গোপালগঞ্জে কবি নজরুলের ১২৪ তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন

গোপালগঞ্জে নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে উদযাপিত হচ্ছে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৪ তম জন্মবার্ষিকী। এ উপলক্ষ্যে গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসন তিনটি ধাপে আয়োজন করেছেন নানামুখী কর্মসূচি।

জেলা প্রশাসক কাজী মাহবুবুল আলমের সার্বিক তত্ত্বাবধানে জেলা কালচারাল এবং জেলা শিশু বিষয়ক কার্যালয়ের উদ্যোগে গত বুধবার (২৪ মে) কবি নজরুলের সৃষ্টি কর্মের ওপর সংগীত ও নৃত্য পরিবেশন এবং আবৃত্তি প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।

আজ বৃহস্পতিবার, ২৫ মে (১১ জৈষ্ঠ) বিকাল ৫টায় জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে শেখ ফজলুল হক স্মৃতি মিলনায়তনে কবির জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হচ্ছে। ওই অনুষ্ঠানের মূল প্রতিপাদ্য বিষয় “অগ্নিবীণা শতবর্ষ: বঙ্গবন্ধু চেতনায় শানিতরূপ”। একই দিন জেলা মাধ্যমিক ও প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সহ সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কাজী নজরুল ইসলামের জীবনী ও রচনাবলীর ওপর আলোচনা এবং রচনা প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে।

গ্লোবাল এডুকেশন সেন্টারের পরিচালক মো: জাহাঙ্গীর কবির টিপু বলেন, “”জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম ছিলেন প্রেম, বিরহ-বেদনা ও সাম্যের মানুষ। তিনি ছিলেন বাংলা সাহিত্য-সংগীত তথ্য সংস্কৃতির অন্যতম প্রধান পুরুষ। ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধের সময় কাজী নজরুল ইসলামের লেখনী ধূমকেতুর মতো আঘাত করে জাগিয়ে তুলেছিল বাঙালিকে।”

এবিষয়ে জেলা প্রশাসক কাজী মাহবুবুল আলম বলেন, “বিদ্রোহী ও সাম্যের কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৪তম জন্মবার্ষিকী যথাযোগ্য মর্যাদায় উদযাপনের লক্ষ্যে জেলা প্রশাসন সহ উপজেলা ও সমগ্র শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নানামুখী কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। তিনি ছিলেন বিংশ শতাব্দীর অন্যতম অগ্রণী বাঙালি কবি, ঔপন্যাসিক, নাট্যকার, সংগীতজ্ঞ, সাংবাদিক, সম্পাদক। তাঁর সৃজনশীল সৃষ্টির মধ্য দিয়ে তিনি মানবতা, অসাম্প্রদায়িকতা ও সাম্যের কথা বলে গেছেন। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় তাঁর কবিতা ও গান অত্যাচারী পাক হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধাদের মনে অসীম প্রেরণা ও সাহস যুগিয়েছিলেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কারাবন্দি থাকাকালীন কবি নজরুলের কবিতা ‘বিদ্রোহী’, ও গান ‘কারার ঐ লোহ কপাট’ সহ নানা সৃষ্টিকর্ম তাকে অনুপ্রাণিত করেছে নি:সন্দেহে।”

উল্লেখ্য, দুখু মিয়া বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম অবিভক্ত বাংলার ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার আসানসোলের চুরুলিয়া গ্রামে ১৮৯৯ সালের ২৫ মে (১৩০৬ বঙ্গাব্দের ১১ জ্যৈষ্ঠ) জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন বাংলা কবিতার একমাত্র বিদ্রোহী ও গানের বুলবুল। তার বাবা কাজী ফকির আহমেদ ও মায়ের নাম জাহেদা খাতুন। স্বাধীনতার পরে ১৯৭২ সালের ২৪ মে তাঁকে স্থায়ীভাবে বাংলাদেশে এনে জাতীয় কবির মর্যাদা দেওয়া হয়। তিনি ১৯৭৬ সালের ২৯ আগস্ট দুরারোগ্যে রোগে মারা যান। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সমাহিত করা হয় তাঁকে।