গাজা : একদিকে রক্তস্রোত অন্যদিকে উন্মাতাল মদ্যপান

জেরুজালেম থেকে তেল আবিব। দূরত্ব মাত্র ৫০ মাইলের। একদিকে বইছে রক্তবন্যা। অন্যদিকে চলছে মদ্যপানে উন্মাতাল এক আনন্দ উৎসব। পানশালায় ঘটেছে দুর্ঘটনাও। সোমবার; ইসরায়েলের রাজধানী তেলআবিব থেকে জেরুজালেমে মার্কিন দূতাবাস স্থানান্তরের একটি দিন।

অধিকৃত গাজা উপত্যকার বাসিন্দারা ২০১৪ সালের পর সবচেয়ে প্রাণঘাতী একটি দিন (১৪ মে) দেখেছেন। যেদিন প্রতিবাদে উত্তাল গাজায় প্রাণ গেছে ৬০ ফিলিস্তিনির। রক্তাক্ত হয়েছেন দুই হাজারের বেশি।

হাজার হাজার ফিলিস্তিনি জেরুজালেমে মার্কিন দূতাবাস স্থানান্তর প্রতিবাদে ও নিজ ভূখণ্ড ফিরে পাওয়ার দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন গাজা উপত্যকায়। বিক্ষোভে গুলি, রাবার বুলেট, টিয়ার শেল নিক্ষেপ করেছে ইসরায়েলি নিরাপত্তাবাহিনী। অপরদিকে জেরুজালেমে মার্কিন দূতাবাস স্থানান্তর উদযাপন করা হয় তেলআবিবে।

সোমবার ইউরোভিশন সঙ্গীত প্রতিযোগী নেত্তা বারজিলাইকে তেলআবিবে স্বাগত জানায় হাজার হাজার ইসরায়েলি। গত শনিবার ২৫ বছর বয়সী এই শিল্পীকে ইউরোভিশন বিজয়ী ঘোষণা করা হয়।

ইসরায়েলের নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে নিহতদের দাফন শেষে মঙ্গলবার আবারো গাজা সীমান্তে জড়ো হচ্ছেন ফিলিস্তিনিরা। এদিকে, ইসরায়েলি বাহিনী ফিলিস্তিনিদের বিক্ষোভ মোকাবেলায় চূড়ান্ত প্রস্তুতি নিয়েছে বলে জানিয়েছে তেল আবিব।

ইসরায়েলি বাহিনীর গুলি ও টিয়ারগ্যাসে নিহতের সংখ্যা ৬০ জনে ছাড়িয়ে গেছে। সোমবার রাতে টিয়ারগ্যাসে আট মাস বয়সী এক শিশুর প্রাণহানি ঘটেছে। এছাড়া আহত হয়েছেন আরো কমপক্ষে ২ হাজার ২০০ জন।

ফিলিস্তিনের নেতারা ইসরায়েলি বাহিনীর এই তাণ্ডবকে নৃশংস গণহত্যা বলে নিন্দা জানিয়েছে। ইসরায়েলি বাহিনীর লাইভ আগুনের গোলা বর্ষণের ঘটনায় বিশ্বজুড়ে উদ্বেগ ও নিন্দার ঝড় শুরু হয়েছে।

গাজায় সহিংসতা হলেও ইসরায়েলি বিশিষ্ট কর্মকর্তা ও অতিথিরা জেরুজালেমে উৎসবে মেতে উঠেন। তেলআবিব থেকে জেরুজালেমে মার্কিন দূতাবাস স্থানান্তর উপলক্ষে ওই উৎসবের আয়োজন করা হয়। পবিত্র এ নগরীকে গত ৬ ডিসেম্বর ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

প্রতিশ্রুতি রাখায় ট্রাম্পের সাহসী পদক্ষেপের প্রশংসা করেছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। পররাষ্ট্র সম্পর্কবিষয়ক উপ-কমিটির ডেমোক্রেট দলীয় মার্কিন সিনেটের টিম কেইন বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, গাজায় যা ঘটেছে তা অত্যন্ত দুঃখজনক। এটা দেখে মনে হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্র সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছে না, বরং সমস্যা থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করছে; যা দুঃখজনক।