শেখ হাসিনার প্রত্যাবর্তনে

গণতন্ত্র ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ফিরেছে, মানুষের মুখে হাসি ফুটেছে : তথ্যমন্ত্রী

আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহ্‌মুদ বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার প্রত্যাবর্তনে দেশে গণতন্ত্র ফিরেছে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, মানুষের মুখে হাসি ফুটেছে।

প্রধানমন্ত্রীর সাম্প্রতিক জাপান, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য সফরের সফলতা ও বিশ্বব্যাংকের মনোভাব উদ্ধৃত করে মন্ত্রী বলেন, আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ শুধু বাংলাদেশের নেতা নন, তিনি বিশ্বনেতায় রূপান্তরিত হয়েছেন।

শনিবার (২০ মে) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি মিলনায়তনে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় মন্ত্রী এসব কথা বলেন।

ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দাম হোসেনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালি আসিফ ইনানের সঞ্চালনায় সভায় আলোচক হিসেবে বক্তব্য দেন জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল।

‘১৯৮১ সালের ১৭ মে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের মধ্যে দিয়ে গণতন্ত্র ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার প্রত্যাবর্তন হয়েছিল’ উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘দেশে শেখ হাসিনার সরকারের জনপ্রিয়তা আছে কি না তা দেখার জন্য আমি বিএনপিকে আগামী নির্বাচনে আসার অনুরোধ জানাই। ২০০৮ সালের নির্বাচনে খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে পূর্ণ শক্তি নিয়ে তারা নির্বাচনে অংশ নিয়ে প্রথমে ২৯টি আসন পেয়েছিল। ২০১৪ সালের নির্বাচনে পালিয়ে গিয়েছিল। ২০১৮ সালের নির্বাচনে নির্বাচনি ট্রেনে উঠে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছিল। আমি অনুরোধ করবো, আসুন এবারের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুন।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আন্তর্জাতিক সমর্থন নিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী জাপান, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যে সফর করেছেন। যারা সফরে ছিলেন তারা দেখতে পেরেছেন কীভাবে প্রধানমন্ত্রীকে জাপান সম্মান করেছে। তারা বাংলাদেশকে সহায়তা করার জন্য ৩০ মিলিয়ন ইয়েন চুক্তি করেছে।

আর যে বিশ্বব্যাংক পদ্মা সেতু থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল, তারা তাদের ভুল অনুধাবন করেছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘বিশ্বব্যাংক ছুটির দিনে প্রধানমন্ত্রীর জন্য অনুষ্ঠান ডেকেছে। কারণ শনিবার ছাড়া প্রধানমন্ত্রীর কোনো সময় ছিল না। শুধু প্রধানমন্ত্রীর জন্য তারা অনুষ্ঠান করেছে, নতুন করে বাংলাদেশে অর্থায়নের প্রস্তাব দিয়েছে। আর যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক জননেত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করে বলেছেন, আপনি আমার আইডল। আমার স্ত্রী ও সন্তানরা আপনাকে আইডল মানেন।’

এ সময় বিএনপি নেতাদের চিকিৎসা করানোর কথা বলেন হাছান মাহ্‌মুদ। তিনি বলেন, ‘ফখরুল সাহেবরা যদি এগুলো শুনতে না পারেন তাহলে কানের ডাক্তার দেখান। যদি দেখতে না পারেন তাহলে চোখের ডাক্তার দেখান। আপনাদের যে চিকিৎসক সংগঠন ড্যাব আছে তাদের থেকে চিকিৎসা নেন। তারা না পারলে আমাদের স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের কাছ থেকে চিকিৎসা নেন।’

ড. হাছান বলেন, ‘সোশ্যাল ইনডেক্স, হিউম্যান ইনডেক্স ও হেলথ ইনডেক্সে বাংলাদেশ ভারতকেও অতিক্রম করেছে। আমরা মাথাপিছু আয়ের ক্ষেত্রে ভারতকে ২০২১ সালে অতিক্রম করেছি। এ সাফল্যে ভারত ও পাকিস্তানের ‘টক শো’গুলোতে এবং রাজনৈতিক অঙ্গনে শেখ হাসিনার প্রশংসার ঝড় বয়ে গেছে। তাদের দেশের রাজনৈতিক নেতাদের সমালোচনার ঝড় বয়ে গেছে।’

তথ্যমন্ত্রী আরো বলেন, ‘দুঃখজনক হলেও সত্য, আমাদের দেশের টেলিভিশনগুলোতে সেভাবে শেখ হাসিনার প্রশংসা করা হয়নি। এটিই বাস্তবতা। মানুষকে স্বপ্ন দেখাতে হবে। সেজন্য জাতির সাফল্য ও অর্জন গণমাধ্যমে তুলে ধরতে হবে। অবশ্য গণমাধ্যমে দায়িত্বশীলদের ভুল-ত্রুটি উঠে আসবে এবং সরকারের সমালোচনা হবে। যদি জাতির সাফল্য তুলে ধরা না হয়, তাহলে মানুষ আশাবাদী হবে না।’

ছাত্রলীগের উদ্দেশ্যে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যার নেতৃত্বে এখন স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে হবে। এ জন্য ছাত্রলীগের কর্মীদের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিতে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে হবে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেশ ও সরকারের বিরুদ্ধে অসত্য প্রচারের বিরুদ্ধে সজাগ ও সক্রিয় থাকতে হবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি মাজহারুল কবির শয়ন, সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত প্রমুখ সভায় বক্তব্য রাখেন।