুম অ্যাপের মাধ্যমে এ অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ বলেন, বানিশান্তা যৌনপল্লীর শিশুদের জন্য শিক্ষা লাভের একটি নিরাপদ আশ্রয়স্থল গড়ে তুলতে হোস্টেল নির্মাণ করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে খুলনা জেলা প্রশাসন। যা সারা দেশের জন্য অনুকরণীয় উদ্যোগ।

এখানকার যৌনকর্মীর মেয়েরা বংশ পরম্পরায় যৌনকর্মী হয়ে আসছে এবং ছেলেরা অপরাধমূলক কাজে জড়িয়ে পড়ে থাকে। এই পরিস্থিতির অবসান ঘটাতে খুলনা জেলা প্রশাসন এ উদ্যোগ নিয়েছে।

খুলনার ডিসি হেলাল হোসেন বলেন, এরই মধ্যে ৬৪টি শিশুকে প্রাথমিক স্কুলে ভর্তি এবং মায়েদের থেকে আলাদা করে আবাসন ব্যবস্থার আওতায় আনা হয়েছে। তাদের শিক্ষা উপকরণ ও ক্রীড়া সামগ্রী বিতরণ করে শিক্ষার প্রতি আগ্রহ সৃষ্টির পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

তিনি জানান, এ উদ্যোগে এসব শিশুর অভিভাবকরা খুশি। এতে তাদের সন্তানরা ‘মানুষের মতো মানুষ’ হয়ে গড়ে উঠবে বলে আশা করছেন যৌনকর্মীরা।

প্রাথমিকে ভর্তি হওয়া ৬৪ জন শিশুর জন্য বানিশান্তা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষ সম্প্রসারণ করা হয়েছে। বিদ্যালয়ের পাশে শিশুদের আবাসনের জন্য প্রায় এক কোটি ৬৯ লাখ টাকা ব্যয়ে জেলা প্রশাসনের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় তিনতলা ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে। পাশাপাশি হাইস্কুলে পড়া আরো ৪৩ জন শিশুর জন্য আবাসন ব্যবস্থা গড়ে তোলা হচ্ছে।

এসব শিশুদের জীবন মান পরিবর্তনে এ উদ্যোগ গ্রহণের কথা উল্লেখ করে ডিসি জানান, মাঝে মধ্যে মায়েরা শিশুদের সাথে দেখা করতে পারবেন। কিন্তু এসব শিশুরা কখনোই যৌনপল্লীতে যেতে পারবে না।

এই আবাসিক হোস্টেল এসব শিশুর মানসিক বিকাশে সহায়ক হবে। এসব শিশু শিক্ষিত হলে তারা আর কখনোই যৌনকর্মীর পেশায় ফিরে যাবে না বলে মনে করেন তিনি।