গাজায় ধ্বংসস্তূপে মায়ের নিথর দেহ, স্তন্যপান করছে শিশু!

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় একের পর এক বিমান হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। চারদিকে শুধু ধ্বংসের ছবি। বহুতল ভবনগুলো গুঁড়িয়ে গিয়েছে। তার নীচে চাপা পড়ে কত মানুষের মৃত্যু হয়েছে, তার কোনও হিসাব নেই। প্রাণ বাঁচাতে গাজা ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে পালাচ্ছেন সেখানকার বাসিন্দারা। আহতদের এবং ধ্বংসস্তূপের নীচে আটকে থাকা লোকজনকে উদ্ধারের কাজ চলছে সমানতালে।

তেমনই একটি বহুতলে উদ্ধারকাজ চালানো হচ্ছিল। ১৩ তলার সেই বাড়িটি রকেট হামলায় গুঁড়িয়ে যায়। সেই ধ্বংসস্তূপে কেউ আটকে আছেন কি না, তার খোঁজ চালাচ্ছিল উদ্ধারকারী দল। তখনই তাঁরা একটি দৃশ্য দেখে শিউরে উঠেছিলেন। কংক্রিটের বড় বড় চাঙড় সরাতেই উদ্ধারকারীরা দেখেন, এক মহিলা নিথর হয়ে পড়ে রয়েছেন। তাঁর পাশেই শোয়া একটি শিশু। সে তার মায়ের স্তন্যপান করছে। এই দৃশ্য দেখে উদ্ধারকারী দলের অনেকেই কেঁদে ফেলেন।

আহমেদ নামের এক ব্যক্তি দাবি করেন, যে বহুতল থেকে মহিলার দেহ এবং এক শিশু উদ্ধার হয়েছে, ওই বহুতলের ১৩ তলায় তাঁর বোন থাকতেন। বোনের খোঁজেই তিনি এসেছিলেন। কিন্তু দেখেন যেখানে বহুতলটি ছিল, সেটি পুরো গুঁড়িয়ে গিয়েছে। আহমেদ জানান, তাঁর ভাগ্নে ইয়ামিনের বয়স এক মাস। মেনিনজাইটিসের জন্য দু’দিন আগেই চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। আহমেদের বোনের মৃত্যু হলেও আশ্চর্যজনক ভাবে বেঁচে গিয়েছে তাঁর ভাগ্নে।

গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলা চালায় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। জবাবে ওই দিনই পাল্টা হামলা শুরু করে ইসরায়েল। এর পর থেকে গাজায় টানা বিমান হামলা চালানো হচ্ছে। হামাসের হামলায় ইসরায়েলে নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৩০০।

শনিবার (১৪ অক্টোবর) নিয়মিত ব্রিফিংয়ে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ৮ দিন ধরে চলা ইসরায়েলি বিমান হামলায় ২ হাজার ২১৫ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। যার মধ্যে শিশুই হলো ৭২৪ জন। নির্বিচার এসব হামলায় ৮ হাজার ৭১৪ জন আহত হয়েছেন।

তারা আরও জানিয়েছে, শুধুমাত্র গত ২৪ ঘণ্টায় বিমান হামলায় ৩২৪ জন মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। এছাড়া একদিনেই আহত হয়েছেন ১ হাজার মানুষ।
সূত্র: আনন্দবাজার