চেষ্টা করলে আ.লীগের মত হতে পারব : এরশাদ

আওয়ামী লীগের বিশাল কর্মিবাহিনী আছে জানিয়ে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ বলেছেন, চেষ্টা করলে তারাও এমন শক্তিশালী দল হতে পারবেন। আর এমনটি হতে পারলে জাতীয় পার্টির পক্ষে ক্ষমতায় যাওয়া অসম্ভব কিছু নয় বলেও মন্তব্য করেছেন সাবেক এই স্বৈরশাসক।

মঙ্গলবার দুপু‌রে গুলশা‌নের ঢাকা উত্তর জাতীয় পা‌র্টির নবগ‌ঠিত ক‌মি‌টির পরি‌চি‌তি অনুষ্ঠানে এরশাদ এ কথা বলেন।

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, ‘আওয়ামী লীগ শক্তিশালী দল, এর কর্মিবাহিনী শ‌ক্তিশালী, এ কথা অ‌স্বীকার করা যাবে না। আমরাও হয়ত চেষ্টা করলে তাদের কাছাকা‌ছি যেতে পা‌রি।’ তিনি বলেন, ‘এ কথা সত্য যে সাংগঠ‌নিকভাবে আমরা দুর্বল, আমাদের ক‌র্মিবা‌হিনী দুর্বল। এ কথা স্বীকার করে আমরা য‌দি আগামীতে আমাদের কর্মিবা‌হিনীকে শক্তিশা‌লী করে গড়ে তুলতে পা‌রি, তাহলে আগামী নির্বাচনে ক্ষমতায় যাওয়া আমাদের পক্ষে অসম্ভব কিছু নয়।’

এরশাদ বলেন, ‘এক‌টি দলের সংগঠন কেন প্রয়োজন? ভোটকেন্দ্রে ভোটার আসবে কিন্তু ভোটটা দিতে পারবে কি না, ভোট রক্ষা করতে পারবো কি না তার জন্য ক‌র্মিবা‌হিনীর প্রয়োজন। কিছু‌দিন আ‌গে আমাদের একটা নির্বাচন ছিল (গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপনির্বাচন)। আমার ক‌র্মিবা‌হিনী ছিল না বলে যেতে পা‌রি নাই। ভোটকেন্দ্র রক্ষা করতে পা‌রি নাই।’

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন বা ইভিএমে ভোট নেয়ারও বিরোধিতা করেন এরশাদ। তিনি বলেন, ‘এখন কথা হচ্ছে সামনের নির্বাচন হবে কীভা‌বে? সরকা‌র বলছে ই‌ভিএম সিস্টেমে। কিন্তু কত সিস্টেম, কোনোটাই গ্রহণযোগ্য হচ্ছে না। সবচেয়ে দুঃখের বিষয় হচ্ছে, সার্কভুক্ত সাত আটটি দেশে অনেক প্র‌তিকূলতা ও সামা‌জিক অ‌স্থিরতা রয়েছে। কিন্তু নির্বাচনের ক্ষেত্রে অনেক দেশ এক‌টি গণতা‌ন্ত্রিক সংস্কৃ‌তি সৃষ্টি কর‌তে পেরেছে। আমরা পা‌রি নাই। কেন পা‌রি নাই? পারতে হবে। গণতান্ত্রিক প‌রিবেশ তৈ‌রি না হলে সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না।’

দেশে প্রবৃদ্ধির হার বাড়লেও কথার এই ফুলঝুড়িতে মানুষ এখন আর ভুলছে না বলেও মন্তব্য করেন এরশাদ। তিনি বলেন, ‘শহরে ও গ্রামে-গঞ্জে মানুষগুলোর জীবনমান ভাল নেই, মানুষ পরিবর্তন চায়।’

এরশাদ বলেন, ‘আমাদের প্রবৃ‌দ্ধির হার ৭.৪ শতাংশ শুনে‌ছি। কিন্তু খবরের কাগজে প‌ড়ি, আমাদের এখান থে‌কে মানুষ লি‌বিয়ায় যায়। সেখান থেকে জাহাজে যায় ভূমধ্যসাগরে, সেখানে সমুদ্রে ডুবে মরে। মানুষ যাচ্ছে মালয়েশিয়ায়, ডুবছে সমুদ্রে, যাচ্ছে থাইল্যান্ড, স্থান হচ্ছে গণকবরে।’

‘আমাদের প্রবৃদ্ধির হার যদি ৭.৪ শতাংশ হয় তাহলে এই লোকগুলো দেশ ছেড়ে চলে যাচ্ছে কেন? শত শত গৃহপরিচারিকা পাঠানো হয় সৌদি আরবে, কী কারণে? যেহেতু আমাদের দেশে কর্মসংস্থান নাই, কোন ইনভেস্টমেন্ট (বিনিয়োগ) নাই, কোন শিল্পকারখানা নাই।’-নিজেই জবাব দেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান।

এরশাদ বলেন, ‘তাহলে এই প্রবৃদ্ধি ৭.৪ আসল কোথা থেকে? সেজন্য বলছি, সরকার কথায় এক আর কাজে অন্য।’