গাইবান্ধা জেলা হাসপাতালে সেন্ট্রাল প্লান্টে লিকুইড অক্সিজেন সরবরাহ

করোনা পরিস্থিতিতে অক্সিজেন সংকট নিরসনে গাইবান্ধা জেলা হাসপাতালের সেন্ট্রাল অক্সিজেন প্লান্টে লিকুইড অক্সিজেন সরবরাহ করা হয়েছে। এতে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের অক্সিজেন সমস্যার বিরাজমান সংকট নিরসন হবে এবং চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নয়ন সাধিত হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টর।

গত বছর এপ্রিলে গাইবান্ধা করোনা ‘হটস্পট’ হিসেবে চিহ্নিত হবার পর এবং করোনা সংক্রমণ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে জেলা হাসপাতালে নিরবচ্ছিন্ন অক্সিজেন সরবরাহের কাজে তোড়জোড় শুরু হয়। সংক্রমণের হার কমে এলে কাজের গতিও কমে যায়। সম্প্রতি হাসপাতালটিতে সেন্ট্রাল অক্সিজেন প্ল্যান্ট স্থাপনের কাজ শেষ হলে সেখানে লিকুইড অক্সিজেন সরবরাহের মধ্যদিয়ে এক বছর পর হাসপাতালটিতে নিশ্চিত হলো নিরবচ্ছিন্ন অক্সিজেন সরবরাহ।

হাসপাতালের সেন্ট্রাল অক্সিজেন প্ল্যান্টের মূল ট্যাংকে তরল অক্সিজেন সরবরাহ করার ফলে সাধারণ ওয়ার্ড এবং আইসোলেশন ইউনিটে করোনা রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া যাবে। ফলে হাসপাতালে আসা মুমূর্ষু রোগীদের চিকিৎসার জন্য রংপুর ও বগুড়ায় স্থানান্তর করার প্রয়োজনীয়তা কমে আসবে। এখন থেকে প্রায় পৌনে চার কোটি টাকায় নির্মিত প্ল্যান্টের সুবিধা পাবেন মুমূর্ষু রোগীরা।

গাইবান্ধা স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ৩ কোটি ৭৭ লাখ টাকা ব্যয়ে গাইবান্ধা জেলা হাসপাতালে সেন্ট্রাল অক্সিজেন প্ল্যান্ট স্থাপন করে স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর। এই প্ল্যান্ট থেকে ১৯৫টি শয্যায় অক্সিজেন সরবরাহ করার কথা। এক্সপেকট্রা নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এই প্ল্যান্ট নির্মাণ ও স্থাপনের কাজ করে। গাইবান্ধা স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের সহকারী প্রকৌশলী মো. এরশাদুল হক বলেন, চলতি বছরে জুনের প্রথম দিকে প্ল্যান্টটি হাসপাতালের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

হাসপাতাল সূত্র জানায়, হাসপাতাল চত্বরে নির্মিত সেন্ট্রাল অক্সিজেন প্ল্যান্টের পাশেই রয়েছে এর নিয়ন্ত্রণকক্ষ। এখান থেকেই হাসপাতালে অক্সিজেন সরবরাহ লাইন নিয়ে যাওয়া হয়। নিচতলা ও দোতলার পুরুষ ও মহিলা ওয়ার্ডে ১৯৫টি শয্যার পাশের দেয়ালে অক্সিজেন সংযোগ দেওয়া হয়। উদ্দেশ্য ছিল, শয্যা থেকে সহজেই মুমূর্ষু রোগীদের অক্সিজেন সরবরাহ করা। সেন্ট্রাল প্ল্যান্টের মূল ট্যাংকে তরল অক্সিজেন সরবরাহ করার ফলে করোনা রোগী ছাড়াও শ্বাসকষ্ট, হাপানীসহ অক্সিজেন সংক্রান্ত জটিলতায় ভোগা রোগীরা সুষ্ঠু এবং দ্রুত চিকিৎসার সুযোগ পাচ্ছেন।

গাইবান্ধা সিভিল সার্জন ডা. আ.ম. আখতারুজ্জামান জানান, করোনা রোগীর চিকিৎসার জন্য বর্তমানে জেলা হাসপাতালে ২০টি বেড রাখা রয়েছে। করোনা রোগীদের চিকিৎসায় অক্সিজেনের ক্রমবর্ধমান চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে অক্সিজেনের যে সংকট সৃষ্টি হচ্ছিল গত বৃহস্পতিবার হাসপাতালের সেন্ট্রাল অক্সিজেন প্লান্টে লিকুইড অক্সিজেন সরবরাহ করার ফলে সে সংকট নিরসন হয়েছে।