জনগণের টাকায় পদ্মা ব্রিজ, টোল দিয়ে আমরা পদ্মা ব্রিজ দিয়ে স্বর্গে যাব : মির্জা ফখরুল

দেশের সবচেয়ে বড় অবকাঠামো পদ্মা সেতু নিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘তারা (সরকার) বলে উন্নয়ন, এত উন্নয়ন যে সোনা দিয়ে সব মুড়ে দিচ্ছে। আমাদের রুমিন ফারহানা গতকাল (বৃহস্পতিবার) খুব ভালো বলেছেন যে, পদ্মা ব্রিজ হচ্ছে গোল্ডেন ব্রিজ। সোনা দিয়ে মোড়াই করা একটা ব্রিজ বানাইছে।’

সংসদে উত্থাপিত ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটের প্রসঙ্গ টেনে শুক্রবার রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের প্রতিবাদে এক বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।

বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে ২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকার বাজেট প্রস্তাব উপস্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

বাজেট ঘোষণার পরদিন মহানগর বিএনপি দক্ষিণ-উত্তরের যৌথ উদ্যোগে গ্যাসসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে এই সমাবেশ হয়। এতে রাজধানীর বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে সহস্রাধিক নেতাকর্মীর অংশ নেয়।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘পাকিস্তান আমলে আমরা যখন ছাত্র ছিলাম, ছাত্র আন্দোলন করতাম, রাজপথে স্লোগান দিতাম, তখন বিভিন্নভাবে স্লোগান দিতাম। তার মধ্যে একটা স্লোগান ছিল, গান-টান গাইতাম, কীর্তনও গাইতাম। ওর মধ্যে একটা স্লোগান ছিল ১০ টাকা তেলের দাম বাড়লেই তখন বলতাম- ১০ টাকার তেল খেয়ে স্বর্গে যাব। এখন বলতে চাই, বিভিন্ন টোল দিয়ে আমরা পদ্মা ব্রিজ দিয়ে স্বর্গে যাব।’

তিনি বলেন, ‘কার টাকায় আপনারা পদ্মা ব্রিজ বানিয়েছেন? জনগণের টাকায়। জনগণের পকেট কেটে ট্যাক্স নিচ্ছেন। ভ্যাট, ট্যাক্স, অমুক ট্যাক্সের নামে মানুষের কাছ থেকে সব টাকা নিয়ে যাচ্ছেন। আর কী করছেন? ঋণ নিয়েছেন। সেই ঋণের বোঝা বাংলাদেশের মানুষকে বইতে হবে। সাড়ে ১০ হাজার কোটি টাকার প্রজেক্ট ৩০ হাজার কোটি টাকা করেছেন। আমরা জানতে চেয়েছি, বাকি টাকাগুলো আপনারা কীভাবে খরচ করলেন?’

ফখরুল বলেন, ‘খবর নিয়ে দেখবেন তার বেশিভাগ টাকাই তাদের পকেটে গেছে। একটা লোকও বাকি নেই- সবগুলো টাকা চুরি করে তাদের পকেট ভারি করেছে, ব্যাংকে ভরেছে আর বিদেশে পাচার করেছে। এজন্য সিঙ্গাপুরে যদি যান দেখবেন যে, বড় বড় শপিংমল তৈরি হচ্ছে, বাড়ি তৈরি হচ্ছে। কারা মালিক? বাংলাদেশি লোকেরাই মালিক। কানাডায় যান ওখানে একটা বেগমপাড়া তৈরি হয়ে গেছে, মালয়েশিয়াতে যান সেকেন্ড হোম তৈরি করেছে কারা? আওয়ামী লীগ, তাদের নেতা-মন্ত্রীরা, তাদের মদদপুষ্ট ব্যবসায়ীরা।’

‘এই লোকগুলোকে বড় লোক করার জন্য আমরা দেশ স্বাধীন করি নাই, এই লোকগুলোকে চুরি-চামারি-লুণ্ঠন করার জন্য আমরা আমাদের রক্ত দেইনি। আমরা ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধ করেছি একটা গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের জন্য, বৈষম্যহীন বাংলাদেশের জন্য।’

মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালামের সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনু ও আমিনুল হকের সঞ্চালনায় সমাবেশে বিএনপির বরকতউল্লাহ বুলু, আমানউল্লাহ আমান, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, আবদুস সালাম আজাদ, শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, মহানগর বিএনপির ইশরাক হোসেন, তাবিথ আউয়াল, শ্রমিক দলের আনোয়ার হোসেইন, স্বেচ্ছাসেবক দলের আবদুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েল, কৃষক দলের শহিদুল ইসলাম বাবুল, যুবদলের মামুন হাসান, মহিলা দলের হেলেন জেরিন খান, মৎস্যজীবী দলের রফিকুল ইসলাম মাহতাব, জাসাসের জাকির হোসেন রোকন, ছাত্রদলের সাইফ মাহমুদ জুয়েল প্রমুখ বক্তব্য দেন।

সমাবেশে হাবিবুর রহমান হাবিব, আবুল খায়ের ভুঁইয়া, কামরুজ্জামান রতন, মীর সরফত আলী সপু, নাজিম উদ্দিন আলম, শামীমুর রহমান শামীম, মীর নেওয়াজ আলীসহ মহানগর বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।