‘গুমের’ সকল ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত করুন : সরকারকে ন্যাপ মহাসচিব

বাংলাদেশে ‘গুমের’ প্রতিটি ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্তের দাবী জানিয়ে ‘গুমহওয়া’ ব্যক্তিদের খুঁজে বের করে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েন বাংলাদেশ ন্যাপমহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফাভুইয়া।

তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের রোম আইন অনুযায়ী “কোন ব্যক্তিকে গুম করা একটি মানবাধিকার বিরোধী অপরাধ।” গুম হওয়া ব্যক্তিদের পরিবার গুলো তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত এবং আর্থিক ও সামাজিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। জবাবদিহিতার অভাবে কোনও বিচারিক প্রতিকার না পেয়ে গুম হওয়া ব্যক্তিদের পরিবার ও স্বজনরা ক্ষুব্ধ ও হতাশ।

শনিবার (২৯ মে) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে গুম হয়ে যাওয়া ব্যক্তিদের স্মরণে আন্তর্জাতিক গুম সপ্তাহ উপলক্ষে বাংলাদেশ জাতীয় মানবাধিকার সমিতি আয়োজিত মানববন্ধন কর্মসূচীতে প্রধান বক্তার বক্তব্য তিনি এ সব কথা বলেন।

তিনি বলেন, যাদের প্রিয় মানুষ গুলোর কোন হদিস আর পাওয়া যাচ্ছে না, তারা মৃত নাকি জীবিত সেটা তাদের আত্মীয় স্বজনও জানেননা, তাদের কষ্ট ও বেদনার মাত্রা বোঝার সাধ্য হয়তো আমাদের নাই। কিন্তু তারা যেন আমাদের স্মৃতি থেকে হারিয়ে না যায় তার জন্যই গুম হয়ে যাওয়া মানুষ গুলোর জন্য এই সপ্তাহে তাদের বেদনার ভাগি হয়ে প্রতিবাদী হয়ে ওঠার জন্য সাতটি দিন। তাঁদের প্রতি সংহতি জানাবার মানবিক বোধটুকু যেন আমরা হারিয়ে না ফেলি।

তিনি আরো বলেন, নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকার বিষয়ক আন্তর্জাতিক চুক্তি এবং নির্যাতন বিরোধী সনদে স্বাক্ষর করেছে বাংলাদেশ। গুমের ঘটনাগুলো এসব চুক্তি ও সনদের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। তাই জোরপূর্বক গুমের ঘটনা গুলো আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন ও মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে বিবেচনার সুযোগ রয়েছে।

জাতীয় মানবাধিকার সমিতির চেয়ারম্যান মো. মঞ্জুর হোসেন ঈসা’র সভাপতিত্বে ও মহাসচিব এডভোকেট সাইফুল ইসলাম সেকুলের সঞ্চালানায় সংহতি প্রকাশ করে আরো বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ লেবার পার্টি চেয়ারম্যান হামদুল্লাহআল মেহেদী, মহাসচিব আবদুল্লাহ আল মামুন, এনডিএম সাংগঠনিক সম্পাদক নুরুজ্জামান হীরা, বাংলাদেশ ন্যাপ ভাইস চেয়ারম্যান স্বপন কুমার সাহা, আর কে রিপন, সাংবাদিক মারুফ সরকার, মো. শাকিল প্রমুখ।

সভাপতির বক্তব্যে মো. মঞ্জুর হোসেন ঈসা বলেন, বাংলাদেশে গুমের প্রতিটি ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত করতে হবে। পাশাপাশি গুম হওয়া ব্যক্তিদের খুঁজে বের করে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দিতে হবে। সাধারণ মানুষের মধ্যে ভয়ের সংস্কৃতি তৈরি করার লক্ষ্য নিয়ে গুমকে এখন হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।

তিনিবলেন, গুম হওয়া ব্যক্তিরা নির্যাতনের শিকার হয়ে থাকেন। কেউ কেউ বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ডের শিকার হন। তাদের অধিকাংশই মানবেতর জীবন-যাপন করছেন। গুম হওয়া পরিবারের ক্ষতি পূরন করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। তাই আগামী বাজেটে গুম হওয়া পরিবার গুলোর জন্য বিশেষ বরাদ্দ প্রদান করা উচিত সরকারের।

হামদুল্লাহ আল মেহেদী বলেন, যারা গুম হয়, তাদের পরিবারই জানে এর কী কষ্ট। যারা ক্ষমতায় আছে তারা তা অনুমান করতে পারবেন না। রাষ্ট্রের দায়িত্ব হচ্ছে গুম হওয়া ব্যাক্তিদের খুজে বের করে পরিবারের নিকট ফিরিয়ে দেয়া।