ছেলের কবরে চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন আনিসুল হক

ছেলে মোহাম্মদ শারাফুল হকের কবরে চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আনিসুল হক।

শনিবার বিকাল ৫টা ১০ মিনিটে তাকে বনানী কবরস্থানে ছেলের কবরে দাফন করা হয়। এর আগে বাদ আসর আর্মি স্টেডিয়ামে মেয়রের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এতে মন্ত্রিসভার সদস্য, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীসহ বিপুল সংখ্যক মানুষ অংশ নেন।

গত ২৯ জুলাই ব্যক্তিগত সফরে সপরিবারে যুক্তরাজ্যে যান আনিসুল হক। সেখানে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তার মস্তিষ্কের প্রদাহজনিত রোগ ‘সেরিব্রাল ভাস্কুলাইটিস’ শনাক্ত করেন চিকিৎসকেরা।

এরপর থেকে মেয়রকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) রেখে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছিল। ধীরে ধীরে অবস্থার উন্নতি ঘটলে তাকে গত ৩১ অক্টোবর আইসিইউ থেকে রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টারে স্থানান্তর করা হয়।

গত ২৮ নভেম্বর অবস্থার অবনতি ঘটলে আনিসুল হককে রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টার থেকে পুনরায় আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সময় রাত ১০টা ২৩ মিনিটে লন্ডনের ওয়েলিংটন হাসপাতালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬৫ বছর।

আনিসুল হকের মরদেহ বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে শনিবার দুপুর ১টায় ঢাকার শাহজালাল বিমানবন্দরে নামে। ওই ফ্লাইটেই আনিসুল হকের স্ত্রী রুবানা হক, ছেলে নাভিদুল হকও আসেন।

বিমানবন্দর থেকে লাশ নেওয়া হয় তার বনানীর বাড়িতে। সেখানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গিয়ে তার পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান।

এছাড়া আওয়ামী লীগ ও বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতারা গিয়ে সেখানে আনিসুল হকের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।

এরপর শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য মেয়র আনিসুল হকের মরদেহ ঢাকার আর্মি স্টেডিয়ামে নেয়া হয়। সেখানে তার কফিনে শেষবারের মতো শ্রদ্ধা জানায় সর্বস্তরের মানুষ। প্রথমে আনিসুল হকের মরদেহে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা জানানো হয়।

বর্তমান সেনাপ্রধান জেনারেল আবু বেলাল মোহাম্মদ শফিউল হকের বড় ভাই আনিসুল হক ২০১৫ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে ডিএনসিসির মেয়র নির্বাচিত হন।

মোহাম্মদী গ্রুপের চেয়ারম্যান তৈরি পোশাক ব্যবসায়ী আনিসুল হক ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইর সভাপতি ছিলেন। এর আগে তৈরি পোশাক ব্যবসায়ী মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর সভাপতি ছিলেন তিনি।

এছাড়াও বিদ্যুৎ, তথ্যপ্রযুক্তি, আবাসন, কৃষিভিত্তিক শিল্প কারখানা রয়েছে তার। ডিজিযাদু ব্রডব্যান্ড লিমিটেড এবং নাগরিক টেলিভিশনের মালিকানাও আছে আনিসুল হকের ব্যবসায়িক গ্রুপের।